odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Wednesday, 5th November 2025, ৫th November ২০২৫
ভোলার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে

৫০ লাখ রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে

odhikar patra | প্রকাশিত: ৪ September ২০১৯ ২১:১২

odhikar patra
প্রকাশিত: ৪ September ২০১৯ ২১:১২

 


ভোলা, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বুধবার : জেলার ৭উপজেলার ২১৫টি কমিউনিটি ক্লিনিকে গত আড়াই বছরে (২০১৭ থেকে ১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) ৪৯ লাখ ৪৫ হাজার ৫৫ জন রোগী বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে ২০১৭ সালে ২১ লাখ ১২ হাজার ৪৩৩ জন। ২০১৮ সালে ১৭ লাখ ৫৩ হাজার ২৯ জন এবং চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১০ লাখ ৭৯ হাজার ৫৯৩ জন স্বাস্থ্য সেবা নিয়েছেন। এছাড়া এ সময়ে ৫ হাজার ১৯১ জন মা ক্লিনিক থেকে নিরাপদে সন্তান প্রসব করে সুস্থ আছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নেয়া হয়েছে ৫০ হাজার রোগীকে। দিন দিন প্রচার-প্রচারণা ও মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় রোগীর সংখ্যা বাড়ছে ক্লিনিকগুলোতে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ এ উদ্যোগের ফলে গ্রামঞ্চলের সাধারণ মানুষকে এখন আর অপ-চিকিৎসায় জীবন দিতে হচ্ছে না। চিকিৎসা, স্বাস্থ্য শিক্ষা, বিভিন্ন বিষয় পরামর্শ, পরিবার-পরিকল্পনা সেবা, পুষ্টি বিষয়ক জ্ঞান, গর্ভবতী মায়েদের সেবা, শিশু ও মহিলাদের বিভিন্ন টিকাসহ মোট ৩১ ধরনের ওষুধ এখান থেকে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয। এছাড়া নির্দিষ্ট এলাকায় যক্ষা রোগীদের নিয়মিত তদারকি করা হয়। সম্পূর্ণ সরকারিভাবে ঘরের কাছে এমন সেবা পেয়ে খুশি দ্বীপ জেলার বাসিন্দারা।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. রথীন্দ্রনাথ মজুমদার বাসস’কে জানান, কমিউনিটি ক্লিনিক আমাদের প্রধানমন্ত্রীর একটি স্বপ্নের প্রকল্প। এ স্বপ্ন আজ সকলের মাঝে আশির্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে। আগে প্রত্যন্ত এলাকার সাধারণ মানুষকে বহু দূরে গিয়ে অর্থাৎ সদরে গিয়ে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ পত্র আনতে হতো। আর এখন ঘরের কাছে আরো বেশি ওষুধ পাচ্ছেন তারা। এতে করে সময়, অর্থ ও ভোগান্তির হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে মানুষ। ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসা সেবার মান বজায় রাখার জন্য আমাদের নিয়মিত মনিটরিং চলছে।
উপজেলা সদরের কাচীয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের চর রামদেবপুর গ্রাম। এখানকার মানুষের স্বাস্থ্য সেবার প্রধান ভরসা কমিউিনিটি ক্লিনিক। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় রোগীদের বেশ ভিড় রয়েছে। প্রচন্ড গরমের সমস্যায় নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ ও শিশুরা চিকিৎসা সেবা নিতে আসছেন। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুদের উপস্থিতিতে বেশি দেখা গেছে। আব্দুল করিম (৬০) ও আজাহার আলী (৬২) কয়েকদিন ধরে শ্বাস কষ্টে ভুগছেন। তাই কমিউনিটি ক্লিনিকে এসেছেন চিকিৎসার জন্য। তারা বলেন, এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ খেয়েই আমাদের রোগ ভালো হয়। কারণ উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে সদরে গিয়ে চিকিৎসা নেয়া তাদের জন্য খুবই কঠিন। তাই এখান থেকেই পরিবারের সকলে চিকিৎসা নেন বলে জানান তারা।
জেলে ইলিয়াস হোসেন’র স্ত্রী রহিমা বিবি তার ৩ বছরের শিশু পুত্রকে নিয়ে এসেছেন চিকিৎসার জন্য। ছেলের জ্বরের চিকিৎসা ও বিনা মূল্যে ওষুধ পেয়ে খুব খুশি সে। রহিমা বলেন, গরীব মানুষের জন্য এ ক্লিনিকই একমাত্র ভরসা। সবার পক্ষে যাতায়াত খরচ দিয়ে সদর হাসপাতালে যাওয়া সম্ভব হয়না। তাই প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
রামদেবপুর ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা (সিএইচসিপি) মাকসুদুর রহমান বাসস’কে বলেন, গত আগস্ট মাসে তার এখান থেকে ৫১২ জন রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে গর্ভকালীন সেবা দেওয়া হয়েছে ১৩ জন মাকে। শিশু রয়েছে ৩৬ জন ও অন্যান্য রোগী ৪৩৬ জন। একই সাথে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র পাঠানো হয়েছে ৪৫ জন রোগীকে। এখান থেকে সব ধরনের ওষুধ পাওয়ার ফলে স্থানীয় ফার্মিসী থেকে মানুষ এখন আর ওষুধ নেয়না বলে জানান তিনি।
সিভিল সার্জন আরো বলেন, ক্লিনিকগুলোতে দিন দিন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াতে ওষুধ সরবরাহ আরো বাড়ানো দরকার। আগামী বছর মুজিববর্ষ উপলক্ষে বেশ কিছু ক্লিনিকে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি আরো নতুন করে ৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের কাজ চলছে। আরো ৫টি নির্মাণের প্রস্তাব রয়েছে। সব মিলিয়ে উপকূলীয় এ জেলায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ পল্লী অঞ্চলে মানুষের মাঝে স্বাস্থ্য সেবায় নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন করেছে বলে জানান জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান এ কর্মকর্তা।

বাসস



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: