বিশেষ প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম
ঢাকা: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার সম্পূর্ণ প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে এবং যে কোনো সহিংসতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাতে এসব কথা জানান তিনি। সাক্ষাতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন।
আলোচনায় আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট ছাড়াও বাণিজ্য, বেসামরিক বিমান চলাচল, শ্রম সংস্কার এবং বাংলাদেশ–যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিক উঠে আসে। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে।
এক বছরের দায়িত্বকাল শেষে দেশে ফেরার প্রাক্কালে ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত শ্রম সংস্কার উদ্যোগকে ‘অসাধারণ ও ব্যতিক্রমধর্মী’ বলে উল্লেখ করেন, যা ভবিষ্যতে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেন।
বিশেষভাবে তিনি শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে আগের সরকারের আমলে দায়ের হওয়া ৪৬টি মামলার মধ্যে ৪৫টি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন।
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা নতুন শ্রম অধ্যাদেশকে একটি ‘উৎকৃষ্ট ও সময়োপযোগী আইন’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, দেশের শীর্ষ শ্রমিক নেতারা এ আইনকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কনভেনশন অনুসমর্থনের বিষয়েও ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন।
সাক্ষাতে রোহিঙ্গা সংকট ও মানবিক সহায়তা প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের জন্য জীবনরক্ষাকারী মানবিক সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, কক্সবাজার ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শিবিরগুলোতে আশ্রয় নেওয়া এক মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বড় একক দাতা।
বিদায়ী সাক্ষাতে দায়িত্বকালে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে তাঁকে বাংলাদেশের ‘বন্ধু’ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।
সাক্ষাতে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: