odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Monday, 10th November 2025, ১০th November ২০২৫

ইলিশের বাজার ভোলায় জমে উঠেছে

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ৩১ October ২০১৯ ১৪:৪৯

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ৩১ October ২০১৯ ১৪:৪৯

 

ভোলা, ৩১ অক্টোবর, ২০১৯ বৃহস্পতিবার : দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর জেলায় পুনরায় জমে উঠেছে ইলিশের মোকাম ও বাজারগুলো। এবছর ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম ৯ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ৩০ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত টানা ২২ দিন ইলিশ শিকার, আহরণ, মজুত ও বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারী করে সরকার। বুধবার রাত ১২ টার পর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে ফের ব্যস্ত হয়ে উঠেছে জেলে পল্লীগুলো। আজ সকাল থেকে সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন মাছের ঘাট, আড়ৎ, পাইকারী ও খুচরা বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁক-ডাক ও দর কষাকষিতে মুখরিত হচ্ছে ইলিশের বাজার।
জেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতি’র সভাপতি মো: নুরুল ইসলাম বাসস’কে বলেন, টানা ২২ দিন বন্ধ থাকার পর জেলেরা নতুন উদ্যমে মাছ ধরায় ব্যস্ত। এবছর সরকারের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার ফলে জেলেরো পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন থাকায় ইলিশ শিকার থেকে বিরত ছিলো। রাত থেকে মাছ ধরা শুরু হলে জেলেদের জালে বেশ ইলিশ ধরা পড়ছে। ঘাটগুলোতে শত শত কেজি মাছ আসতে শুরু করেছে। আর অনেকদিন পর ইলিশের বাজার শুরু হওয়ায় পর্যাপ্ত চাহিদা রয়েছে বলে তিনি জানান।
সদর উপজেলার মেঘনার ভোলার খাল মাছের ঘাট, কোরার হাট মাছের মোকাম, তুলাতুলি মাছ ঘাট, বিশ্বরোড মাছের ঘাট, জংশন এলাকার মাছঘাট, ইলিশার মাছ ঘাট, েেতঁতুলিয়ার ভেদুরিয়া মাছঘাট, শান্তির হাটের মাছঘাট, দৌলতখান উপজেলার পাতার খাল, চরফ্যাশনের সামরাজ মাছ ঘাট, চেয়ারম্যানের খাল মাছ ঘাট, নুরাবাদের খাল, চকিদারের খালের ঘাট, শশীভ’শনের বকসি ঘাটসহ বিভিন্ন ইলিশের মোকামে জমে উঠেছে। মোকামগুলোতে জেলেদের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো।
এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজাহারুল ইসলাম বাসস’কে জানান, এবছর অল্পসংখ্যক জেলে আইন অমান্য করে ইলিশ শিকার করতে গেলে তাদের আইনের আওতায় আনা হয়। ফলে জেলায় ৫৭২ জন জেলের বিভিন্ন মেয়াদে জেল দেওয়া হয়েছে। আমাদের ৩৭৩টি আভিযান ও ২৩৯টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৩৭৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া জরিমানা আদায় হয়েছে ১১ লাখ ২৩ হাজার টাকার। একইসাথে ইলিশ জব্দ করা হয়েছে সাড়ে ৫ হাজার কেজি ও অবৈধ জাল উদ্ধার হয়েছে সাড়ে ১০ লাখ হাজার মিটার।
এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য সময়ের চেয়ে ইলিশের ব্যাপক সরবরাহ। ক্রেতাদের আনাগোনাও প্রচুর। আর দামও আগের চেয়ে অনেক কম। ৩’শ থেকে ৫’শ গ্রামের ওজনের ইলিশ হালি (৪টি) বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকা, ৬’শ থেকে ৮’শ গ্রামের হালি ১৬’শ, ১৯’শ থেকে ১ কেজি ওজনের বিক্রি হচ্ছে ৩হাজার টাকা ।
মূলত ইলিশের মৌসুম শেষের দিকে চলে আসায় দাম কমে যাচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা মনে করেন। সামনের দিনগুলোতে দাম আরো কমবে বলে জানান তারা। তবে বড় ইলিশের দেখা বেশি মিলছেনা। খুচরা বাজারে ইলিশের দাম না কমায় অনেকে ক্রেতাকে পাইকারী বাজার থেকে ইলিশ কিনতে দেখা গেছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের দর কষাকষিতে মুখর হয়ে উঠেছে ইলিশের বাজারগুলো।
নতুন বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন কাজী ও সুরোজ মিয়া বলেন, সরকারের মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম জেলায় কঠোরভাবে পালন হওয়ায় সব ধরনের ইলিশ আমদানী বন্ধ ছিল। তাই দীর্ঘ বিরতির পর ইলিশ শিকার শুরু হওয়ায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ। পাশাপাশি পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় তাদের লাভও ভালো হচ্ছে বলে জানান।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরো জানান, ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। একে রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে এর উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধি করা সম্ভব। এবছর সকলের প্রচেষ্টায় বহুগুণে মা ইলিশ রক্ষা করা গছে। ১ লাখ ৬০ হাজার মে:টন ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি। ফলে আগামী দিনে প্রচুর ইলিশ পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন এ মৎস্য কর্মকর্তা।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: