ঢাকা | রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

চবিতে মাদকের সয়লাব, নীরব ভূমিকায় প্রশাসন

সোহেল রানা, চবি প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:১৪

সোহেল রানা, চবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:১৪

সোহেল রানা, চবি : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে মাদকের দৌরাত্ম্য। দিনের সূর্যাস্তের পরেই সন্ধ্যা নামতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে বসে মদ,গাঁজা ইয়াবার আসর। রাত গভীরের সাথে সাথে বাড়ে মাদকের আসর ও মাদকাসক্তদের আনাগোনা। সাম্প্রতিক সময়ে আবাসিক হলগুলোতে মাদকসেবন এক ভয়ংকর রুপ নিয়েছে। আবাসিক হলের বাহিরে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন মোড়, স্টেশন, সেন্টার ফিল্ডে মাতলামি করে মাদকাসক্ত শিক্ষার্থীরা। এসব দেখেও নীরব ভূমিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন।

সোমবার (২২ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের আশিকুজ্জামান জয় নামের এক কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠে অপর ছয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। তারা সবাই শাখা ছাত্রলীগের বিজয় উপগ্রুপ ও চবি ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াসের অনুসারী। ভুক্তভোগী আশিকুজ্জামান জয় পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। তবে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা জানান, জয় দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত ও হলে মাদক সরবরাহের সঙ্গে জড়িত। এসব বিষয় নিয়ে সোমবার রাতে ওই উপগ্রুপের ২০১৮-১৯ সেশনের একটি সভা ডাকা হয়। সভায় জয়কে মাদক ছাড়তে বললে সে অস্বীকৃতি জানায়। একপর্যায়ে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয় জয় ও অন্যদের মধ্যে। এছাড়াও এ এফ রহমান হলের ৪৪০ নাম্বার আশিকুজ্জামান জয়ের রুম দেখা মিলে বিভিন্ন ধরনের মদের বোতল। মদ পানকে কেন্দ্র করে আশিকুজ্জামান জয় মারধরের শিকার হয় বলে দাবি অভিযুক্তদের।

বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা জানায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বেড়েই চলছে মাদকের আস্তানা। ক্যাম্পাসে মাদক ব্যবসায়ীদের বিশাল সিন্ডিকেট রয়েছে। প্রশাসনের নীরব ভূমিকার সুযোগ আর কিছু রাজনৈতিক নেতাদের আশ্বাসে ক্যাম্পাসে অবাধে প্রবেশ করছে মাদক। এসবের মূলে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের বিভিন্ন গ্রুপ-উপগ্রুপের নেতাদের হাত রয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিএফসি পক্ষের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মির্জা খবির সাদাফ বলেন, কারো ব্যক্তি দায়ভার বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নিবে না। সংগঠনের কেউ মাদকাসক্ত এটা প্রমাণিত হলে আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলবো। আমি এবং আমার কর্মীদের মাদকের সাথে কোন সম্পৃক্ততা নেই।

চীফ মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, চবি ক্যাম্পাসে মাদকাসক্তর পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। রাত গভীর হলে অনেক শিক্ষার্থী মাদকসেবনের ফলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারা চিকিৎসার জন্য মেডিকেলে এসে হৈচৈ শুরু করে। অনেকের পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠাতে হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ অহিদুল আলম বলেন,চবিতে মাদকের সয়লাব একদিনের নয় এটা বছরের পর বছর ধরে হচ্ছে। হল প্রভোস্টদের নির্দেশনা দেয়া আছে তারা যদি মাদকের সাথে সংযুক্ত ব্যক্তিদের তালিকা দেন তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। ক্যাম্পাসে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে অভিযোগ আছে। এ সকল বিষয়ে আমরা আজ মিটিংয়ে বসবো।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: