odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Sunday, 16th November 2025, ১৬th November ২০২৫

হাই কোর্টের সামনে ড্রামে খণ্ডিত লাশ: প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্যবসায়ীকে ঢাকায় এনে নৃশংস খুন!”

odhikarpatra | প্রকাশিত: ১৬ November ২০২৫ ১৭:৩৭

odhikarpatra
প্রকাশিত: ১৬ November ২০২৫ ১৭:৩৭

হাই কোর্টের সামনে প্লাস্টিকের ড্রাম থেকে উদ্ধার হওয়া খণ্ডিত লাশের রহস্য উন্মোচন করেছে র‌্যাব। রংপুরের ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে ‘প্রেমের ফাঁদে ফেলে’ ঢাকায় এনে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এলিট বাহিনী।

ঢাকার হাই কোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেইটের পাশে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একটি নীল ড্রামের ভেতর থেকে ২৬ টুকরো খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আঙুলের ছাপ মিলিয়ে শনাক্ত হওয়া লাশটি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার আশরাফুল হকের।

ঘটনার পর থেকে আশরাফুলের বন্ধু জরেজকে প্রধান সন্দেহভাজন ধরে পুলিশ তল্লাশি চালায়। শুক্রবার রাতে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। অন্যদিকে র‌্যাব কুমিল্লার লাকসাম থেকে গ্রেপ্তার করে জরেজের প্রেমিকা শামীমা আক্তার কোহিনুরকে


প্রেমের ফাঁদে’ ফেলে ব্ল্যাকমেইলের পরিকল্পনা

র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন জানান—
গত এক বছর ধরে জরেজের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন শামীমা। দু’জন মিলে পরিকল্পনা করেন, শামীমাকে দিয়ে আশরাফুলকে আকৃষ্ট করে ঢাকায় এনে ১০ লাখ টাকা আদায় করা হবে। জরেজ ৭ লাখ এবং শামীমা ৩ লাখ নেবে—এমন চুক্তিও হয়।

শামীমা এক মাস ধরে নিয়মিত অডিও-ভিডিও কলে আশরাফুলকে ‘প্রেমের সম্পর্কে’ জড়ানোর চেষ্টা করেন।


ঢাকায় আনা ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা

গত মঙ্গলবার রাতে জরেজ আশরাফুলকে নিয়ে ঢাকায় আসে। বুধবার শামীমার সঙ্গে দেখা করে তাঁরা তিনজন শনির আখড়ার নূরপুর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন।

র‌্যাব জানায়, পরিকল্পনা ছিল শামীমার সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে আশরাফুলকে দেখিয়ে টাকা আদায় করা।

কিন্তু বুধবার দুপুরে জরেজ প্রথমে আশরাফুলকে মালটার শরবতের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে। এরপর তার হাত দড়ি দিয়ে বাঁধে এবং মুখ স্কচটেপ দিয়ে আটকে দেয়।

একপর্যায়ে হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে—
শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আশরাফুলের।

র‌্যাব বলছে, শামীমার মোবাইল থেকে সেদিনের ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে।


লাশ কাটাছেঁড়া ও ড্রামে ফেলার পরিকল্পনা

হত্যার পর জরেজ ও শামীমা একই ঘরে রাত কাটায়। পরে লাশ খণ্ডিত করে ড্রামে ভরে হাই কোর্টের সামনে ফেলে রেখে আসে।

তবে র‌্যাব এখনও নিশ্চিত নয়—
টাকা আদায়ের পরিকল্পনা থাকলেও কেন শেষ পর্যন্ত হত্যা করা হলো?
এ বিষয়ে জানতে জরেজের পূর্ণ জবানবন্দির অপেক্ষায় আছে তদন্ত দল।


মামলা ও চলমান তদন্ত

শুক্রবার নিহতের বোন শাহবাগ থানায় মামলা করেন। ইতোমধ্যে দু’জন গ্রেপ্তার হয়েছে এবং র‌্যাব-পুলিশ যৌথভাবে তদন্ত এগিয়ে নিচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মতে, এটি অনেকটাই ‘হানিট্র্যাপ’-ভিত্তিক ভয়াবহ ব্ল্যাকমেইলিং চক্রের অংশ হতে পারে।


 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: