ঢাকা | শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
বাংলা ট্রিবিউন অনলাইন এ ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার লেখা পড়ে বিখ্যাত সাইক্লিস্ট আসাদ এ মন্তব্য করেন

বিএনপি নেতা রুমীনের রাজনৈতিক লালসা, অসততা,তার লিখাতে ফূটে উঠেছে:আসাদ

আবুল আসাদ | প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০১৮ ০২:৪৩

আবুল আসাদ
প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০১৮ ০২:৪৩

 

রুমীন ফারহানা, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক বি এন পি। পেশায় ব্যারিস্টার । কলাম লিখেছেন বাংলা ট্রিবিউন নামক অনলাইন পত্রিকায়। কলামের শিরোনাম হচ্ছে "এ দেশ আমার নয়"। কলাম পড়ে দুএকটি কথা না বললেই নয়।এ দেশ তাহলে কার? বিএনপির!! বিএনপির দু:শাসন, লুটপাট মানুষ এখনো ভুলে নাই। ছোট একটি কথা দিয়েই শুরু করি।বিস্তারিত লিখলে আবার রুমীন ফারহানার মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যাবে। তেজগাঁয়ের যুবদল নেতা মোস্তফা কামাল, রিয়াদ বাসা নাখালপাড়া লিচুবাগান মসজিদ সংলগ্ন। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিলো এাসের অপর নাম। সে অস্ত্রের মহড়া দিত। আওয়ামীলীগ কর্মীদের নিপীড়ন কম করেনি। রিয়াদ বাহিনীর কেটে ফেলা হাত পা তখন প্রায়ই দেখা যেত পাগলা পুলের ময়লা। ছোপ ছোপ রক্ত পড়ে থাকতো রেল লাইনে। সেগুলো কি মানুষ ভুলে গেছে। মেজর মান্নানের তেজগাও রমনায় এমপি ইলেকসনের সময় আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নাবিস্কোর নির্বাচনী জনসভাস্থলে হামলা করেছিল কে বা কারা ? এই রিয়াদ ও তার বাহিনী। প্রকাশ্য অস্ত্র দেখিয়ে লিচুবাগান ছাড়া করেছিল আওয়ামীলীগ কর্মী কবির হোসেনকে।নোয়াখালির ছেলে ও খালেদা জিয়ার কথিত আত্মীয় হবার সুবাদে সব অপকর্মের পরাকাষ্ঠা দেখিয়েছে। সেই বিএনপিতো তাই না ? অলি আহাদ, দেশের সুপরিচিত রাজনীতিবিদ এবং অনেকের সম্মানের পাত্র। সেই ব্যক্তির কন্যা ব্যারিস্টার রুমীন ফারহানা। তাই স্বাভাবিকভাবেই মানুষের প্রত্যাশা থাকে রুমীন বি এন পিতে যোগ দিলেও, তার শিক্ষা, সততা, রাজনৈতিক ইতিহাস ও সত্যমিথ্যা পর্যালোচনা, বিশ্লেষন করে লিখবেন কিংবা বলবেন অথবা ভাববেন। তিনি কী তা আদৌ করেছেন। করেন নি। করে থাকলে , তার লেখায় এই রকম ভাবে রাজনৈতিক অসততা,লালসা, ভন্ডামী সুস্পস্ট হতো না । জানি ব্যারিস্টার হতে হলে প্রচুর পড়াশুনা করতে হয়, দিতে হয় প্রচুর পরিশ্রম। ঠিক কোন লেভেলের পড়াশোনা করে ব্যারিস্টার হতে হয় সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না।।যখন দেখি একজন ‍উচ্চা শিক্ষা গ্রহনকারিনি তীব্র রাজনৈতিক ভন্ডামী করেন, মিথ্যার বেসাতি করেন তখন আর চুপ থাকা যায় না। কথা বলতেই হয়।অতীতকে তুলে ধরতে হয়। রুমীন যেহেতু বাংলাদেশের একটি বড় রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন, তাই এর উত্তর দেয়া আবশ্যক ।তবে এই শিরোনামে এই লেখাটি যদি একজন রাজনৈতিক কর্মী লিখতো তবে কথা বলার প্রয়োজনীয়তাই ছিলো না। রুমীন এখন ছাত্রলীগের তান্ডব, তাদের খুনে আচরণ আর পুরো রাষ্ট্রকে ব্যার্থ করবার দিকে ধাবিত, এমন বলে কলম ধরেছেন ঠিক তখন-ই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবে এসেই যায় যে রুমীন কি একবারো মনে করেছিলেন যে তার দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল আর তাদের বন্ধু ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবিরের রক্ত নিয়ে হোলি খেলার ইতিহাসের কথা? তাদের তান্ডবের কথা? তাদের বর্বতার কথা? একটি বারের জন্যও কি রুমীন তার লেখাটা লেখার সময় ভাবেন নি যে রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে দালালি করবার আগে নিজের চেহারাটুকু আর ইতিহাস টুকু ভালো করে দেখার? এতটা ভন্ড আর এতটা অসৎ রুমীনকে কখনোই মনে করা যায় না; তার সুন্দর চেহারাটি দেখলে। তাই রুমীন ফারহানার কলীগ ব্যারিষ্টার নিঝুম মজুমদারের দেয়া তথ্যই দেয়া হলো কৃতজ্ঞতাসহকারে সবার জ্ঞাতার্থে- ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ মানবাধিকার সমন্বয় পরিষদ বাংলাদেশের ১৯৯৩ সালের মানবাধিকারের একটি চিত্র তুলে ধরেন। যেখানে দেখা যায় ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সঙ্ঘাতে ৪০ জন ছাত্র নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ৩ হাজার ১৫২ জন। এসব সঙ্ঘাতের ফলে ৭০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষিত হয়েছিলো। সারা বছরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রায় ২২১ টি সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছিলো। আর এইসব ঘটনাগুলর মূল হোতা বা লিডিং পজিশনে ছিলো বি এন পি'র ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল। ১৯৯৩ সালে এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। মূলত এটি ছিলো ১৯৯১ এর শুরু থেকে ১৯৯২ এর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই প্রতিবেদনে স্পস্ট বলা হয়েছিলো বিশেষ আইন প্রয়োগ করে সরকার ১৭ হাজারের বেশী ব্যাক্তিকে আটক করে। এদের মধ্যে অধিকাংশ রাজনৈতিক মত প্রকাশের কারনে বন্দী। উৎপীড়নের মাত্রা এতই বেশী ছিলো যেখানে প্রায় এক ডজন লোক পুলিশী হেফাজতে খুন হন। বিনা বিচারে ৬ জন লোক খুন হয় আধা সামরিক বাংলাদেশ রাইফেলসের হাতে। "অপারেশন অগাস্ট-৯২" নামের একটি অপারেশনে সরকারের বিশেষ ক্ষমতায় প্রায় ২৫ হাজার আওয়ামী নেতা কর্মী ও অন্যান্য দলের নেতা কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। ঐ একই বছর আমেরিকা, বাংলাদেশের উপর একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে যেখানে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, নির্যাতন, নিষ্ঠূর আচরন, রাজনৈতিক সহনশীলতা, অবমাননাকর শাস্তি, অত্যাচার, ইচ্ছামাফিক গ্রেফতার,আটক, নির্বাসন, গোপনীয়তার উপর হস্তক্ষেপ, প্রকাশ্যে শাস্তির ব্যাপারে সরকারী ফর্মূলা, মানবাধিকার লঙ্ঘন, জনস্বাধীনতার উপর আঘাত, শান্তিপূর্ণ উপায়ে সভা, সমাবেশ ও সংগঠনের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ ইত্যাদি বিষয়ে বিষদ রিপোর্ট প্রদান করে। এই রিপোর্ট পুরোটা এখানে তুলে দিলে বি এন পি কর্মী রুমীনের লজ্জায় মাথা কাটা যাবে কিনা আমি জানিনা। ইনফ্যাক্ট এও জানিনা তাঁর বিবেক বলতে আর কিছু এখনো অবশিষ্ট রয়েছে কিনা। হায়! আফসোস তখনি, যখন কোন রকমের গবেষনা না করে, নিজস্ব দায় স্বীকার না করে নির্লজ্জ ভাবে পত্রিকাতে অন্য ছাত্র সংগঠনের তান্ডব আর সন্ত্রাস নিয়ে লিখতে বসে যায় কেউ। তিনি কি জানেন ছাত্রদলের তান্ডব, সহিংসতায় ৯১ থেকে ৯৫ সাল পর্যন্ত কিংবা ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সারা বাংলাদেশের মানুষ ছিলো অসহায়? সারাটা দেশ ছিল ছাত্রদল আর শিবিরের গুন্ডাদের ভয়ে তটস্থ, ভীত আর সন্ত্রস্ত ? জান নিয়ে সবাই ছিল পেরেশান। ১৯৯২ সালের ৪ ই সেপ্টেম্বর তারিখে ইলিয়াস আলীর নেতৃত্বে সূর্যসেন হলে খুন হন ভূগোল ৩য় বর্ষের ছাত্র আশরাফুল আজম মামুন। ওই একই দিনে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র নাসিরুল্লাহ জুনায়েদ সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হয়। মামুনকে হত্যা করবার পর এই সন্ত্রাসীরা তার লাশ পানির ট্যাংকিতে ভ'রে রাখে। একই দিনে ইতিহাস ২য় বর্ষের ছাত্র মাহমুদকে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধু হলের পার্শ্ববর্তী রাস্তায়। এই দুই হত্যাকান্ডের অভিযোগে ছাত্রদল নেতা ইলিয়াস আলীকে গ্রেফতার করা হয় যদিও সে পরবর্তী বি এন পি’র এম পি হয়। ওই একই বছরের ১৩ ই এপ্রিল থেকে ৩০ শে মে পর্যন্ত ঢাকা ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের গোলাগুলি, খুনে তটস্থ ছিলো পুরো ঢাকা ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস। ৭-ই জুন ছাত্রদলের গুলিতে ৪ জন স্কুল ছাত্র নিহত হয়। ১৫ ই এপ্রিল সিট দখল কেন্দ্র করে চলে গোলাগুলি। ২৭ শে এপ্রিল,২৮ শে মে,৩০ শে মে চলতে থাকে ছাত্রদলের তান্ডব।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: