odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Monday, 10th November 2025, ১০th November ২০২৫

বিশ্বব্যাপী সরবরাহের চেইন পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ উপকৃত হতে পারে : মার্কিন কর্মকর্তা

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ২১ May ২০২০ ২৩:২১

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ২১ May ২০২০ ২৩:২১

 


ঢাকা, ২১ মে, ২০২০  : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার বিষয়ক কর্মকর্তা অ্যালিস ওয়েলস বলেছেন, কোভিড-১৯ এর পরিপ্রেক্ষিতে বৈশ্বিক সরবরাহ চেইন পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি লাভবান হতে পারে।
তিনি একটি আঞ্চলিক প্রেস ব্রিফিংয়ে ভার্চুয়াল মিডিয়ার মাধ্যমে যুক্ত হয়ে একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক (এই) সাপ্লাই চেইনের বৈচিত্রের সময় এখন। বাংলাদেশের জন্য এই সময়টি একটি সুযোগও হতে পারে।’ বুধবার ওয়েলস-এর প্রেস ব্রিফিংয়ে বাসসের কূটনীতিক সংবাদদাতাও যোগ দেন।
তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিক ব্যবসায়ের প্রয়োজনে বর্তমান বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারীর জন্য ‘চীনকে কিছুটা কম ঝুঁকিপূর্ণ’ বিবেচনা করা হচ্ছে।
বেইজিংয়ের সাথে ভার্চুয়াল বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে মহামারীর প্রাদুর্ভাবের আগে কয়েক মাস ধরে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইন পরিবর্তন করার আহ্বান জানিয়েছিল আমেরিকা।
এমন এক সময়ে ওয়েলসের মন্তব্য এল, যখন বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনর্গঠনে ওয়াশিংটন দৃশ্যত এই প্রচারাভিযানের সমর্থন করে, যেটি কোভিড-১৯ থেকে শিক্ষা নিয়ে দেখা যাচ্ছে, এটি ঝুঁকি হ্রাস এবং চীনের বাইরে থেকে সরবরাহের চেইন বৈচিত্র্যময় হতে পারে, যদিও গত তিন দশক ধরে দেশটি বিশ্ব অর্থনৈতিক পরাশক্তি হিসাবে রয়েছে।
চীন দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অংশ নিতে বৈদেশিক স্বাগত জানিয়েছে পূর্ববর্তী শাসন ব্যবস্থায় যে দরজা দৃঢ়ভাবে বন্ধ ছিল।
মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের জন্য নতুন অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি হতে পারে, কারণ, কোভিড-১৯ মহামারীটি চীনের ব্যবসায় ঝুঁকি হ্রাসের চাপে রাখার পাশাপাশি বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনে বৈচিত্র্য আনছে বলে।
ওয়েলস গত তিনবছরের মেয়াদকালে দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়া জুড়ে মার্কিন নীতি পর্যালোচনা করার সময় এই সংবাদ সম্মেলনটিকে তার বিদায়ী মিডিয়া ব্রিফিং বলে অভিহিত করেন।
তিনি একজন দক্ষ কূটনৈতিক কেরিয়ার শেষে মে মাসের শেষের দিকে অবসর নিতে যাচ্ছেন।
ঢাকার এক সা¤প্রতিক আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমেরিকা বাংলাদেশকে আরএমজি সাপ্লাই চেইন ধরে রাখতে সত্যিই সহায়তা করতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওয়েলস বলেন, তার সরকার বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোকে উৎপাদনের জন্য পিপিই এর মতো প্রতিরক্ষামূলক মেডিকেল গিয়ার নেওয়ার চেষ্টা করছে।
তিনি বাসসের কূটনীতিক সংবাদদাতা তানজিম আনোয়ারের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশী নির্মাতাদের এবং আমেরিকার ক্রেতাদের মধ্যে গুরুত্বপুর্ণ চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহের জন্য ম্যাচ-মেক করার চেষ্টা করছি, কারণ, বাংলাদেশি কারখানাগুলো পুনরায় নতুন বাজারে প্রত্যাবর্তন করছে এবং খুঁজছে।’
ওয়েলস স্বীকার করেছেন, এই রোগটি বাংলাদেশি আরএমজি ইউনিট সরবরাহ লাইনে বিপর্যয়মূলক প্রভাব সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক সমস্যা হ্রাস করতে তার দেশ ঢাকার সাথে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য সকল সুযোগের সন্ধান করা অব্যাহত রাখবে ।
‘আমেরিকা বাংলাদেশের বৃহত্তম রফতানি বাজার এবং আমরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি উল্লেখ করেছেন।
প্রবীণ মার্কিন এই কূটনীতিক মিয়ানমার থেকে জোর করে বাস্তুচ্যুত করা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় ঢাকার ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশ কেবল রোহিঙ্গাদের জন্য একটি আশ্রয় দেয়া দেশ ছাড়াও আরও অনেক কিছু করছে’।
তিনি বলেন, ঢাকা-ওয়াশিংটন ডিসি সম্পর্ক গত তিনবছরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং বাংলাদেশ গত দশকে অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং মানবিক বিকাশের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
ওয়েলস বলেন, ‘এটি (বাংলাদেশ) ভারত মহাসাগর অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং আমাদের সুরক্ষা সহযোগিতা আরও কাছাকাছি বৃদ্ধি পেয়েছে।’
তিনি বলেন, আমেরিকা বাংলাদেশকে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্রেক্ষাপটে অংশীদারি মূল্যবোধের ভিত্তিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পরিচালিত কাঠামোয় গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির প্রতিশ্রুতি পুনর্নবীকরণে উৎসাহিত করেছিল।
ওয়েলস ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং উজবেকিস্তানসহ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকদের করা প্রশ্নে মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন ভূ-রাজনৈতিক ইস্যুতেও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বাসস



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: