🖊️ ক্রাইম প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম
আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গোপন গেরিলা প্রশিক্ষণের অভিযোগে দায়ের করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাবেক মেজর মো. সাদিকুল হককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই সঙ্গে পৃথক মামলায় তার স্ত্রী সুমাইয়া তাহমিদ জাফরিনকেও পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসান শাহাদাত এই আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আদালতের কার্যক্রম
সকালে মেজর সাদিক ও তার স্ত্রীকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রথমে মেজর সাদিককে ভাটারা থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে রিমান্ড শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে। অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী এইচ এম আল আমিন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।
তদন্তে কী উঠে এসেছে
রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা জানান, সামরিক আদালতের রায়ে গত ২৯ অক্টোবর মেজর সাদিকুল হককে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত করে তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং তাকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
তদন্তে বলা হয়, সেনাবাহিনীতে কর্মরত থাকা অবস্থায় ৩ ও ৮ জুলাই ভাটারা থানাধীন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা সংলগ্ন কেবি কনভেনশন হলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের প্রায় ৩০০–৪০০ জন নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে গোপন সভা ও প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, মেজর সাদিক ছিলেন প্রধান প্রশিক্ষক ও কানেক্টর। তার নেতৃত্বে পূর্বাচল, রূপগঞ্জ, মিরপুর ডিওএইচএস, কাটাবন ও উত্তরা এলাকায় একাধিকবার গোপন প্রশিক্ষণ ও ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়। এসব কার্যক্রমে তার স্ত্রী সুমাইয়া তাহমিদ জাফরিনের ফ্ল্যাট ব্যবহারের অভিযোগও আনা হয়।
‘অপারেশন ঢাকা ব্লকেড’-এর অভিযোগ
তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, মেজর সাদিক ‘অপারেশন ঢাকা ব্লকেড’–এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি গোপন কোড, ছদ্মনাম, অনলাইন সিগন্যাল অ্যাপ ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে সংগঠনকে পরিচালনার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কাজ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
কেবি কনভেনশন হলের সিসিটিভি ফুটেজ ও গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তার সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে।
স্ত্রী জাফরিনের বিরুদ্ধে অর্থায়নের অভিযোগ
সুমাইয়া তাহমিদ জাফরিনের রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, তিনি নিষিদ্ধ সংগঠনের অর্থ যোগানদাতা, পরামর্শদাতা ও নির্দেশদাতা হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, তিনি সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের নিয়মিত অর্থ সহায়তা করতেন এবং প্রভাবশালী নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখতেন।
মামলার পটভূমি
- ভাটারা থানা মামলা: ১৩ জুলাই ভাটারা থানার এসআই জ্যোতির্ময় মন্ডল সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন।
- গুলশান থানা মামলা: ২২ এপ্রিল গুলশান-১ এলাকায় নিষিদ্ধ সংগঠনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিলের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: