প্রতিবছরের মতো এবারও পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটিতে খাগড়াছড়ির পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকরা ভিড় করছেন। ঈদের বাড়তি আনন্দ উপভোগ করতে তারা ছুটে এসেছেন পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে।
এবার ঈদের ছুটিতে খাগড়াছড়ির পর্যটন স্পটগুলোগুলোতে দেখা গেছে পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়। বৃষ্টি উপেক্ষা করে সকাল থেকে বিভিন্ন বয়সী মানুষ পর্যটনকেন্দ্র মুখী হচ্ছেন। অন্যদিকে, পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে টুরিস্ট পুলিশ।
পাহাড়, ছড়া, নদী, ঝর্ণা ও পাহাড়ের সম্মিলন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা। সারাবছরই আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের সুড়ঙ্গ, ঝুলন্ত সেতু, রিছাং ঝর্ণা, জেলা পরিষদের হর্টিকালচার পার্কসহ বিভিন্ন দর্শনীয় জায়গা পর্যটকের পদভারে মুখরিত থাকে।
জেলায় অনেকগুলো পর্যটন কেন্দ্র থাকলেও সবকিছুকে ছাপিয়ে পর্যটকদের টানে বদলে যাওয়া আলুটিলা ও আলুটিলার ব্যতিক্রমী দুটি ঝুলন্ত সেতু। এছাড়াও রহস্যময় গুহা ও রিছাং ঝর্ণায় প্রাণ জুড়ে যায় পর্যটকদের।
সবুজ পাহাড়ে সাদা মেঘের ভেলা-বর্ষার চিরচেনা এই রূপ পর্যটকদের মুগ্ধ করছে। বৃষ্টির পর সবুজ পাহাড় পর্যটকদের কাছে প্রধান আকর্ষণ।
সরেজমিনে ঈদের প্রথম ও দ্বিতীয় দিন দেখা যায়, পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে স্থানীয় পর্যটকের সংখ্যা বেশি। তবে সোমবার ঈদের ৩য় দিনে স্থানীয়দের চেয়ে বাহিরের পর্যটকদের সংখ্যা বেশি ছিল। হোটেল, মোটেল ও পর্যটন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধিরা বলছেন, অন্যান্য ঈদের মতো এবারেও ঈদের ছুটিতে জেলার বাইরের পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ছে।
খাগড়াছড়ির হোটেল গাইরিং এর ম্যানেজার প্রান্ত ত্রিপুরা জানান, ঈদের ২য় দিন রোববার থেকে পর্যটকেরা আসতে শুরু করেছেন।এবার পর্যটকদের আগমন সন্তোষজনক।আগামী কয়েকদিনে পর্যটকের সংখ্যা আরও বাড়বে।
চট্টগ্রাম থেকে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা জুলেখা আক্তার জানান, ইউটিউব ও বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে খাগড়াছড়ির সৌন্দর্য দেখলেও এবারই প্রথম এসেছেন।
আজ সোমবার সকালেও আলুটিলায় পর্যটকের ভিড় দেখা গেছে। সেখানে আলাপ হয়, যশোর থেকে আসা একঝাঁক শিক্ষার্থীর সাথে। আলাপকালে তারা জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী এবার ঈদের পরের দিন তারা ২৫জন বন্ধু মিলে ঘুরতে এসেছেন। সাজেক থেকে ফিরে খাগড়াছড়ির দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখছেন।
আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের টিকেট কাউন্টার ম্যানেজার কোকোনাথ ত্রিপুরা জানান, সোমবার ঈদের ৩য় দিন স্থানীয় পর্যটক ও বাইরের পর্যটক মোটামুটি এসেছেন। ছুটির পরবর্তী দিনগুলো পর্যটকের সংখ্যা অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি হবে। আজ সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দুইহাজার চারশ’ বেশি টিকেট বিক্রি হয়েছে।
স্থানীয় টেক্সটাইল ও হ্যান্ডি ক্রাফটের বিক্রয় কর্মী সুমিতা ত্রিপুরা জানান, পর্যটকেরা আসায় বিক্রি বেড়েছে। ঈদের ছুটিতে দৈনিক গড়ে প্রায় ২০ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে।
খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলের ব্যবস্থাপক উত্তম কুমার মজুমদার জানান, তাদের ৭০ ভাগ বুকিং ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। পর্যটকদের সেবার জন্য প্রস্তুতির কথা তিনি উল্লেখ করেন।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো. আরিফিন জুয়েল বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় জেলা পুলিশের পাশাপাশি টুরিস্ট পুলিশও কাজ করছে। ঈদের ছুটিতে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সার্বক্ষণিক টহল দেয়া হবে। পর্যটকরা যাতে নিরাপদে ঘুরতে পারেন এবং নিরাপদে ফিরে যেতে পারেন সে বিষয়ে পুলিশ সবসময় সজাগ রয়েছে। দুর্গম এলাকার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে কোন সমস্যায় পড়লে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার জন্য তিনি অনুরোধ জানান।
প্রতিবেদক: জীতেন বড়ুয়া
বাসস

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                            
                                            
                                            
                                            
                                            
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: