ঢাকা | Saturday, 18th October 2025, ১৮th October ২০২৫

জনবহুল রাজধানী এখন ফাঁকা : নেই চিরচেনা যানজট

odhikarpatra | প্রকাশিত: ১ April ২০২৫ ২০:০৮

odhikarpatra
প্রকাশিত: ১ April ২০২৫ ২০:০৮

whatsapp sharing button
জনবহুল রাজধানী ঢাকা এখন অনেকটাই ফাঁকা। নেই মানুষের কোলাহল, হকারের হাঁকডাক আর যন্ত্র যানের হুইসেল, নেই চিরচেনা যানজট। পবিত্র ঈদুল ফিতরের লম্বা ছুটিতে রাজধানী ছেড়েছেন অসংখ্য মানুষ। ফলে ফাঁকা হয়ে গেছে জনবহুল এই মেগা শহর। তবে ঈদের দ্বিতীয় দিন যান চলাচল কিছুটা বেড়েছে। আবার যান চলাচল বাড়লেও গণপরিবহনগুলোতে রয়েছে যাত্রী সংকট।

সরেজমিনে রাজধানীর খিলগাঁও, রামপুরা, মতিঝিল, পল্টন, শান্তিনগর, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, মৎস ভবন এলাকায় দেখা যায়, ঈদের দিন সোমবারের তুলনায় মঙ্গলবার যানবাহনের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে, বেশিরভাগ যানবাহনে রয়েছে যাত্রী সংকট, যাত্রীর অভাবে আসন ফাঁকা রেখেই চালাতে হচ্ছে যানবাহন। যাত্রী সংকটে এসব পয়েন্টে কিছু সময়ের জন্য বাসগুলোকে অপেক্ষা করতেও দেখা গেছে। বাস ও লেগুনার স্টাফদের দীর্ষ সময় ধরে যাত্রীর খোঁজে ডাকাডাকি করতে দেখা গেছে।

রাজধানীতে কিছু যানবাহন চলাচল করলেও সড়কের কোথাও যানজটের চিত্র দেখা মেলেনি। তবে বিভিন্ন ট্রাফিক সিগন্যালে স্বল্প সময়ের জন্য গাড়িগুলোকে থামতে দেখা যায়। সেই সঙ্গে ফাঁকা রাস্তায় রিকশা, ব্যাটারি চালিত রিকশা, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল দাপিয়ে বেড়াতে দেখা গেছে।

রাজধানীর খিলগাঁও জোড়পুকুরে লেগুনার ড্রাইভার আবুল হাশেমের সাথে কথা হয় বাসস’র এই প্রতিবেদকর। তিনি বলেন, ‘একটা গাড়ি ভরতে এক ঘন্টারও বেশি সময় লেগে যায়। যেখানে আগে সেটা ১০ থেকে ২০ মিনিটে হয়ে যেত। ফলে অনেক লোকসান দিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। একজন যাত্রী থেকে বকশিশ হিসাবে ৫ টাকা করে বেশি নিলেও এই ক্ষতি পূরণ হচ্ছে না। তবু নিরুপায় হয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।’  

শান্তি নগরে কথা হয় দোকান কর্মচারি মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে। তিনি এবার ঈদে বাড়ি যান নি। স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে ঢাকায়ই ঈদ করেছেন। আজ যাচ্ছেন গাজীপুর বোনের বাড়ি বেড়াতে। আজমেরী গ্লোরি পরিবহনে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্ক থেকে বাসে চড়েছি। মাত্র কয়েক মিনিটে শান্তিনগর চলে এসেছি। অথচ অন্য সময় এইটুকু রাস্তা আসতে ঘন্টা পার হয়ে যেত। রাস্তায় কোথাও যানজট নেই, একটানে চলে আসতে পেরেছি। গাড়িতে আসনও ফাঁকা ছিল, যাত্রীও খুব একটা নেই। মনে হয় গাজীপুর যেতে এক ঘন্টাও লাগবে না।’

ঈদ বকশিশের কথা বলে কিছু টাকা বেশি নিলেও এ ব্যাপরে তার খুব একটা আপত্তি নেই বলেও জানান তিনি। 

গাবতলী থেকে প্রতিদিন আসেন সামিউল। তিনি বলেন, রাস্তায় কোথাও যানজট ছিল না, তবে যাত্রীর জন্য বাস সব স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়েছে। প্রতি যাত্রী থেকে ৫ টাকা করে বেশি ভাড়া নিয়েছে। 

যাত্রী সংকটের দায় মেটাতে যাত্রীদের কাছ থেকে সামান্য কিছু টাকা বেশি নেয়া হয়েছে বলে জানান এই বাসের হেলপার সোহেল।  

তিনি বলেন, ‘ফাঁকা গাড়ি নিয়ে রাস্তায় ঘুরতে হচ্ছে। যাত্রী পাচ্ছি না। আর কারো কাছ থেকে জোর করেও অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছি না। ঈদ বকশিশ হিসেবে যে যা দিচ্ছে তাই নিচ্ছি।’

রাজধানীর পল্টন পুলিশ বক্সে দায়িত্ব পালন করছেন সন্তোষ নামের এক পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি বাসস’কে বলেন, আজ এবং ঈদের দিন সড়ক অনেকটা ফাঁকা। গতকাল একেবারেই ফাঁকা ছিল। তবে, আজ কিছু গাড়ি রাস্তায় নেমেছে। কোথাও কোনো যানজট নেই। অন্য সময় হলে এখানে ট্রাফিক সামলাতে শরীরের ঘাম ছুটে যেত। কিন্তু আজ অনেকটা রিল্যাক্স মুডে ডিউটি করছি। গাড়ির শব্দ দূষণ বা হর্ণ নেই। রাস্তায় আজ তুলনামূলক ধূলাবালিও কম। 

তিনি বলেন, রাস্তাঘাট ফাঁকা হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারির কারণে রাস্তায় ছিনতাইকারী বা অপরাধীদের প্রবণতা অন্যান্যবারের তুলনায় অনেকটাই কম।

জনগণের যানমালের নিরাপত্তা এবং মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ঈদ করতে পারে সেজন্য আমরা তৎপর রয়েছি।

সাজ্জাদ হোসেন //

বাসস



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: