ঢাকা, ৩ নভেম্বর, ২০২৫:
জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দেখা দেওয়া মতভেদ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘জরুরি সভায়’ এই উদ্বেগ জানানো হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
১ সপ্তাহের 'কড়া' বার্তা: ঐক্যবদ্ধ হতে হবে
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে যে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে, সম্ভব হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা: রাজনৈতিক দলগুলো যদি এই সময়ের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।
> আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, "বর্তমান পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের কোনো সুযোগ নেই। ...ওনারা যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, অবশ্যই সরকার সরকারের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।"
>
তিনি অবশ্য এটিকে 'আল্টিমেটাম' বলতে নারাজ, তবে পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় সরকারের কঠোর অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে। সরকার জানিয়েছে, তারা আর কোনো আলোচনার আয়োজন করবে না। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে দীর্ঘদিন একসঙ্গে থাকা দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা দেবে—এ প্রত্যাশা সরকার করছে।
জরুরি সভার কারণ ও উদ্বেগ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত মঙ্গলবার সুপারিশ জমা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরবিরোধী অবস্থান নেওয়ায় এই জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। উপদেষ্টা পরিষদের সভায় মূলত যে বিষয়গুলো নিয়ে মতভেদ ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়:
* সংস্কারের কিছু সুপারিশ নিয়ে ভিন্নমত।
* গণভোট কবে হবে? (জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন, নাকি আগে)।
* গণভোটের বিষয়বস্তু কী হবে।
এসব বিষয়ে দ্রুত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন বলে সভায় অভিমত ব্যক্ত করা হয়।
ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন
সংবাদ সম্মেলনে আসিফ নজরুল জোর দিয়ে বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
সাংবাদিকের প্রশ্নে আইন উপদেষ্টা
এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল জানান, সরকার ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার জন্য একটু সময় দিতে চায়। ঐকমত্য কমিশনে আলোচনার বিষয়ে একটি বড় রাজনৈতিক দলের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি, তবে এ বিষয়েও ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: