
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি বলেছেন, ভূটান বাংলাদেশের ঘনিষ্ট বন্ধু রাষ্ট্র। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভূটান প্রথম স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করেছিল, বাংলাদেশ তা সবসময় কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে। বাংলাদেশ ভূটানসহ প্রতিবেশি দেশের সাথে আকাশ পথে যোগাযোগ স্থাপন করতে দেশের সৈয়দপুর বিমান বন্দরকে আঞ্চলিক বিমান বন্দর হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং এর প্রয়োজনীয় উন্নয়নের কাজ হাতে নিয়েছে। তৃতীয় দেশের মধ্যদিয়ে ভূটানের সাথে সড়ক যোগাযোগ চালুর ফলে উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং পর্যটন খাতে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হবে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সৈয়দপুর আঞ্চলিক বিমান বন্দর এবং বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারি স্থল বন্দুর দিয়ে বাণিজ্য ও যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশ ও ভূটানের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ উভয় দেশের জন্য লাভ জনক হবে। বাংলাদেশে চার্টার্ড এ্যাকাউনটেন্ট বিষয়ে পড়া লেখার সুযোগ নিতে পারে ভূটান। বাংলাদেশে এ বিষয়ে উন্নত মানের শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। বাংলাদেশ-ভূটান বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে উভয় দেশের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী আজ (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রীর অফিস কক্ষে বাংলাদেশ-ভূটান সচিব পর্যায়ের ৮ম সভায় যোগদানের উদ্দেশ্যে আগত ভূটানের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব দেব দাশো কর্মা শেরিন এর নেতৃত্বে ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করতে এলে এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, গত ২০২০ সালের ০৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-ভূটান অগ্রাধিতার মূলক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। বিগত ০১ জুলাই উভয় দেশ প্রয়োজনীয় এসআরও জারি করেছে। এ চুক্তির ফলে ভূটানের ৩৪টি পণ্য বাংলাদেশের বাজারে এবং বাংলাদেশের ১০০টি পণ্য ভূটানের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে। এর ফলে উভয় দেশের মধ্যে প্রত্যাতি হারে বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে।
উল্লেখ্য, ঢাকায় গত ১৩-১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ তারিখ বাংলাদেশ-ভূটান সচিব পর্যায়ের ৮ম সভা অনুষ্ঠত হয়। সভায় বাংলাদেশ পক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ নেতৃত্ব দেন। ভূটানের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব দেব দাশো কর্মা শেরিন ভূটানের পক্ষে নেতৃত্ব দেন। সভায় ভূটান এবং বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত অগ্রাধিকার মূলক বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়ন জোরদার করতে বাংলাদেশ-ভূটান ট্রানজিট এগিমেন্ট এবং প্রটোকল চুড়ান্ত করণ, বাংলাদেশ-ভূটান এগ্রিমেন্ট এবং প্রটোকল এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত আলোচনা, বিশেষ করে তৃতীয় দেশের মধ্যদিয়ে যোগাযোগ সহযোগিতা এবং বাণিজ্য সহজিকরণ সংশ্লিষ্ট উদ্যোগ গ্রহণ, দ্বি-পাক্ষিক সহযোগিতা ও বিভিন্ন আঞ্চলিক ফোরামে পারস্পরিক সমর্থন, পর্যটন শিল্পের বিকাশে উভয় দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, কৃষি এবং শিল্প খাতে উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট বিভাগ যথাক্রমে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট(বিএসটিআই), র্ভূটান স্ট্যান্ডার্ড ব্যুরো, ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার এক্সটেনশন, ভূটান এগ্রিকালচার এন্ড ফুড রেগুলারেটি অথরিটি এর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, বাণিজ্য ক্ষেত্রে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূরিকরনে উভয় দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা এবং ভূটান হতে পাথর আমদানি এবং সোনাহাট শুল্ক বন্দর এর মাধ্যমে ভূটানের পণ্য পরিবহণ নিয়ে আলোচনা করা হয়। বিষয়গুলো নিয়ে উভয় দেশ আন্তরিকতার সাথে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। সচিব পর্যায়ের ৯ম সভা ভূটানে অনুষ্ঠিত হবে।
এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব(আইআইটি) নূর মো. মাহবুবুল হকসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: