odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Wednesday, 5th November 2025, ৫th November ২০২৫

দিয়াজের মায়ের আমরন অনশন

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ২৯ November ২০১৭ ১১:৩৫

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ২৯ November ২০১৭ ১১:৩৫

গেল  বছরের ২০ই  নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় নিজ বাসা থেকে দিয়াজের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেন পুলিশ। ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে বলে এই অভিযোগ এনে গত বছরের ২৪ই নভেম্বর জাহেদা আমিন চৌধুরী (মা) বাদী হয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপু (বর্তমানে স্থগিত কমিটি), সাবেক সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরীসহ ১০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়িল  করে।গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় এই  দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে অবস্থান করছিলেন। বিকেল পাঁচটা থেকে তিনি এই স্থানে অবস্থান নেন। গতকালও তাঁর শরীরে কাফনের কাপড় জড়ানো ছিল। তাঁর সঙ্গে ছিলেন নিকটাত্মীয় রেজাউল করিম। তিনি বলেন, দিয়াজ হত্যা মামলার আসামি সাবেক সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জামশেদ মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ঝুপড়িতে আড্ডা দিচ্ছিলেন। পুলিশকে তাঁদের অবস্থান জানানো হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

ছেলের হত্যাকারীরা গ্রেপ্তার না হলে এক ফোঁটা পানিও পান করবেন না বলে জানান জাহেদা আমিন চৌধুরী।

তিনি আরো জানান যে ‘আসামিরা ক্যাম্পাসে প্রকাশ্য ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করছে না।’ এর আগে গত সোমবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধু চত্বরে অনশন শুরু করেন জাহেদা আমিন।

দিয়াজের বড় বোন জুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী মুঠোফোনে গতকাল সন্ধ্যায়  বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর মা পুলিশের ডিআইজি ও চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য হাটহাজারী থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু থানা-পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

জুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী বলেন, ‘চেষ্টা করেও মাকে কিছু খাওয়াতে পারিনি। দিয়াজের খুনিরা গ্রেপ্তার না হলে কিছুই খাবেন না বলছেন মা।’

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নূরেআলম মিনা জানান হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করার জন্য হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে। কিন্তু ওসিকেও ভূমিকা রাখতে হবে আসামিদের ধরার জন্য।

 

দিয়াজের মরদেহের  ময়নাতদন্ত হয় গত বছরের ২ই নভেম্বর। ২৩ নভেম্বর পুলিশ জানায়, দিয়াজকে হত্যা করা হয়েছে , এমন আলামত ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মেলেনি। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে মত দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে দিয়াজের পরিবার । গত বছরের ৬ ডিসেম্বর দিয়াজের লাশ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। ১১ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে লাশের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দিয়াজকে শ্বাস রোধ করে হত্যার আলামত পাওয়া গেছে। পরে দিয়াজের মায়ের করা মামলাটি এজাহার হিসেবে নিতে চলতি বছরের ২৩ অক্টোবর হাটহাজারী থানার পুলিশকে নির্দেশ দেন আদালত।ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আমরণ অনশন অব্যাহত রেখেছেন মা জাহেদা আমিন চৌধুরী। গতকাল মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনশন করেন তিনি। এ ছাড়া আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি নিয়ে গতকাল পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গেও দেখা করেছেন তিনি।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: