
অনেক সংসদ সদস্য পার্লামেন্টের ভেতরেই চিৎকার করে আনন্দ শুরু করেন।
দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পর পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে। একে মুগাবে যুগের অবসান বলে বর্ণনা করা হচ্ছে দেশটির গণমাধ্যমে। তার এই ঘোষণার পরেই রাতারাতি যেন দেশের রাজনৈতিক আর সাধারণ মানুষের আচরণও বদলে গেছে।
যে দেশটিতে এক সপ্তাহ আগেও বেশিরভাগ বিদেশী সংবাদ মাধ্যম ছিল নিষিদ্ধ, সেখানে অনেকে নেতাই এখন এসব সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এই উল্লাসের চিত্র দেখা গেছে রাজধানী হারারের অলিগলিতেও। অনেকে চিৎকার করে, নেচে গেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তাদের অনেকের এই আনন্দের কারণ ভয় বা ভীতি থেকে মুক্তি। কিন্তু মি. ক্ষমতার এই পালাবদলে কি পাল্টাতে চলেছে জিম্বাবুয়ে?সম্ভবত নয়। কারণ সম্ভাব্য নতুন নেতা, এমারসন ম্যানানগাগওয়া দীর্ঘদিন রবার্ট মুগাবের ক্ষমতার মধ্যেই ছিলেন। বছরের পর বছর ধরে তিনি সাবেক প্রেসিডেন্টের সব কাজে সহযোগিতা করে গেছেন। শুধুমাত্র যখন উত্তরসূরি নির্বাচনের প্রশ্নে গ্রেস মুগাবের নাম সামনে এলো, তখনি তিনি ভিন্ন পথে হাটতে শুরু করলেন। তার মানে এটা পরিষ্কার যে, জিম্বাবুয়ের ঘটনা আসলে কোন বিপ্লব নয়, যে উদারপন্থী গণতন্ত্রপন্থীরা ক্ষমতায় চলে এলেন। নতুন নেতাদের উপর ব্যাপক কোন পরিবর্তনের চাপও নেই। দেশটির দুর্নীতির কারণে বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও হয়তো ততটা আকর্ষণ বোধ করবে না। তবে এটা ঠিক যে সাবেক প্রেসিডেন্টের মতো তিনি একচ্ছত্র ক্ষমতাও চালাতে পারবেন না। বিশেষ করে জানু-পিএফ পার্টির উপরেও তার পুরো নিয়ন্ত্রণ নেই। যে দল একজন নেতাকে পাল্টাতে পারে, তারা সহজেই অন্য নেতাকেও বেছে নিতে পারবে।
সবচেয়ে বড় ব্যাপার, মানুষের মানসিকতার একটি পরিবর্তন ঘটেছে। গত চল্লিশ বছর ধরে তারা ভয়ের একটি পরিবেশে থেকেছেন। এই প্রথমবারের মতো তারা সেই পরিবেশে থেকে মুক্তি পেলেন।বিভক্ত বিরোধী দলগুলোও এবার একাট্টা হতে পেরেছে। হয়তো এই পরিবেশেই নতুন নেতার জন্ম হতে পারে। সামনের বছর দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে, যে নির্বাচনের প্রতি আগ্রহ রয়েছে সব দলের। সাধারণ দেশটির নির্বাচনে অনেক শোরগোল হয়। এবার দেখা যাক, নতুন নেতা মি. ম্যানানগাগওয়া তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আরো উদার জিম্বাবুয়েকে তুলে আনতে পারেন কিনা। উল্লাসের চিত্র দেখা গেছে রাজধানী হারারের অলিগলিতেও।অনেকে চিৎকার করে, নেচে গেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: