odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Wednesday, 5th November 2025, ৫th November ২০২৫
বিপাকে বাংলাদেশিরা

মালয়েশিয়ায় ব্যাপক ধরপাকড়

shahidul Islam | প্রকাশিত: ৩ July ২০১৭ ১৪:৩৫

shahidul Islam
প্রকাশিত: ৩ July ২০১৭ ১৪:৩৫

মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে অবস্থানরত বিদেশিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে দেশটির সরকার। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া ওই অভিযানের কারণে বৈধ কাগজপত্র না থাকা বিদেশিরা আতঙ্কে রয়েছেন।

এ অবৈধ বিদেশিদের তালিকায় সবচেয়ে বেশি রয়েছে বাংলাদেশি নাগরিকরা। এর আগে গত ১৫ই ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০শে জুন পর্যন্ত অবৈধভাবে  অবস্থানরত বিদেশি শ্রমিকদের বৈধকরণের জন্য সুযোগ দেয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই এ সুযোগ গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে। দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা বলছেন, এ ব্যাপারে শ্রমিকরা যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছিল। ফলে নতুন করে আর কোনো সুযোগ দেয়া সম্ভব নয়। এদিকে ধরপাকড় শুরু হওয়ার পর বিপাকে রয়েছেন বাংলাদেশিরা। গ্রেপ্তারের ভয়ে তারা ঘর থেকে বের হতে পারছেন না।

অনেকে নিজেদের ভিসার মেয়াদ বাড়াতে দালালের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েও কোনো ফল পাননি। এছাড়া দূতাবাসে ফোন করেও কোন সহযোগিতা পাচ্ছেন না তারা।  সূত্র জানায়, মালয়েশিয়ার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ অবৈধ বিদেশি শ্রমিকদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান শুরু করেছে।

শুক্রবার মধ্যরাত থেকে মালয়েশিয়াজুড়ে শুরু হওয়া এই অভিযানের প্রথমদিন বৈধ কাগজপত্র না থাকা ৫১ জন শ্রমিককে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে বেশির ভাগ শ্রমিক বাংলাদেশি বলে জানা গেছে। দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার এর খবরে বলা হয়েছে, অভিবাসন কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক দাতুক সেরি মুস্তাফার আলী নিজেই একটি অভিযানে নেতৃত্ব দেন। শুক্রবার দিবাগত রাতে কাপার এলাকার জালান জাতি কিরিতে অবস্থিত একটি অস্থায়ী ডরমিটরিতে এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় ২৩৯ জন শ্রমিকের কাগজপত্র যাচাই করা হয়।

এদের মধ্যে ৫১ জনের বৈধ কাগজপত্র ছিল না। পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তাদের আটক করা হয়েছে। মুস্তাফার জানান, এসব শ্রমিকের বেশির ভাগই ফার্নিচার ও প্লাস্টিক উৎপাদন কারখানায় কাজ করতেন। এর আগে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাতুক সেরি মুস্তাফার আলী বলেন, ১লা জুলাইয়ের পর কোনো প্রতিষ্ঠানে অবৈধ শ্রমিক ধরা পড়লে জনপ্রতি ১০ হাজার রিঙ্গিত জরিমানা করা হবে। কোনো অনিয়ম পাওয়া গেলে তাদের আদালতে নেয়া হবে। অবৈধ শ্রমিকদের তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।

চলতি বছরের ১৫ই ফেব্রুয়ারি থেকে সরকার ঘোষিত ওই ই-কার্ড বা এনফোর্সমেন্ট কার্ড আবেদনের সুযোগ দেয় মালয়েশিয়া সরকার। ই-কার্ড রেজিস্ট্রেশনের চূড়ান্ত সময়সীমা ছিল ৩০শে জুন। এর মধ্যদিয়ে অবৈধ শ্রমিকদের অস্থায়ীভাবে কাজ করার অনুমতির সুযোগ দেয়া হয়। শ্রমিকদের বিনামূল্যে এই কার্ড দেয়া হচ্ছে।

২০১৮ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ই-কার্ডের মেয়াদ থাকবে। এদিকে, দ্য স্টার-এর আরেকটি খবরে বলা হয়েছে দেশটির পিরাক এলাকায় পৃথক দু’টি অভিযানে ৩৫ জন অবৈধ শ্রমিককে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে মিয়ানমারের ২২ জন, ইন্দোনেশিয়ার ৩ জন, বাংলাদেশের ১ জন ও নেপালের ৯ জন শ্রমিক রয়েছেন। পিরাক অভিবাসন অভিযানের প্রধান সুহাইরি বাহ আলী জানান, অভিযান দু’টি চালানো হয় মেংলেম্বু ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট ও তামান মেংলেম্বু ইম্পিয়ানা আদ্রিলে। তদন্তের জন্য কারখানার মালিককেও আটক করা হয়েছে।

দেশটির অভিবাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ সুযোগ নেয়া শ্রমিকের হার মাত্র ২৩ শতাংশ। আর মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে অবস্থান করছেন প্রায় ৬ লাখ শ্রমিক। এদিকে এই ধরপাকড়ের কারণে দেশটিতে অবস্থানরত বিদেশিদের মতো আতঙ্কে রয়েছেন বাংলাদেশি শ্রমিকরা।  সময় গ্রেপ্তারের ভয়। বাসার সমানে পুলিশ ঘোরাফেরা করছে। তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কাজে যেতে পারছেন না। তাছাড়া রাস্তাঘাটেও পুলিশ। তারাও অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে তৎপরতা চালাচ্ছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: