odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Wednesday, 5th November 2025, ৫th November ২০২৫

গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান প্রধানমন্ত্রীর

Admin 1 | প্রকাশিত: ৭ March ২০১৭ ২১:৫২

Admin 1
প্রকাশিত: ৭ March ২০১৭ ২১:৫২

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়নে কাজ করার এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখার আহবান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আসুন সবাই মিলে একটি অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলি। প্রতিষ্ঠা করি জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’। ঐতিহাসিক ৭ই মার্চে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গত ৮ বছরে আমরা দেশের প্রতিটি খাতে কাঙ্খিত অগ্রগতি অর্জন করেছি। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ‘রোল মডেল’। ২০২১ সালের আগেই আমরা বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করব, ইনশাআল্লাহ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে সোমবার দেয়া এক বাণীতে এই আহবান জানান।
তিনি বলেন, “বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে ৭ই মার্চ এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক এদিনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দেন। ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানের বিশাল জনসমুদ্রে তিনি বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা দেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ অঞ্চলের জনগণের ওপর নেমে আসে বৈষম্য আর নির্যাতনের যাতাকল। অর্থনৈতিক বৈষম্য ছাড়াও সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালির মাতৃভাষাকে উপেক্ষা করে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী। শুরু হয় বাঙালির আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার আদায়ের সংগ্রাম।
তিনি বলেন, ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ৬-দফা আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান এবং ৭০’র সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ের পথ ধরে বাঙালির মুক্তি সংগ্রাম যৌক্তিক পরিণতির দিকে ধাবিত হয়। আর এসব আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
শেখ হাসিনা বলেন, অবশেষে চলে আসে একাত্তরের ৭ই মার্চের সেই ঐতিহাসিক মাহেন্দ্রক্ষণ। রেসকোর্সের জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে তিনি প্রদান করলেন স্বাধীনতার পথ-নকশা। যুদ্ধ অনিবার্য জেনে তিনি শত্রুর মোকাবেলায় বাঙালি জাতিকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন; ‘তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো।’ জাতির পিতার এই সম্মোহনী আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।
‘১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কালরাতে পাকিস্তানী সামরিক জান্তা গণহত্যা শুরু করে। জাতির পিতা ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহিদ হন। ২ লাখ মা-বোন সম্ভ্রমহারা হন। রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ আর বহু ত্যাগের বিনিময়ে আমরা ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি। পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে ছিনিয়ে আনি মহান স্বাধীনতা’বানীতে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ভাষণ। লেখক ও ইতিহাসবিদ জ্যাকব এফ ফিল্ড’এর বিশ্বসেরা ভাষণ নিয়ে লেখা ‘ উই সেল ফাইট অন দ্যা বীস : দ্যা স্পীস দেট ইন্সপায়ার্ড হিস্টোরী ’ গ্রন্থে এই ভাষণ স্থান পেয়েছে। অসংখ্য ভাষায় অনুদিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালির বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতার এই ভাষণের দিকনির্দেশনাই ছিল সে সময় বজ্রকঠিন জাতীয় ঐক্যের মূলমন্ত্র। অসীম ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অমিত শক্তির উৎস ছিল এ ঐতিহাসিক ভাষণ। যার আবেদন কোন দিনই ম্লান হবে না।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: