
সাভার | ২১ অক্টোবর ২০২৫
বিতর্কিত সাবেক রেজিস্ট্রার মো. দেলোয়ার হোসেনের পুনর্বহাল ঘিরে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয় (গবি)। আদালতের রায়ে চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত ‘অবৈধ’ ঘোষণার পর রবিবার সকালে তিনি পুনর্বহালের দাবিতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে শিক্ষার্থীদের তীব্র প্রতিবাদে প্রশাসনিক ভবন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
দেলোয়ার হোসেন আদালতের রায় হাতে নিয়ে উপাচার্যের কক্ষে প্রবেশ করলে একাংশ শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংসদের সদস্যরা বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা স্লোগান দেন— “লম্পটের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে”, “নারী নির্যাতকের স্থান গবি নয়”। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে দেলোয়ার হোসেন ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ অক্টোবর ঢাকার সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক মো. হাবিবুর রহমান গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের ২০২০ সালের অব্যাহতি আদেশ “অবৈধ” ঘোষণা করেন এবং দেলোয়ার হোসেনের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের নির্দেশ দেন।
দেলোয়ার হোসেনের বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমাকে অবৈধভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল। দীর্ঘ পাঁচ বছর মামলা চালিয়ে আদালত অবশেষে ন্যায়বিচার দিয়েছে।”
অন্যদিকে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক মারুফ হোসেন বলেন, “যে ব্যক্তি নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িত, তাকে ক্যাম্পাসে মেনে নেওয়া যায় না। তার উপস্থিতি নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলবে।”
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন জানান, “আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে শিক্ষার্থীদের চাপের কারণে আপাতত পুনর্বহাল স্থগিত রাখা হয়েছে।”
ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, “দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও প্রশাসনিক অনিয়মের প্রমাণ রয়েছে। আমরা রায়ের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে আপিল করব।”
২০১৭ সালে এক নারী শিক্ষার্থী ইউজিসিতে তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ দেন। পরে ২০২০ সালে তার এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে অশালীন ফোনালাপ ফাঁস হয়। এর পরই ট্রাস্টি বোর্ড তাকে অব্যাহতি দেয়।
২০২১ সালে তদন্তে জমি ক্রয়ে অনিয়ম ও প্রায় ৭৩ লাখ টাকার আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায়, যা তার স্থায়ী বরখাস্তের কারণ হয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: