.jpg)
নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা | ২১ অক্টোবর ২০২৫
“শরীর নয়, মস্তিষ্কই মানুষের আসল শক্তি”— এই উক্তিটি যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাশে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচিতে। তারা দাবি করছেন, বিশেষ বিসিএস পরীক্ষায় প্রতিবন্ধী কোটার পূর্ণ বাস্তবায়ন এবং ১ শতাংশ সংরক্ষিত আসনের কার্যকর প্রয়োগ।
এই শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেছেন, বিশ্বের ইতিহাসে মহান বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট প্রমাণ করেছেন যে শারীরিক সীমাবদ্ধতা কোনো বাধা নয়।
হকিং হুইলচেয়ারে বসেই মহাবিশ্বের রহস্য উন্মোচন করেছেন; আর রুজভেল্ট হুইলচেয়ারেই বসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে মহামন্দা ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াল সময় থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
তাদের মতে, বাংলাদেশেও প্রতিবন্ধীরা মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে বি.সি.এস ক্যাডার হওয়ার অধিকার রাখে। সমাজের কিছু অংশ এখনও নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করলেও, বাস্তবতা ভিন্ন— তারা যোগ্য, তারা সক্ষম।
অবস্থান কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভিপি সাদেক কাইয়ুম প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,
“প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়, বরং তারা রাষ্ট্রের সম্পদ। বিশেষ বি.সি.এস পরীক্ষায় তাদের কোটার বাস্তবায়ন সরকারের মানবিক অঙ্গীকারকে আরও শক্তিশালী করবে।”
এসময় উপস্থিত সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীরা প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানান, যদিও কিছু মহলের নেতিবাচক মন্তব্যে হতাশা প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের এক নেতা বলেন,
“আমরা ভিক্ষা চাই না, সুযোগ চাই। স্টিফেন হকিং ও রুজভেল্টের মতো আমরাও আমাদের মেধা দিয়ে দেশ গড়তে চাই।”
“করতে হলে টেকসই উন্নয়ন, প্রতিবন্ধীদের ক্ষমতায়ন প্রয়োজন।”
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হাসান আলী উল্লেখ করেন,
“ডাকসুর ভিপি আমাদের জানিয়েছিলেন যে আমাদের দাবি নিয়ে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টার সাথে কথা হবে। আজকের দিনেও রেজাল্ট জানানো হয়নি। ভিসি স্যারের জানা আছে কিনা জানতে চাইলে জানা থাকা উচিত বললেন। আমাদের বলা হয়, হয়তো প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে আমরা সমাজসেবা থেকে পিছিয়ে আছি। তবে মনে রাখতে হবে, আমরা দেশের সম্পদ, বোঝা নয়। যদি আমাদের বোঝা মনে করা হয়, তাহলে রাষ্ট্র কতটা লাভবান হবে তা বিবেচনা করতে হবে। এটা আমাদের ন্যায অধিকার।”
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: