নিউজ ডেস্ক | অধিকারপত্র
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম ভূস্থির বহুমিশন উপগ্রহ চেওল্লিয়ান স্যাটেলাইট–১ আগামী বছর এপ্রিল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর বা ডিকমিশনিং প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে। দেশটির নতুন মহাকাশ সংস্থা Korea AeroSpace Administration জানায়, দ্বিতীয় চেওল্লিয়ান স্যাটেলাইট অপারেশন কমিটির বৈঠকে উপগ্রহটির মিশন সমাপ্ত ও অবসরসংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য আলোচনা হবে। ২০১০ সালের জুনে উৎক্ষেপণের পর চেওল্লিয়ান–১ টানা ১৬ বছর ধরে যোগাযোগ রিলে পরীক্ষা, আবহাওয়া পূর্বাভাস, সাগর পরিবেশমান পর্যবেক্ষণসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে এসেছে। উপগ্রহটির নকশাগত আয়ু ছিল মাত্র ৭ বছর এর দ্বিগুণেরও বেশি সময় সফলভাবে কার্যক্রম চালিয়ে এটি দক্ষিণ কোরিয়ার মহাকাশ প্রযুক্তি বিকাশে এক যুগান্তকারী মাইলফলক তৈরি করেছে। আন্তর্জাতিক মহাকাশ সংস্থার মান অনুযায়ী, ২০২৬ সালের জুলাইয়ে উপগ্রহটি ভূস্থির কক্ষপথের সুরক্ষা এলাকা (±২০০ কিমি) থেকে সরে গেলে ডিকমিশনিং কার্যক্রম চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন হবে। এতে মহাকাশে অতিরিক্ত ধ্বংসাবশেষ সৃষ্টির ঝুঁকি কমানো হবে।
চেওল্লিয়ান–১ দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রথমবারের মতো ব্রডব্যান্ড স্যাটেলাইট যোগাযোগ ও সম্প্রচার পরীক্ষাসেবা চালু করে দেশে বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট প্রযুক্তির ভিত্তি স্থাপন করে। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়, প্রবল বর্ষণসহ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া পূর্বাভাসকে আরও নির্ভুল করতে এটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করেছে। উপগ্রহটি সাগরের লবণাক্ততার পরিবর্তন, রেড টাইড, সামুদ্রিক দূষণসহ পশ্চিম ও দক্ষিণ উপকূলের পরিবেশগত সংকেত পর্যবেক্ষণে অনন্য ভূমিকা রাখে যা সামুদ্রিক গবেষণা ও পরিবেশ-ব্যবস্থাপনায় বড় অবদান রেখেছে। চেওল্লিয়ান–১ এর দীর্ঘ যাত্রা দক্ষিণ কোরিয়ার মহাকাশ প্রযুক্তির সক্ষমতা ও ভবিষ্যৎ উপগ্রহ কর্মসূচির প্রতি আস্থা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। ১৬ বছরের সফল অভিযানের পর চেওল্লিয়ান–১ এর অবসর কেবল একটি যাত্রার সমাপ্তি নয়; বরং দক্ষিণ কোরিয়ার মহাকাশ প্রযুক্তির পরবর্তী অধ্যায়ের সূচনা। নিজস্ব ভূস্থির স্যাটেলাইট পরিচালনায় দেশের সক্ষমতা প্রমাণ করে এটি ভবিষ্যৎ উপগ্রহ মিশনগুলোর জন্য এক শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করে গেছে।
---মো: সাইদুর রহমান (বাবু), বিশেষ প্রতিনিধি. অধিকারপত্র

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: