odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Saturday, 15th November 2025, ১৫th November ২০২৫

মাশরাফির অবসর নিয়ে নাজমুল

Admin 1 | প্রকাশিত: ৬ April ২০১৭ ২১:৪৫

Admin 1
প্রকাশিত: ৬ April ২০১৭ ২১:৪৫

দুটোই ঠিক। তাঁর সঙ্গে বলা আগের কথা অনুযায়ী মাশরাফি বিন মুর্তজা যেমন অবসর নিয়েছেন, আবার সিদ্ধান্তটি এসেছে আচমকাও। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান মনে করেন এমনটাই।
হোটেল তাজ সমুদ্রের লবিতে বসে কাল দুপুরে নাজমুল হাসান বললেন, ‘আমরা আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা ভেবে চাইছিলাম, মাশরাফি টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিক। কারণ পরবর্তী অধিনায়ককে তার দল গুছিয়ে নিতে সময় তো দিতে হবে। ওর সঙ্গে তেমনই কথা হয়েছিল। কিন্তু এই টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষ করে অবসরের ঘোষণা দেবে, না আগে, সেটি ওর ওপরই নির্ভর করছিল। কিন্তু সে প্রথম টি-টোয়েন্টির দিন অবসরই নিয়ে ফেলল।’
এটা মাশরাফির একান্তই নিজস্ব সিদ্ধান্ত বললেও ঘটনাপরম্পরায় পরিষ্কার, একটা চাপ তাঁর ওপর ছিল। টি-টোয়েন্টিতে তাঁর বোলিং কোচের কাছে ততটা উপযোগী মনে হচ্ছিল না। তবে বিসিবি সভাপতি বলেছেন, মাশরাফিকে অধিনায়কত্ব ছাড়ার কথা বলা হলেও খেলোয়াড় হিসেবে দলে তাঁর জায়গা ছিল। প্রসঙ্গক্রমে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে তাঁর বোলিংয়ের ভূয়সী প্রশংসাও তিনি করেছেন। এখানেই একটু স্ববিরোধী মনে হয় নাজমুল হাসানকে। কোচ যদি তাঁর বোলিং আর পছন্দ না করেন, তাহলে কীভাবে একাদশে জায়গা ধরে রাখতেন মাশরাফি?
তবে একটা কথা নাজমুল অস্বীকার করতে পারেননি যে অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফির কোনো বিকল্প নেই। মাশরাফি দুর্দান্ত এক অধিনায়ক, নিজে যেমন উজাড় করে দিতেন সবটুকু, সতীর্থদেরও অনুপ্রাণিত করতেন সর্বস্ব উজাড় করে খেলতে। নাজমুল বললেন, আগামী জুনে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তিনিই অধিনায়ক থাকবেন এবং যত দিন মাশরাফি ফিট থাকবেন, তত দিন ওয়ানডেতে খেলবেন।
টি-টোয়েন্টি থেকে মাশরাফির আচমকা অবসরে স্বভাবতই একটা প্রশ্ন মনে আসে। এমন অপ্রত্যাশিতভাবে অবসরের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবেন না তো আর কোনো সিনিয়র খেলোয়াড়? বিশেষ করে নাজমুল নিজেই যখন বলেন, পারফরম্যান্সই একমাত্র বিচার্য। নাজমুল এই প্রশ্নে একটু যেন বিচলিত, ‘পরশু রাতে (সোমবার) আমি সাকিব, তামিম, মুশফিক ও মাশরাফির সঙ্গে বসেছিলাম। ওদের বলেছি, তোমরা যেভাবে খেলছ, শৃঙ্খলাগত কারণ ছাড়া তোমাদের কেউ বাদ দিতে পারবে না। আমি থাকতে তো প্রশ্নই ওঠে না।’
বিসিবি সভাপতি যতই বলুন, টি-টোয়েন্টিতে একজন খেলোয়াড় হিসেবে মাশরাফির জায়গা এখনো আছে, কার্যত সেটি নেই বলে তাঁকে ধারণা দিয়ে দেওয়াতেই মাশরাফি বিদায় বলে দিয়েছেন। এখন অনিবার্যভাবেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আসবে নতুন অধিনায়ক। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসানই পেতে যাচ্ছেন সেই দায়িত্ব? নাজমুল এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে পারছেন না, কারণ পরবর্তী বোর্ড সভায় ওটা পাস হতে হবে। তবে সাকিবের প্রতিই তিনি ঝুঁকে আছেন, ‘সাকিবই যেহেতু সহ-অধিনায়ক, সে-ই এগিয়ে আছে। আর ও এখন অনেক পরিণত।’ প্রসঙ্গক্রমে নাজমুল তুলেছেন তিন অধিনায়কের প্রসঙ্গ, ‘আমরা তো চেয়েছিলাম তিন সংস্করণে তিন অধিনায়ক। এমনকি তিনটি দল। তিন অধিনায়ক করা গেলেও দল করা সম্ভব হচ্ছে না। আর আমাদের একটা অধিনায়কের প্যানেল আছে—মাশরাফি, মুশফিক, সাকিব, তামিম ও মাহমুদউল্লাহ। এখন টেস্ট থেকে তো মুশফিককে সরাতে পারব না। মাশরাফি যেহেতু শুধু ওয়ানডেতে আছে, এখন নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক বেছে নেব আমরা। তবে অধিনায়ক হিসেবে মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে আমরা ভাবছি না।’
শ্রীলঙ্কার এ সফরটাই যেন মাঠের চেয়ে মাঠের বাইরের ঘটনায় আক্রান্ত হলো বেশি। প্রথমে মুশফিকের উইকেটকিপিং ছাড়া নিয়ে বিতর্ক। পরে টেস্ট দল থেকে মাহমুদউল্লাহকে বাদ দেওয়া। এরপরও টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ ড্র করা গেছে। এখন টি-টোয়েন্টি সিরিজের শুরুতেই মাশরাফির অবসর-চমক। এতে দলের মনঃসংযোগ নড়ে যায় না? শ্রীলঙ্কা থেকে তিন সিরিজেই অপরাজিত থেকে ফিরতে পারবে বাংলাদেশ দল? বিসিবি সভাপতির উত্তর, ‘শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি আমাদের জিততে হবে। আজ (কাল) মাশরাফির সম্মানে ডিনার দেব আমি, সেখানে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করব। ওরা সবাই নিশ্চয়ই মাশরাফির জন্য খেলতে চাইবে।’
ঠিকই তো, বিসিবি সভাপতি চাইলে সবকিছুই হয়!



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: