odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Monday, 10th November 2025, ১০th November ২০২৫

উপকূলে শুটকি উৎপাদনের মাধ্যমে জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ১২ February ২০১৮ ১৫:১০

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ১২ February ২০১৮ ১৫:১০

উপকূলীয় জেলা ভোলায় শুটকি উৎপাদনের মাধ্যমে বিকল্প কর্মসংস্থানের পথ সৃষ্টি হয়েছে জেলেদের।

সর্ব দক্ষিণের চরফ্যাসন উপজেলার সাগর তীরবর্তী এলাকা কুকরী-মুকরী ও ঢালচরে গড়ে উঠছে মৌসুম ভিত্তিক শুটকির পল্লী। শীত মৌসুমে ইলিশের স্বল্পতা থাকায় অনেক জেলেই শুটকি তৈরিতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

দীর্ঘদিন যাবত এ অঞ্চলে শুটকি উৎপাদন হলেও গত প্রায় ১০ বছর যাবত ব্যাপক আকারে শুটকি তৈরি হচ্ছে। 


জেলেরা স্থানীয় নদ-নদী ও সাগর মোহনা থেকে চিংড়ি, চেউয়্যা, লউট্রা, ছুরা ও বদরছুিরসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট উপায়ে রোদে শুকিয়ে শুটকির জন্য প্রস্তুত করেন। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, চট্রগ্রাম, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, লক্ষীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এসব শুটকি বিক্রি হয়। ঢাকা থেকে অনেকে আবার এসব শুটকি দেশের বাইরেও রপ্তানি করে থাকেন।

 
জানা যায়, সাধারণত পৌষ, মাঘ ও ফাল্গুন এ তিন মাস শুটকি তৈরীর মৌসুম। শীত মৌসুমে ইলিশের সংকট থাকায় অনেক জেলেই বেকার হয়ে পড়েন। এ সময় তাই বিকল্প কর্মসংস্থান হিসাবে শুটকি তৈরি বেছে নিয়েছেন তারা। এতে করে অভাবের অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ফিরে পেয়েছে অনেক জেলে পরিবার। প্রতি মৌসুমে কুকরী-মুকরী থেকে কোটি টাকার শুটকি বিক্রি হচ্ছে বলে শুটকি তৈরীর সাথে জড়িত জেলেরা জানিয়েছেন। 


তারা জানান, নদী থেকে মাছ ধরার পর ২/৩ দিন ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে নিতে হয়। এরপর মাঁচা তৈরী করে সেখানে আরো কিছুদিন সংরক্ষণ করতে হয়। পরে উৎকৃষ্ট মানের শুটকি প্রস্তুত সম্পন্ন হলেই তা বিক্রির জন্য নেয়া হয়। এ মৌসুমে প্রতি মণ শুটকি ১২’শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সামনের দিকে দাম আরো বাড়বে বলে বিক্রেতারা জানান। 


কুকরী-মুকরীর বালুর ধুম, নারিকেল বাগান ও ডাকাতিয়া ঘাটের মধ্যবর্তী চরে গড়ে উঠেছে শুটকি পল্লী। সেখানে দেখা যায় জেলেদের ব্যস্ততা। কেউ রোদে শুটকি শুকাচ্ছেন, কেউ আপন মনে পরিচর্যা করছেন। কেউ আবার মাঁচার ভিতর শুটকি প্রস্তুত করছেন। এছাড়া উপজেলার ঢালচর এলাকাতেও কয়েকটি শুটকি পল্লী গড়ে উঠেছে।


শুটকির আড়ৎদার মো: ইউনুছ বয়াতি জানান, কুকরী-মুকরীতে শতাধিক জেলে বর্তমানে শুটকি তৈরীর সাথে জড়িত। তারা শুটকি তৈরী করে বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করেন। এ বছর পুরো মৌসুমে কুকরী থেকে এক কোটি টাকার শুটকি বিক্রি হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।


জেলে কামাল মিয়া ও রহমান আলী জানান, তারা গত ৩ বছর ধরে শুটকি পল্লীতে কাজ করছেন। ফলে নদীতে মাছ না থাকার সময়টাতে তারা স্বচ্ছল রয়েছেন।


জেলে মো: আলাউদ্দিন সিকদার জানান, শুটকি তৈরিতে অল্প পুঁজিতে বেশি লাভ। তাই শুটকির প্রতি ঝুঁকছেন জেলেরা।


জেলে আক্তার হোসেন ও মো: শফিকুল বেপারী জানান,পাখি কিংবা বন্য প্রাণীর হাত থেকে শুটকি মাছ রক্ষা করতেই মাঁচা তৈরি করে শুটকি সংরক্ষণ করতে হয়। আর শুটকি উৎপাদনের আয়ে তাদের ভালো চলছে।


জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: রেজাউল করিম জানান, জেলেদের সহযোগীতার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে শুটকি শিল্পকে আরো প্রসারিত করা হবে। এতে করে শুটকির সাথে জড়িত জেলেদের আগ্রহ বাড়বে,অন্যদিকে জাটকা ইলিশও সংরক্ষণ করা যাবে।-খবর বাসসের



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: