odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Wednesday, 5th November 2025, ৫th November ২০২৫

বাবা-মাকে হত্যা : মেয়ে ঐশীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড

Admin 1 | প্রকাশিত: ৫ June ২০১৭ ১৭:১৮

Admin 1
প্রকাশিত: ৫ June ২০১৭ ১৭:১৮

মালিবাগে নিজ ফ্ল্যাটে স্ত্রীসহ পুলিশের পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান হত্যা মামলায় তাদের মেয়ে ঐশী রহমানকে বিচারিক আদালতে দেয়া মৃত্যুদন্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ আজ রায় দেয়।
স্ত্রীসহ পুলিশের পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত তাঁদের মেয়ে ঐশী রহমানের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর গত ৭মে শুনানি শেষে মামলাটি যে কোন দিন রায় (সিএভি) ঘোষণার জন্য রাখা হয়েছিলো। এ আদালতে আজ সোমবার মামলাটির রায় ঘোষণা করা হবে বলে গতকাল জানিয়ে দেয়া হয়।
ঐশীর মানসিক অসুস্থতা, মাদকাসক্ত, পারিবারিক ইতিহাস, সর্বোপরি বয়স বিবেচনা করে এ রায় দেয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে তাকে বিচারিক আদালতে দেয়া ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড কমিয়ে ৫ হাজার টাকা করা হয়।
আপিল শুনানিকালে এ মামলায় মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত ঐশীর বক্তব্য শুনে হাইকোর্ট। গত ১০ এপ্রিল কারাগার থেকে হাইকোর্টে হাজির করে বিচারপতির খাসকামরায় তাঁর বক্তব্য গ্রহণ করা হয়। পরে তাঁকে কারাগারে নিয়ে যায় কারা কর্তৃপক্ষ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি এটর্নি জেনারেল জহিরুল হক। অপরদিকে আসামিপক্ষে আইনজীবী আফজাল এইচ খান ও সুজিত চ্যাটার্জি শুনানি করেন।
বাবা-মাকে হত্যার দায়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু কার্যকরের আদেশ দিয়ে দেয়া বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে মেয়ে ঐশী রহমানের খালাস চেয়ে আনা আপিল শুনানির জন্য ২০১৫ সালের ৭ ডিসেম্বর গ্রহন করে হাইকোর্ট। এরপর মামলার পেপার বুক প্রস্তুত করা হয়। গত ১২ মার্চ ডেথ রেফারেন্স ও মামলায় আনা আপিল শুনানি শুরু হয়। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু কার্যকরের আদেশ দিয়ে দেয়া বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে মেয়ে ঐশী রহমান খালাস চেয়ে ২০১৫ সালের ৬ ডিসেম্বর আপিল করেন। ঐশী রহমানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু কার্যকরের আদেশ দিয়ে দেয়া বিচারিক আদালতের রায়ের নথিসহ ডেথ রেফারেন্স ২০১৫ সালের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্টে এসে পৌঁছে। এর আগে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় ১২ নভেম্বর নিহতদের একমাত্র মেয়ে ঐশী রহমানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড দেয় ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদের আদালত। রায়ে ঐশীকে মৃত্যুদন্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদন্ডের নির্দেশ দেয়া হয়। মামলার অন্য আসামি ঐশীর বন্ধু মিজানুর রহমান রনিকে খুনের ঘটনার পর ঐশীদের আশ্রয় দেয়ার অপরাধে দু’বছরের কারাদন্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও একমাস কারাদন্ড ভোগ করতে হবে। অপর আসামি ঐশীর বন্ধু আসাদুজ্জামান জনি খালাস পেয়েছেন।
দু’টি খুনের জন্য পৃথক দু’টি অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল। দু’টি অপরাধের জন্য আলাদা আলাদা করে ঐশীকে দুইবার ফাঁসি ও দু’বারে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ফৌজদারি আইন অনুযায়ী বিচারিক আদালত ঘোষিত ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হলে হাইকোর্ট বিভাগের অনুমতি নিতে হয়।
২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরদিন ঐশী গৃহকর্মী সুমীকে নিয়ে রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করেন। গত বছরের ৯ মার্চ ডিবির ইন্সপেক্টর আবুয়াল খায়ের মাতুব্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে ঐশীসহ ৪ জনকে অভিযুক্ত করে পৃথক দু’টি চার্জশিট দাখিল করেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: