বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে দিবসের উদ্বোধন, শোভাযাত্রা–কেককাটা–আলোচনা সভায় মিলল স্মৃতি, ইতিহাস আর ভবিষ্যৎ উন্নয়নের অঙ্গীকার।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে। বেলুন-ফেস্টুন, শোভাযাত্রা, কেককাটা থেকে শুরু করে আলোচনা সভায় উঠে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জন, ৬০ বছরের ইতিহাস এবং ভবিষ্যৎ উন্নয়নের পরিকল্পনা—যা আজ সারাদেশে সার্চ ট্রেন্ডে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
জাতীয় প্রতিবেদক | বাংলাদেশ নিউজ ডেস্ক
সবুজ অরণ্য আর পাহাড়ঘেরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৬০ বছরের গৌরবময় পথচলা আজ উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে। জ্ঞানচর্চা, গবেষণা আর উচ্চশিক্ষার দীর্ঘ যাত্রায় একটি মাইলফলক হিসেবে দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকছে পুরো চবি পরিবারে।
শুভ উদ্বোধন—বেলুন-ফেস্টুনে উৎসবের রং
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় চবির স্মরণ চত্বরে বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। এরপর তার নেতৃত্বে শুরু হয় আনন্দ শোভাযাত্রা—যা কাটাপাহাড়, শহীদ মিনার প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
এরপর তিনি ‘৬০তম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’-এর কেক কাটেন।
ইতিহাস–গৌরব–উন্নয়ন: আলোচনা সভায় ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা
বেলা সাড়ে ১১টায় সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, চাকসুর সাবেক ভিপি এস.এম. ফজলুল হক। সভাপতিত্ব করেন বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল-আমীন।
স্বাগত বক্তব্যে চবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী বলেন—
“মাত্র ৮ শিক্ষক, ২০৪ শিক্ষার্থী ও ৪ বিভাগ দিয়ে যাত্রা শুরু করে আজ ৯টি অনুষদ, ৬টি ইনস্টিটিউট, ৪৮টি বিভাগ এবং ২৮ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী নিয়ে বিশাল শিক্ষা সাম্রাজ্যে পরিণত হয়েছে চবি।”
১৯৭১-এর স্মৃতি ও শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তনের দাবি
বক্তব্যে এস.এম. ফজলুল হক ১৯৭১-এর যুদ্ধকালীন স্মৃতি উল্লেখ করে বলেন—
“স্বাধীন দেশের উচ্চশিক্ষায় যে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেছিলাম, তা অর্জিত হয়নি। এখন সময় কঠিন, কাজের ধরনও বদলেছে—তবু চবির ইতিহাস গৌরবময়, এবং তা ধরে রাখতে হবে।”
‘চবি বিশ্বমানে পৌঁছেছে’—উপাচার্যের বক্তব্য
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী ও ফজলুল কাদের চৌধুরীকে স্মরণ করেন। তিনি বলেন—
“বাধা–বিপত্তি পেরিয়ে চবি আজ বিশ্বমানে পৌঁছেছে। নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ বহু গুণী শিক্ষক–শিক্ষার্থী বিশ্বজুড়ে সম্মান কুড়িয়েছেন।”
তিনি আরও জানান—
➡ জুলাই বিপ্লবের পর ভেঙেচুরে যাওয়া প্রশাসনিক কাঠামো পুনর্গঠন
➡ যুগোপযোগী সিলেবাস প্রণয়ন
➡ এমফিল–পিএইচডি নীতিমালা পরিবর্তন
➡ গবেষণায় সুযোগ–সুবিধা বৃদ্ধি—এসব সংস্কারের কাজ চলছে এবং এর সুফল সামনে আসবে।
আরও যারা বক্তব্য রাখেন
- অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল শাহীন খান, ডিন, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ
- অধ্যাপক ড. বেগম ইসমত আরা হক, প্রভোস্ট, শামসুন নাহার হল
- অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হাসমত আলী, সিন্ডিকেট সদস্য ও প্রভোস্ট, প্রীতিলতা হল
- অধ্যাপক ড. এ.কে.এম. মাহফুজুল হক (মাহফুজ পারভেজ), সভাপতি, রাজনৈতিক বিজ্ঞান বিভাগ
- চাকসু ভিপি ইব্রাহীম হোসেন রনি
- চাকসু জিএস সাঈদ বিন হাবিব
- চাকসু এজিএস আইয়ুবুর রহমান তৌফিক

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: