odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Monday, 10th November 2025, ১০th November ২০২৫
প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিলে রাসূল (সা.) বিচলিত হয়ে পড়তেন

রাসূল (সা.) প্রাকৃতিক দূর্যোগ এর সময়ে যা করতে বলেছেন

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ৯ November ২০১৯ ২২:২৬

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ৯ November ২০১৯ ২২:২৬

আরও শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। ঝড়ের কারণে সারাদেশে নৌ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

এদিকে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর।

প্রাকৃতিক এ মহাবিপর্যয়ে ইতিমধ্যে দেশব্যাপী আতংক শুরু হয়েছে। সমুদ্র উপকূলে বসবাসকারীরা নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসছে। প্রাকৃতিক এমন দুর্যোগ-দুর্ঘটনা আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছারই বহিঃপ্রকাশ।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টিতে, তার নির্দেশে বায়ুর দিক পরিবর্তনে এবং তার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত মেঘমালাতে জ্ঞানবান জাতির জন্য নিদর্শন রয়েছে। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৬৪)

তবে মানুষের গুনাহ ও কৃতকর্মের কারণেই এ ধরনের বিপর্যয় ঘটে থাকে। সমাজে অন্যায়-অনাচার বেড়ে গেলেই প্রাকৃতিক দুর্যোগের বেশি আশঙ্কা থাকে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, জল–স্থলে বিপর্যয় মানুষের কৃতকর্মের ফল। ( সুরা-৩০ রুম, আয়াত: ৪১)।

তাই বিভিন্ন হাদিসে রাসূল (সা.) প্রাকৃতিক দুর্যোগের অনেক কারণ উল্লেখ করেছেন। রাসূল (সা.) নিজেও উম্মতের ওপর এসব দুর্যোগের ব্যাপারে শঙ্কিত ছিলেন। এই উম্মতকে যেন প্রাকৃতিক দুর্যোগ দিয়ে একসঙ্গে ধ্বংস করা না হয় এ জন্য রাসূল (সা.) আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন।

প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিলে রাসূল (সা.) বিচলিত হয়ে পড়তেন। আল্লাহর শাস্তির ভয় করতেন। বেশি বেশি তওবা-ইস্তেগফার করতেন এবং সাহাবাদের তা করার নির্দেশ দিতেন। ঝড়-তুফান শুরু হলে রাসূল (সা.) মসজিদে চলে যেতেন। নফল নামাজে দাঁড়িয়ে আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করতেন।

এ জন্য ঘূর্ণিঝড় ফনির আগমনে আমাদেরও এ আমলগুলোর প্রতি যত্মবান হতে হবে। বিশেষত অতীতের সব গুনাহ ও ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে রাসূল (সা.) কয়েকটি দোয়া শিখিয়েছেন।

জোরে বাতাশ প্রবাহিত হলে যে দোয়া পড়তে হবে

ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﺧَﻴْﺮَﻫَﺎ، ﻭَﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﺷَﺮِّﻫَﺎ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা, ওয়া আউযুবিকা মিন শাররিহা

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট এর কল্যাণটাই কামনা করি। এবং আপনার নিকট এর অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাই। আবূ দাউদ ৪/৩২৬, নং ৫০৯৯; ইবন মাজাহ্ ২/১২২৮, নং ৩৭২৭।

মেঘের গর্জন হলে যে দোয়া পড়তে হবে-

হজরত আব্দুল্লাহ ইবন যুবাইর (রা.) যখন মেঘের গর্জন শুনতেন তখন কথা বলা বন্ধ করে দিতেন এবং পবিত্র কোরআনের এই আয়াত তিলাওয়াত করতেন-

سُبْحَانَ الَّذِي يُسَبِّحُ الرَّعْدُ بِحَمْدِهِ، والـمَلائِكَةُ مِنْ خِيْفَتِهِ

উচ্চারণ: সুবহানাল্লাজি ইউসাব্বিহুর রা`দু বিহামদিহি ওয়াল মালাইকাতু মিন খিফাতিহি

অর্থ: পাক-পবিত্র সেই মহান সত্তা- তাঁর প্রশংসা পাঠ করে বজ্র এবং সব ফেরেশতা।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মেঘের গর্জন শুনলে বা বিদ্যুতের চমক দেখলে সঙ্গে সঙ্গে এই দোয়া করতেন-

اللَّهُمَّ لا تَقْتُلْنَا بِغَضَبِكَ ، وَلا تُهْلِكْنَا بِعَذَابِكَ ، وَعَافِنَا قَبْلَ ذَلِكَ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লা- তাক্বতুলনা- বিগযাবিকা ওয়া লা-তুহলিকনা- বিআ’জা-বিকা, ওয়া আ’-ফিনা- ক্বাব্লা যা-লিকা।

অর্থ: হে আমাদের প্রভু! আমাদেরকে তোমার ক্রোধের কারণে মেরে ফেলো না আর তোমার আযাব দিয়ে আমাদের ধ্বংস করো না। বরং এর আগেই আমাদেরকে ক্ষমা ও নিরাপত্তার চাদরে আবৃত করে নাও। (তিরমিজি)

ঝড় বা বাতাশ থেকে বাঁচতে যে দোয়া পড়তে হবে-

ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﺧَﻴْﺮَﻫَﺎ، ﻭَﺧَﻴْﺮَ ﻣَﺎ ﻓِﻴﻬَﺎ، ﻭَﺧَﻴْﺮَ ﻣَﺎ ﺃُﺭْﺳِﻠَﺖْ ﺑِﻪِ، ﻭَﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﺷَﺮِّﻫَﺎ، ﻭَﺷَﺮِّ ﻣَﺎ ﻓِﻴﻬَﺎ، ﻭَﺷَﺮِّ ﻣَﺎ ﺃُﺭْﺳِﻠَﺖْ ﺑِﻪِ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন খাইরি হাজিহির রিহি ওয়া খাইরা মা ফিহা ওয়া খাইরা মা উরসিলাত বিহি, ওয়া আউযুবিকা মিন শাররিহা, ওয়া শাররি মা ফিহা ওয়া শাররি মা উরসিলাত বিহি’ অর্থ: হে আল্লাহ!

আমি আপনার নিকট প্রার্থনা করি এর কল্যাণ, এর মধ্যকার কল্যাণ এবং যা এর সাথে প্রেরিত হয়েছে তার কল্যাণ। আর আমি আপনার আশ্রয় চাই এর অনিষ্ট থেকে, এর ভেতরে নিহিত অনিষ্ট থেকে এবং যা এর সঙ্গে প্রেরিত হয়েছে তার অনিষ্ট থেকে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: