
জাতীয় শোক দিবসের র্যালিতে কুমিল্লা ও কুড়িগ্রামে ক্ষমতাসীন দল ও তাদের ছাত্রসংগঠনের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার কুমিল্লার বরুড়ায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছয়জন এবং কুড়িগ্রামের উলিপুরে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১১ জন আহত হন।
গতকাল দুপুরে শোক র্যালিতে বরুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক নাছিমুল আলম চৌধুরী ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ এস এম কামরুল ইসলামের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় বরুড়া বাজারে ককটেল বিস্ফোরণ, কয়েকটি যানবাহন ও দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল দুপুরে বরুড়া পশ্চিম বাজার থেকে শোক র্যালি বের করেন নাছিমুল আলম চৌধুরীর অনুসারীরা। র্যালি থেকে ‘আপত্তিকর মন্তব্য’ করা হয়েছে অভিযোগ এনে কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা পেছন দিক থেকে ঢিল মারেন ও ধর ধর বলে স্লোগান দেন। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে কামরুল ইসলাম পক্ষের জাকির হোসেন (২৫), মো. রানা (২২), সোহাগ হোসেন (২৮) ও নাছিমুল আলম চৌধুরীর অনুসারী বরুড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. বকতেয়ার হোসেন (৩৯), গোলাম ফারুক (২৮) এবং ব্যবসায়ী সুমন মিয়া (৩৫) আহত হন।
সংঘর্ষের পর কামরুল ইসলামের অনুসারীরা বরুড়ার মধ্যবাজারে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. বকতেয়ার হোসেনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। সেখানে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ এস এম কামরুল ইসলাম বলেন, ‘সাবেক সাংসদ নাছিমুল আলম চৌধুরীর অনুসারীরা মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সাইনবোর্ড খুলে নিতে এসেছিল। তখনই আমাদের লোকজন তাদের ধাওয়া করে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়।’ তিনি দাবি করেন, হামলার সময় তিনি ছিলেন না।
একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও বরুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক নাছিমুল আলম চৌধুরীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম মাহমুদ বলেন, ‘এক পক্ষ র্যালি থেকে আপত্তিকর স্লোগান দেয়। আরেক পক্ষ সেটি প্রতিহত করতে গেলে সংঘর্ষ হয়।’
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত শোক র্যালিতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১১ জন আহত হয়। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ৫টি টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে। আবার সংঘর্ষের আশঙ্কায় শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস কে আবদুল্ল্যাহ্ আল সাইদ বলেন, পূর্ববিরোধের জের ধরে শোক মিছিলে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ ঘটে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম দাবি করেন, তাঁরা তাঁদের সংগঠনের শোক র্যালি শেষে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত শোক র্যালিতে ব্যানার নিয়ে যোগ দেন। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়কের ওকে হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের সামনে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক প্রিতম সরকারের দাবি, পকেট কমিটি গঠন করা নিয়ে ছাত্রলীগের মধ্যে অসন্তোষ চলছিল। গতকাল সকালে দলীয় কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলন করা নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। পরে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত শোক র্যালিতে বর্তমান কমিটির কয়েকজন সদস্য তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: