ঢাকা | রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

বাঙ্গালীর পতাকার অধিকারের মাস শুরু -অধিকারপত্র

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:১৫

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:১৫


আজ ১ লা ডিসেম্বর ২০১৭ আজ থেকে ৪৬ বছর পূর্বে এই মাসে (১৯৭১ এর ১৬ ই ডি) বাঙ্গালী জাতি  পৃথীবির মানচিত্রে বাংলাদেশর পতাকার অধিকার আদায় করতে পেরেছে। সেই সাথে বাংলাদেশ নামক একটা দেশ বিশ্ব দরবারে তার সকল অধিকার আদায়ের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর অর্জন করতে পেরেছে সমুদ্র সীমানার পূর্ন অধিকার।

এমন অনেক অধিকার আছে যা থেকে জাতি এখনো বঞ্চিত, তবে রাষ্ট্র তার অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে সচেষ্ট। অধিকার রাষ্ট্র এবং নাগরিক উভয়পক্ষর জন্য প্রজোয্য, আজ নাগরিকের অধিকারের উপর আলোচনা করলে দেখা যাবে, নাগরিক কি প্রজা কি তা আমর এতবছর পরও কি বাঙ্গালী জানে ? যে জাতি পরাধীণ তারা প্রজা তাদের অধিকার সীমিত আর স্বাধীন জাতি তারা নগরিক তাদের অধিকার বাস্তবায়নে সরকার বাধ্য। মৌলিক অধিকার কি? আর মৌলিক চাহিদা কি? আর যারাই বা জানে তার তাদের ন্যায্য পাওনা আদায় করতে পেরেছে কি?? এজন্য জানতে হবে মানতে হবে বুঝতে হবে, আলহামদুলিল্লাহ্‌ আমাদের দেশ আজ অনেক এগিয়েছে, এদেশের মানুষ অনেক পেয়ছে,ঘরে বসে বিশ্ব দেখে, অনলাইনে খবর পরে হাতের মুঠোয় টিভি দেখে। এগুলো হচ্ছে আধুনিকতা কিন্তু জনগণ যদি অধিকার সম্পর্কে না জানে তবে সে বঞ্চিত হবে তার পাওনা থেকে। লানচিত হবে পদেপদে এজন্য যানতে হবে অধিকার সমপরকে, আমরা অনেকাংশ জনতা অধিকার বলতে শুধু মৌলিক অধিকার বুঝি!! মৌলিক অধিকার হলো মানুষের বেচে থাকার একটা পর্যায় আমাদের সংবিধানন এ মানুষের বিভিন্ন অধিকার নিয়ে বিস্তারিত বরননা দেওয়া যা আমি পর্যায় করমে আপনাদের কাছে বিশদভাবে আলোকপাত করব। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করার ১ বছর পর ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য একটি সংবিধান রচিত হয়। সংবিধানে অনেক মৌলিক অধিকার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। নাগরিকেরও এসব অধিকার সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা নেই। অনেক ক্ষেত্রেই তারা মৌলিক অধিকার ও মৌলিক চাহিদার মধ্যে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন। মৌলিক অধিকারের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, এগুলোর পরিপন্থী কোনো আইন সংসদ প্রণয়ন করতে পারবে না। এ সম্পর্কে সংবিধানের ২৬ অনুচ্ছেদে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে ‘২৬। (১) এই ভাগের বিধানবলীর সহিত অসামঞ্জস্য সকল প্রচলিত আইন যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, এই সংবিধান-প্রবর্তন হইতে সেই সকল আইনের ততখানি বাতিল হইয়া যাইবে। (২) রাষ্ট্র এই ভাগের কোন বিধানের সহিত অসামঞ্জস্য কোন আইন প্রণয়ন করিবেন না এবং অনুরূপ কোন আইন প্রণীত হইলে তাহা এই ভাগের কোন বিধানের সহিত যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি বাতিল হইয়া যাইবে।’ তবে ৪৭ অনুচ্ছেদে কিছু সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রে মৌলিক অধিকার পরিপন্থী আইন প্রণয়নের ওপর বিধিনিষেধে শিথিলতা প্রদর্শন করা হয়েছে। মৌলিক অধিকারের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, সংবিধানের রক্ষক হিসেবে উচ্চ আদালতের মাধ্যমে এগুলো বলবৎ করা যায়। সংবিধানের ৪৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ‘৪৪। (১) এই ভাগে প্রদত্ত অধিকারসমূহ বলবৎ করিবার জন্য এই সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের (১) দফা অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগের নিকট মামলা রুজু করিবার অধিকারের নিশ্চয়তা দান করা হইল। (২) এই সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীন হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতার হানি না ঘটাইয়া সংসদ আইনের দ্বারা অন্য কোন আদালতকে তাহার এখতিয়ারের স্থানীয় সীমার মধ্যে ঐ সকল বা উহার যে কোন ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা দান করিতে পারিবেন।’ তবে মৌলিক অধিকারের বিধানগুলো শর্তহীন নয়। অনেকগুলোতেই, যেমন অনুচ্ছেদ ৩২, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪২ ও ৪৩-এর সঙ্গে বিধিনিষেধ জুড়ে দেওয়া রয়েছে। কিন্তু এসব বিধিনিষেধ আইন ছাড়া প্রশাসনিক আদেশ দ্বারা আরোপ করা যায় না। এছাড়াও এগুলো যুক্তিসংগত হতে হবে। কোন বিধিনিষেধগুলো যুক্তিসংগত, সে সম্পর্কে আদালতের অনেক রায় রয়েছে। আরও রায় রয়েছে ‘বিধিনিষেধ’ আরোপ (--) বনাম বিরত রাখা (++) সম্পর্কে। মৌলিক অধিকারের বাইরেও সংবিধানের প্রথম ভাগের ‘প্রস্তাবনা’য় এবং দ্বিতীয় ভাগে ‘রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি’ শিরোনামে আরও কতকগুলো অধিকারের কথা বলা আছে। প্রস্তাবনায় অঙ্গীকার করা হয়েছে যে, ‘রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হইবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা। যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবে।’ এছাড়াও সংবিধানের ১০ অনুচ্ছেদে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে মহিলাদের অংশগ্রহণ, ১১ অনুচ্ছেদে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সংরক্ষণ, ১৪ অনুচ্ছেদে কৃষক-শ্রমিক তথা মেহনতি মানুষের মুক্তির, ১৬ অনুচ্ছেদে বৈষম্য দূরীকরণার্থে গ্রামীণ উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব এবং ১৯ অনুচ্ছেদে সুযোগের সমতা ও সম্পদের সুষম বণ্টনের কথা বলা হয়েছে। উপরন্তু সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগের ১৫ অনুচ্ছেদে নাগরিকের কতকগুলো ‘মৌলিক প্রয়োজন’ মেটানোর ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ‘মৌলিক দায়িত্বে’র কথা বলা হয়েছে। এগুলো হলো ১। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান , শিক্ষা ও চিকিৎসা ২। কর্মের অধিকার, অর্থাৎ কর্মের গুণ ও পরিমাণ বিবেচনা করিয়া যুক্তিসঙ্গত মজুরির বিনিময়ে কর্মসংস্থানের নিশ্চিয়তার অধিকার ৩। যুক্তিসঙ্গত বিশ্রাম, বিনোদন ও অবকাশের অধিকার; এবং ৪। সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার, অর্থাৎ বেকারত্ব, ব্যাধি বা পঙ্গুত্বজনিত কিংবা বৈধব্য, মাতৃপিতৃহীনতা বা বার্ধক্যজনিত কিংবা অনুরূপ অন্যান্য পরিস্থিতিজনিত অক্ষমতার কারণে অভাবগ্রস্ততার ক্ষেত্রে সরকারি সাহায্য লাভের অধিকার।’ একই সঙ্গে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ (অনুচ্ছেদ ১৭) এবং পুষ্টির স্তর ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন (অনুচ্ছেদ ১৮) সরকারের কর্তব্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো মানুষের মৌলিক চাহিদা, যদিও অনেকেই এগুলোকে মৌলিক অধিকার বলে ভুল করে থাকেন। মৌলিক চাহিদাগুলোর বৈশিষ্ট্য হলো, এগুলো মেনে চলা সরকারের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। এ সম্পর্কে সংবিধানের ৮(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, এই ভাগে বর্ণিত নীতিসমূহ বাংলাদেশ পরিচালনার মূলসূত্র হইবে, আইন প্রণয়নকালে রাষ্ট্র তাহা প্রয়োগ করিবেন, এই সংবিধান ও বাংলাদেশের অন্যান্য আইনের ব্যাখ্যাদানের ক্ষেত্রে তাহা নির্দেশক হইবে এবং তাহা রাষ্ট্র ও নাগরিকের কার্যের ভিত্তি হইবে, তবে এই সকল নীতি আদালতের মাধ্যমে বলবৎযোগ্য হইবে না।’ উল্লেখ্য, অনেকেই রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির অন্তর্ভুক্ত কিছু অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে। পরিশেষে একটি পরাধীন দেশের অধিবাসীরা প্রজা হিসেবে বিবেচিত হয়; কিন্তু স্বাধীন দেশের মানুষ নাগরিক। নাগরিকের অধিকার থাকে এবং এ অধিকার বাস্তবায়নের মাধ্যমেই স্বাধীনতা অর্থবহ হয় এবং গণতন্ত্র কায়েম হয়। আর অধিকার অর্জনের পূর্বশর্ত হলো অধিকার সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা। তাই বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিককেই তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা আজ জরুরি। আর অধিকার সচেতন হলেই মানুষের মধ্যে নাগরিক দায়িত্ববোধ সৃষ্টি হবে, জাতিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যা অতি আবশ্যক।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: