ঢাকা | মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

শোভন-রাব্বানীর চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার

odhikar patra | প্রকাশিত: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৩৯

odhikar patra
প্রকাশিত: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৩৯

 

ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসন্তোষের পেছনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে তাদের চাঁদা দাবির অভিযোগের কথা উঠলেও তারা তা অস্বীকার করেছেন।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শোভন শুক্রবার  বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি টেন্ডারের ভাগ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়েছে জানতে পেরে আমরা উপাচার্য মহোদয়ের কাছে বিষয়টি জানতে চাই। এখানে আমাদের চাঁদাবাজির কোনো বিষয় ছিল না। আমরা ঘটনা জানার চেষ্টা করার পর থেকেই উপাচার্য ম্যাডাম কী কারণে ক্ষিপ্ত হয়েছেন জানতে পারি নাই। তবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে টেন্ডারের কাজে আমাদের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা ছিল না।

“আপনারা জানেন চাঁদাবাজির ঘটনা নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অচল অবস্থা ছিল। তার পরেই আমরা বিষয়টি জানতে চাই।”

এ বিষয়ে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

ওই চিঠির একটি অনুলিপি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের হাতে এসেছে।

সেখানে জাহাঙ্গীরনগরে চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করে রাব্বানী লিখেছেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে অভিযোগ আপনার কাছে ভিন্নভাবে উত্থাপন করা হয়েছে। উপাচার্য ম্যামের স্বামী ও ছেলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে কাজের ডিলিংস করে মোটা অঙ্কের কমিশন বাণিজ্য করেছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে ঈদুল আজহার পূর্বে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা দেওয়া হয়।

“এ খবর জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি শুরু হয় এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য ম্যাম আমাদের স্মরণ করেন। আমরা দেখা করে আমাদের অজ্ঞাতসারে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে টাকা দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন তোলায় তিনি বিব্রতবোধ করেন। নেত্রী, ওই পরিস্থিতিতে আমরা কিছু কথা বলি, যা সমীচীন হয়নি। এজন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।”

সম্প্রতি গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের এক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেন বলে খবর প্রকাশ হয়।

এর কারণ হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের চাঁদা দাবিসহ তাদের সাম্প্রতিক কয়েকটি কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরক্তির কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা।

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে আওয়ামী লীগের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা  বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের টেন্ডারের কাজ থেকে কেন্দ্রীয় ছত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি করলেও পরে এক কোটি টাকা দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত হয়েছিল। পরে উপাচার্য বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করায় ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিষয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।”

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে রাব্বানী চিঠিতে লিখেছেন, “প্রিয় নেত্রী দীর্ঘদিনের সিন্ডিকেট ভেঙে আপনি নিজে পছন্দ করে দায়িত্ব দিয়েছিলেন বলে আমরা একটি বিশেষ মহলের চক্ষুশূল। তারা বিভিন্ন মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে ও প্রপাগাণ্ডা ছড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সুকৌশলে আপনার এবং আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের কান ভারী করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।”

ওই চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে রাব্বানী  বলেন, “কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে অনেকেই নানা অপপ্রচার করছে। সম্প্রতি যে সকল সংবাদ আমাদের  বিরুদ্ধে আসছে সেগুলোর প্রকৃত ঘটনা জানাতে মাননীয় প্রধাণমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আমি চিঠি দিয়েছি। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধাণমন্ত্রীর কাছে চিঠি পৌঁছিয়েছি।”

বিডিনিউজ 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: