odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Saturday, 25th October 2025, ২৫th October ২০২৫

ন্যায় ব্যর্থ হলে শক্তিশালী রাষ্ট্রও ভেঙে পড়ে: প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ

odhikarpatra | প্রকাশিত: ২৫ October ২০২৫ ১৮:০০

odhikarpatra
প্রকাশিত: ২৫ October ২০২৫ ১৮:০০

 রাজশাহী, ২৫ অক্টোবর ২০২৫


বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, “ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হলে রাষ্ট্র দৃঢ় হয়, আর ন্যায় ব্যর্থ হলে সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রও ভেঙে পড়ে।” তিনি আরও বলেন, আইন শুধু নিয়মের সমষ্টি নয়, এটি একটি জাতির নৈতিক বিবেকের প্রতিফলন।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, “যখন রাষ্ট্র নাগরিকদের মর্যাদা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়, তাদের কণ্ঠরোধ করে, তখন ন্যায়ের জন্য লড়াই করা নৈতিকভাবে অপরিহার্য হয়ে পড়ে।” তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে ন্যায়, মর্যাদা ও অস্তিত্বের অধিকারের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেন।

বিচার বিভাগ সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি জানান, দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই তিনি বিচার বিভাগ সংস্কারের একটি ‘রোডম্যাপ’ ঘোষণা করেছেন। এর মূল উদ্দেশ্য হলো পৃথক সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা। তিনি বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ ২০২৫” হলো বিগত ১৫ মাসের কৌশলগত প্রচেষ্টা ও বহুপাক্ষিক উদ্যোগের ফল।

সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের উদ্দেশে তিনি সতর্ক করে বলেন, “অবিশ্বাস বা একতরফা আচরণ বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতার ভিত্তিকে দুর্বল করতে পারে। পারস্পরিক বিশ্বাস ও সমন্বয়ের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আইনের অধ্যয়ন শুধু পেশাগত প্রশিক্ষণ নয়, এটি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সাধনা। প্রত্যেক আইনের পেছনে আছে একটি জীবন, প্রত্যেক রায়ের পেছনে আছে একটি ভাগ্য।”

প্রযুক্তিনির্ভর বিচারব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা এখনো ঔপনিবেশিক কাঠামোর উত্তরাধিকার বহন করছি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয়ে বিচারব্যবস্থাকে সময়োপযোগী করতে হবে।”

 বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য:
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব। তিনি বলেন, “আইন বিভাগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সমাজ, রাষ্ট্র ও মানুষকে কেন্দ্র করে কাজ করে আসছে। মানুষের আচরণ সবসময় পূর্বানুমেয় নয়, তাই আইনই সেই আচরণকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।”

তিনি আরও বলেন, “অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন হলো দেওয়ার জায়গা, এখানে ক্ষুদ্র ব্যক্তি স্বার্থের চেয়ে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা বড় হওয়া উচিত।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি এস.এস. এমদাদুল হক, হাইকোর্ট বিভাগের ২৯ জন বিচারপতি, বিভিন্ন জেলার বিচারক ও ম্যাজিস্ট্রেট, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবু নাসের ওয়াহিদ, এবং আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. সাঈদা আঞ্জুসহ শিক্ষাবিদ ও আইনজীবীরা।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: