বিশেষ প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম
টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর–বাসাইল) আসনে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক সমীকরণে বড় পরিবর্তন এসেছে। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এবং একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে এই আসনের ঐতিহ্যবাহী ভোটব্যাংক এখন বিভক্ত অবস্থায় রয়েছে।
দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন পরিবেশ না থাকায় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ এবার নির্বাচনে যাচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কথাও উল্লেখ করা হয়।
এই সিদ্ধান্তের ফলে দীর্ঘদিন ধরে শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত টাঙ্গাইল-৮ আসনে কাদের সিদ্দিকী নিজেও প্রার্থী হচ্ছেন না। স্থানীয় রাজনীতিতে যার প্রভাব ছিল ব্যাপক।
কার দিকে যাবে কাদের সিদ্দিকীর ভোট?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কাদের সিদ্দিকী ও আওয়ামী লীগের সমর্থকদের ভোট তিন ভাগে বিভক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে—
- বিএনপি প্রার্থী: ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান
- জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী: শফিকুল ইসলাম খান
- স্বতন্ত্র প্রার্থী: ব্যবসায়ী ও লাবিব গ্রুপের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আলমগীর
বিশেষ করে সালাউদ্দিন আলমগীর প্রায় এক বছর ধরে এলাকায় সক্রিয় থাকায় তাঁর পক্ষে একটি শক্ত বলয় তৈরি হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্র জানায়।
স্থানীয় নেতাদের বক্তব্য
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের স্থানীয় এক নেতা জানান, দল নির্বাচনে থাকলে বিপুল ভোটে জয় সম্ভব ছিল। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে কর্মী-সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়া বা ভোট প্রদানের বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হয়নি।
অন্যদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক সমর্থক দাবি করেন, বিএনপি, কাদের সিদ্দিকী ও আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশের সমর্থন এখন স্বতন্ত্র প্রার্থীর দিকেই ঝুঁকছে।
জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতৃত্বের ভাষ্য, অতীতের প্রতীকগুলো ব্যর্থ হওয়ায় ভোটাররা এবার নতুন বিকল্প খুঁজছেন।
বিএনপি প্রার্থী আহমেদ আযম খান বলেন, নির্বাচন নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলছে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করছে এবং ধানের শীষে ভোট দিতে মানুষ মুখিয়ে আছে।
এ ছাড়া জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকেও দাবি করা হয়েছে, আওয়ামী লীগ ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের অনুপস্থিতিতে লাঙ্গল প্রতীকের প্রতি ভোটারদের আগ্রহ বাড়ছে।
সার্বিক চিত্র
সব মিলিয়ে কাদের সিদ্দিকীর নির্বাচন বর্জনের ফলে টাঙ্গাইল-৮ আসনে ভোটের হিসাব পুরোপুরি নতুন করে সাজানো হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক শক্তি এই শূন্যতা কাজে লাগাতে পারে—সেদিকেই তাকিয়ে আছেন স্থানীয় ভোটার ও রাজনৈতিক মহল।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: