বরিশাল প্রতিনিধি, অধিকারপত্র ডটকম:
বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় মীরগঞ্জ সেতুর নির্মাণকাজ পাওয়া ঠিকাদারের কাছে 'স্থানীয়রা চাঁদা দাবি করেছে'—গণমাধ্যমে এমন বক্তব্য দেওয়ায় আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ তীব্র তোপের মুখে পড়েছেন।
আজ রোববার দুপুরে মীরগঞ্জ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় এবি পার্টি ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে।
ঘটনার সূত্রপাত
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সড়ক ও সেতু উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করার পর এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় তিনি নৌপরিবহন উপদেষ্টার বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, "মীরগঞ্জ সেতুর ঠিকাদারদের কাছে স্থানীয়রা চাঁদা দাবি করেছে।"
তাঁর এই বক্তব্য উপস্থিত স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে তাঁরা আসাদুজ্জামানের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন এবং "ভুয়া ভুয়া" বলে স্লোগান দিতে শুরু করেন।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে আসাদুজ্জামান তাঁর নেতা-কর্মীদের নিয়ে দ্রুত অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিএনপি ও ছাত্রদলের প্রতিবাদ
আসাদুজ্জামানের মন্তব্যের প্রতিবাদে স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীরা তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন। বাবুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান আল আমিন বলেন, আসাদুজ্জামান ফুয়াদের মন্তব্যে নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে বিক্ষোভ করেছেন। তাঁর এই বক্তব্যের জন্য ক্ষমা না চাইলে বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলায় তাঁকে 'অবাঞ্ছিত' ঘোষণা করা হবে।
বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ খান প্রথম আলোকে বলেন, "এখনো সেতুর কাজ শুরুই হয়নি, এমনকি ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তিও হয়নি। এমন সময় কীভাবে, কার কাছে চাঁদা দাবি করল? এ ধরনের অবান্তর বক্তব্য দিয়ে তিনি আমাদের ইমেজ ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা করেছেন।"

আসাদুজ্জামান ফুয়াদের পাল্টা অভিযোগ
তোপের মুখে পড়লেও আসাদুজ্জামান ফুয়াদ তাঁর অভিযোগে অনড় থাকেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, "এলাকাবাসী ইতিমধ্যে রাজনৈতিক ছদ্মাবরণে সেতুর নির্মাণকাজে সংশ্লিষ্টদের কাছে চাঁদা দাবি করেছে।" তিনি অভিযোগ করেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে "কে এখানে বালু দেবে, কে পাথর দেবে—এসব বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে" এবং কাজ না দিলে কাজ করতে না দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, দুদক, প্রশাসন ও স্থানীয় জনগণের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্বিঘ্নে কাজ সম্পন্ন করতে পারে। এবি পার্টির বরিশাল মহানগরের সদস্যসচিব জি এম রাব্বি এই ঘটনাকে "বিএনপি নেতা-কর্মীদের পরিকল্পিত" বলে দাবি করেন।
বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম জানান, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে আসাদুজ্জামান ফুয়াদ ও স্থানীয়দের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়েছিল এবং বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: