ঢাকা | Saturday, 18th October 2025, ১৮th October ২০২৫
বাংলাদেশে চাকরির ক্ষেত্রে কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকার শাহবাগে বেশ বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে। সিভিল সার্ভিস বিসিএস সহ সকল সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থায় নিয়োগের প্রচলিত ব্যবস্থার সংস্কার দাবি করে রোববার শাহবাগে অবস্থান নেয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষ

বাংলাদেশে চাকরির ক্ষেত্রে কোটা সংস্কারের দাবিতে অবস্থান নিয়েছে আন্দোলনকারীরা

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ৮ April ২০১৮ ২০:১৮

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ৮ April ২০১৮ ২০:১৮

বাংলাদেশে চাকরির ক্ষেত্রে কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকার শাহবাগে বেশ বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে। সিভিল সার্ভিস বিসিএস সহ সকল সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থায় নিয়োগের প্রচলিত ব্যবস্থার সংস্কার দাবি করে রোববার শাহবাগে অবস্থান নেয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষার্থী।

তাদেরই একজন বেসরকারি স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্র খান মোহাম্মদ শরীফ।

তিনি বলছিলেন, অনেকদিন ধরেই আমরা জনমত তৈরির চেষ্টা করছিলাম। এর আগে পাঁচবার আন্দোলন করে রাস্তায় নেমেছি। এখন সারা বাংলাদেশে দাবি আদায়ে কমিটি হয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যতক্ষণ পর্যন্ত এ আন্দোলন সফল না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আন্দোলনে থাকবো।"

বাংলাদেশে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ বিভিন্ন ধরনের কোটা চালু আছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, সে সমস্ত কোটাকে কমিয়ে আনার দাবিতে চলমান আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় তারা শাহবাগে মিছিল ও সমাবেশ করছেন।

শাহবাগে অবস্থান নেয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে আরেকজন মৌসুমি মৌ জানান, তারা কোটা-বিরোধী নন। " আমাদের দাবি কোটা বাতিল নয়, কোটার সংস্কার।"

আন্দোলনকারী সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ-এর যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ উজ্জ্বল বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, তাদের মূল দাবি কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার।

তিনি বলছেন, এ নিয়ে সাতবার তারা রাস্তায় নেমেছেন। কারণ বর্তমানে প্রচলিত নানা রকমের কোটার ফাঁদে পড়ে মেধা নিয়েও অনেক শিক্ষার্থী সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ভালো ক্যাডার পাচ্ছে না।

তিনি বলেন, "চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা মেধাবীদের সাথে রাষ্ট্রের বঞ্চনা। তাই পাঁচ দফা দাবি নিয়ে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।"

আরও পড়ুন: চাকরিতে কোটা নিয়ে এত ক্ষোভের কারণ কী?

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শনিবার সন্ধ্যায় শাহবাগ এলাকা থেকে জানান, কোনও একটি ঘোষণা না আসা পর্যন্ত অবস্থান করবেন তারা। সেইসাথে সোমবার তারা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলেও জানাচ্ছেন।

যদিও কোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে গত মার্চ মাসের শুরুতে সরকারি সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছিল যে, সরকারি চাকরিতে সরাসরি নিয়োগে কোটার কোনও পদ যোগ্য প্রার্থীর অভাবে পূরণ করা না গেলে, সেসব পদ মেধাতালিকা থেকে পূরণ করা হবে । জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সে বিষয়ে একটি আদেশও জারি করে।

কিন্তু এখন শিক্ষার্থীরা বলছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুসারে তারা দেখেছেন, শেষপর্যন্ত কোটা থেকেই কোটা পূরণ করা হবে।

মোঃ: উজ্জ্বল যেমনটা বলেন, "এক ধরনের কোটা থেকে পূরণ না হলে আরেক কোটা থেকে, তা না হলে আরেক কোটা থেকে এভাবে নেয়া হবে। সর্বশেষ ধাপে গিয়ে মেধাবীদের কথা বলা হয়েছে"

তবে একদিকে কোটা পদ্ধতি নিয়ে আন্দোলন-বিক্ষোভ জোরালো হচ্ছে ঠিকই কিন্তু কোটা পদ্ধতির পুরোপুরি সংস্কারের পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছে জনপ্রশাসন কর্তৃপক্ষ।

কোটা সংস্কারের দাবিগুলো কী?

'বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র সংরক্ষণ পরিষদ' এর ব্যানারে যে পাঁচটি বিষয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চলছে সেগুলো হল -

•কোটা-ব্যবস্থা ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা (আন্দোলনকারীরা বলছেন ৫৬% কোটার মধ্যে ৩০ শতাংশই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ। সেটিকে ১০% এ নামিয়ে আনতে হবে)

•কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধাতালিকা থেকে শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া

•সরকারি চাকরিতে সবার জন্য অভিন্ন বয়স-সীমা- ( মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে চাকরীর বয়স-সীমা ৩২ কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য ৩০। সেখানে অভিন্ন বয়স-সীমার দাবি আন্দোলনরতদের।)

•কোটায় কোনও ধরনের বিশেষ পরীক্ষা নেয়া, যাবে না ( কিছু ক্ষেত্রে সাধারণ শিক্ষার্থীরা চাকরি আবেদনই করতে পারেন না কেবল কোটায় অন্তর্ভুক্তরা পারে)

•চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় একাধিকবার কোটার সুবিধা ব্যবহার করা যাবে না।

বাংলাদেশে প্রচলিত কোটা ব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা শুধু শিক্ষার্থী বা চাকরি-প্রার্থীদের মাঝেই রয়েছে তেমনটি নয়, বিশেষজ্ঞদেরও মতামত রয়েছে কোটা সংস্কারের পক্ষে।

আরও পড়তে পারেন:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: