ঢাকা | রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

শিশুদের আনন্দ দিয়ে শিক্ষা দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

Akbar | প্রকাশিত: ১৩ মার্চ ২০১৯ ১৩:১৪

Akbar
প্রকাশিত: ১৩ মার্চ ২০১৯ ১৩:১৪

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পড়াশোনার জন্য শিশুদের অতিরিক্ত চাপ দেয়া উচিৎ নয়। তাদের ভয় দেখিয়ে কখনো কোনো কিছু শেখানোর চেষ্টা করা যাবে না। খেলার ছলে, আনন্দ দিয়ে তাদের শিক্ষা দিতে হবে।’
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আজ সকাল ১০টায় জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০১৯ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সভায় এসব কথা বলেন। এসময় তিনি জাতীয় শিক্ষা পদক বিতরণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক সময় শিশুদের চেয়ে তাদের মা-বাবা ও অভিভাবকদের মধ্যে বেশি প্রতিযোগিতা হয়। এই প্রতিযোগিতা তাদের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে শিক্ষাটাকে শিশুরা যাতে আপন করে নিতে পারে।’

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। এরই মধ্যে প্রাক-প্রাথমিকও চালু করেছি কিন্তু শিশুদের শিক্ষার জন্য অতিরিক্ত চাপ দেয়া উচিত নয়। কিন্তু অনেক দেশ আছে, যেখানে ৭ বছর বয়স থেকে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো হয়, তার আগে নয়। আসলে শিশুদের জন্য এমনভাবে পড়ালেখার ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে, যেন তারা খেলতে খেলতে, হাসতে হাসতে নিজের মতো করে শিখতে পারে। চাপ দিলে শিক্ষার প্রতি তাদের আগ্রহ কমে যাবে, ভীতি তৈরি হবে। সেই ভীতি যেন শিশুদের মধ্যে তৈরি না হয়, সেদিকে দৃষ্টি দেয়ার জন্য শিক্ষক ও অভিভাবকদের অনুরোধ করবো।’

শিশুদের স্কুলে ভর্তিতে ভর্তি পরীক্ষার তীব্র বিরোধিতা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক জায়গায় দেখি ক্লাস ওয়ানে ভর্তির জন্য ছাপানো প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়া হয়। আমার প্রশ্ন, তারা সবকিছু শিখেই যদি স্কুলে যাবে, তাহলে স্কুলে গিয়ে কী শিখবে? এই প্রক্রিয়া বাতিল করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘একটা সময় আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন এসএসসি পরীক্ষা দিতে গেলে মনের মধ্যে ভীতি কাজ করতো। না জানি বোর্ডের পরীক্ষা কি? এমন একটা আতঙ্ক কাজ করতো। কিন্তু এখনকার শিশুরা আর ভয় পায় না। তারা ছোটবেলা থেকেই বোর্ড পরীক্ষা দিতে পারছে।’

তিনি বলেন, আমি বলেছি, ঢাকা হোক বা দেশের বাইরে যেকোনো জায়গায় হোক, সব জায়গাতে এলাকাভিত্তিক স্কুলে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করতে হবে। এরই মধ্যে কিছু ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আরও ভালোভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ব্যবস্থায় শিশুর বয়স ৪-৫ বছর হয়ে গেলেই তাকে স্কুলে ভর্তি করে নিতে হবে। এই শিক্ষা তো তার অধিকার। অনেক উচ্চবিত্ত, বিত্তশালী আছে যারা সন্তানদের বিশেষ স্কুলে পড়াতে চান। তাদের কথা আলাদা। কিন্তু প্রতিটি শিশু যেন নিজ নিজ এলাকার স্কুলে সহজে যেতে পারে, সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেছেন- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০১৯ উদযাপন উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এদিকে, জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ পালনে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহের কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা সপ্তাহ প্রতিযোগিতা-২০১৯ আয়োজনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ১২ থেকে ১৮ মার্চ, ঢাকা মহানগর ও ২৫টি উপজেলা পর্যায়ে ২০ থেকে ২১ মার্চ, জেলা পর্যায়ে ২৪ থেকে ২৫ মার্চ, বিভাগীয় ও মহানগর পর্যায়ে ৩০ থেকে ৩১ মার্চ এবং জাতীয় পর্যায়ে ১২ থেকে ১৩ মে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উদযাপন নীতিমালা অনুসারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেশাত্মবোধক গান, নজরুল সঙ্গীত, রবীন্দ্র সঙ্গীত, জারি গান, লোকনৃত্যসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের নির্দেশনা রয়েছে।

এবারের প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘প্রাথমিক শিক্ষার দীপ্তি উন্নত জীবনের ভিত্তি’।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: