ঢাকা | শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

সিরাজদিখানে প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত শিক্ষক কর্তৃক রমরমা কোচিং বানিজ্য

odhikar patra | প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২০:৪৫

odhikar patra
প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২০:৪৫


সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এবং প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল
দেখিয়ে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের অবস্থিত
খাসমহল বালুচর উচ্চ বিদ্যালয়ে রমরমা কোচিং বানিজ্যের অভিযোগ
পাওয়া গেছে। এমনকি স্কুলের পাশাপাশি বাড়ীতেও কোচিং বানিজ্য
চালাচ্ছেন ওই স্কুলের গনিত ও বিজ্ঞান বিষয়ক সহকারী শিক্ষক মোঃ
বিল্লাল হোসেন। গতকাল শনিবার ভোরে সরেজমিনে গিয়ে এমন দৃশ্য
চোখে পরে। এছাড়াও ওই স্কুলের বেশ কয়েকজন সহকারী শিক্ষক কোচিং
বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। শিক্ষার্থীরা ওই
শিক্ষকের কাছে কোচিং করলে তিনি তাদের পরীক্ষার সময় নম্বর বেশী
পাইয়ে দেয়ার আশ^াস দেওয়ার কথাও উঠে আসছে। শিক্ষার্থীরা ওই
শিক্ষকের কাছে কোচিং না করলে পরীক্ষায় ফেল করানোর ভয় দেখানোরও
অভিযোগ পাওয়া যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খাসমহল বালুচর উচ্চ বিদ্যালয়ে বর্তমানে
ছয়শতাধীক ছাত্রছাত্রী রয়েছে। এর মধ্য থেকে প্রতি ক্লাশের ছাত্রছাত্রীর
কাছ থেকে মাসে ৫০০ শত টাকা করে নিয়ে স্কুলে সকাল ৮টা থেকে
সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এবং বাড়ীতে সন্ধ্যা ৭ থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত
কোচিং করাচ্ছেন মোঃ বিল্লাল হোসেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়,
বিদ্যালয়টিতে সরকারী কোন নীতিমালাই মানা মানা হচ্ছে না। যা
হচ্ছে তা পাইকারি হারে শিক্ষার নামে বানিজ্য ছাড়া কিছুই নয়।
বালুচর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি এ.বি সিদ্দিক মন্টু
বলেন, তারাতো কোচিং বানিজ্য আগে থেকেই করে। তবে বর্তমানে
আমার জানা নাই।
সিরাজদিখান উপজেলা যুবলীগের ৪নং আহবায়ক সদস্য মোঃ আরিফ
রশিদ বলেন, কদিন আগে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে বিল্লাল হোসেনকে
বলে দেয়া হয়েছিল যে, তিনি কোন কোচিং করাতে পারবেন না। কিন্তু
এখন তিনি যদি কোচিং করিয়ে থাকে তবে সেটা তিনি অপরাধ
করছেন।
বিদ্যালয়ের অতিরিক্ত ক্লাস করা কয়েকজন ছাত্রছাত্রীর অভিভাবকরা জানান,
শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাস করার চেয়ে কোচিং করাতে বেশি আগ্রহী।
কোচিং করালে তারা বেশি ফি নিতে পারবে। অভিভাবকরা বিদ্যালয়টির
অনিয়ম বন্ধের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও আইন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ
কামনা করছেন।
খাসমহল বালুচর উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ
মোস্তফা কামাল বলেন, বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে আমরা
কয়েকটা ব্যবস্থা নিয়েছি উনার বিভিন্ন অপকর্মের কারণে। এর পরেও
যদি তিনি কোন অপকর্ম করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আরো কঠোর
ব্যবস্থা নিবো আমরা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাজী আব্দুল ওয়াহিদ মোঃ সালেহ
বলেন, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির লোকজন তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনী
ব্যবস্থা নিবে তারপর আমরা বিষয়টি দেখবো।এ ব্যাপারে খাসমহল বালুচর উচ্চ বিদ্যালয়ের গনিত ও বিজ্ঞান বিষয়ক
সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মোঃ বিল্লাল হোসেন বলেন, আমি আগে
কোচিং করাতাম এখন করাই না। মাঝে মধ্যে স্কুলের শিক্ষার্থীরা তাদের
সমস্যার জন্য আসে। তা আমি দেখে দেই।
উল্লেখ্য খাসমহল বালুচর উচ্চ বিদ্যালয়ের গনিত ও বিজ্ঞান বিষয়ক
সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মোঃ বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র
ফাঁসের অভিযোগ উঠে। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত
কমিটি গঠন করা হয়। স্থানীয় জণসাধারণ এবং শিক্ষার্থীদের
অভিভাবকদের অভিযোগ এত অপরাধের পরও কি করে তিনি ওই স্কুলে থেকে
বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন?



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: