ঢাকা | রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সরকারের এই মেয়াদেই ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২’

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারী ২০১৯ ১২:৫২

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারী ২০১৯ ১২:৫২

স্টাফ রিপোর্টার
বর্তমান সরকারের মেয়াদেই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হবে। মূলত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর ব্যাকআপ তৈরি করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্তও চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘এতোদিন শুধু কথা হচ্ছিল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ মহাকাশে যাবে। এবার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। এখন চূড়ান্ত আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।’ মন্ত্রী জানান, দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের বেলায় অনেক কিছু মাথায় রাখতে হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ হলো কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট। কিন্তু শুধু কমিউনিকেশনের জন্য পাঠালে এবার চলবে না। দেশের জন্য আবহাওয়া, জলবায়ুর তথ্য দিতে পারবে, জিআইএস তথ্য দিতে পারবে এমন স্যাটেলাইট পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট পাঠিয়েছি। কিন্তু কমিউনিকেশনই আমার একমাত্র কাজ নয়। আবহাওয়াসহ আরও অনেক কিছু আমাকে স্যাটেলাইট দিয়ে করতে হবে। যেদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এত ভালো সেদেশে একটি মাত্র স্যাটেলাইট নির্ভরযোগ্য নয়।’

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের টার্গেট এই মেয়াদেই দ্বিতীয় স্যাটেলাইট পাঠানো। মেয়াদ মাত্র শুরু হয়েছে, দীর্ঘ সময় পড়ে আছে। আমাদের বড় সুবিধা হলো প্রথম স্যাটেলাইটের মতো বিভিন্ন ফ্যাসিলিটিস আমাকে নতুন করে তৈরি করতে হবে না। কোম্পানি তৈরি করতে হবে না, গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরি করতে হবে না, অরবিটাল স্লট ভাড়া করতে হবে না- ফলে কাজটা অনেক সহজ হবে। সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, আমাদের যে অরবিটাল স্লট আছে সেখানে পাশাপাশি দুটি স্যাটেলাইট রাখা যাবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘কী স্যাটেলাইট হবে এখনও তা চূড়ান্ত হয়নি। তবে কমিউনিকেশন বিষয়টি অবশ্যই থাকবে বলে মন্ত্রী জানান। তিনি আরও জানান, এই মুহূর্তে জিডিটাল সার্ভে, জরিপ করতে গেলে আমাদের স্যাটেলাইট প্রয়োজন হবে। দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করলেই আমরা এ ধরনের উদ্যোগ নিতে পারবো।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণের জন্য আলাদা করে কোনও অরবিটাল স্লট কিনতে বা ভাড়া নিতে হবে না। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ যে স্লটে (অরবিটাল স্লট ১১৯.১ ডিগ্রি) উৎক্ষেপণ করা হয়েছে সেখানে দুটি স্যাটেলাইট প্রতিস্থাপন করা যাবে। ফলে স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণের কাজটি প্রথমটির চেয়ে দ্রুত হতে পারে।

জানা যায়, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ২-এর জন্য আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) কাছে আরও চারটি স্লট চেয়ে আবেদন করে রেখেছে বাংলাদেশ। ৬৯, ৭৪ ও ১০২ ডিগ্রি পূর্বতে দুটিসহ চারটির জন্য আইটিইউর কাছে আবেদন করা হয়।

প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু-১ মহাকাশে ১১৯.১ ডিগ্রিতে অবস্থান করছে। স্যাটেলাইটটি সার্কভুক্ত দেশের পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, মিয়ানমার, তাজিকিস্তান, কিরঘিজস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও কাজাখস্তানের অংশবিশেষ কাভার করে। যদিও ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও ভুটানে এর কাভারেজ শক্তিশালী। এসব কারণে ছয়টি দেশকে বাণিজ্যের জন্য বিশেষভাবে চিহ্নিত করা হয়।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর কোনও বিকল্প না থাকায় অনেকই এর প্রতি আগহী হবে না। যারা স্যাটেলাইটের সেবা নিতে আগ্রহী তারা সব সময় সেবার বিকল্প চায়। দুর্যোগকালীন যেন বিকল্প সেবা দেওয়া সম্ভব হয় সেটা মাথায় রেখেই দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তারা এ-ও বলছেন, দ্বিতীয় স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠানো হলে দুটিরই তখন বাণিজ্যিক গুরুত্ব বাড়বে।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: