-2019-01-29-18-53-19.jpg)
স্টাফ রিপোর্টার
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়া আওয়ামী লীগের জন্মের স্মৃতিবিজড়িত পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেন সরকার বহুমূল্যে কিনে নিলেও পূর্ত বিভাগ এখনো কাগজপত্র বুঝিয়ে না দেওয়ায় বাড়িটিকে জাদুঘরে রূপান্তরের কাজ ঝুলে আছে।
মঙ্গলবার সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবুর উপস্থিতিতে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলতাফ হোসেন।
সদ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া কে এম খালিদ সকালে আকস্মিক পরিদর্শনে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে যান।
গতবছর সেপ্টেম্বরে ঢাকার ঋষিকেশ দাস রোডে ২২ বিঘার জমির উপর প্রতিষ্ঠিত রোজ গার্ডেন বাড়িটি কিনতে ৩৩১ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয় করে সরকার।
রোজ গার্ডেনের মালিক লায়লা রকীব ও তার সন্তানদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন দলিল মূলে সেটি কিনে নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাড়িটি কেনার রেজিস্ট্রেশন দলিল গ্রহণ করেন।
পরে সিদ্ধান্ত হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ঢাকা জাদুঘরটি এ বাড়িতে স্থানান্তর করা হবে।
মঙ্গলবারের সভায় প্রত্নতত্ত্বের মহাপরিচালক আলতাফ হোসেন বলেন, “বাড়িটি কিনে নেওয়ার পর পূর্ত বিভাগ আমাদের কাছে এখনও বাড়ির কাগজপত্র হস্তান্তর করেনি। আমরা জাদুঘর নির্মাণের কাজ শুরু করতে পারিনি।
“পূর্ত দপ্তর বলছে তারাই সেখানে জাদুঘর নির্মাণ করবে। কিন্তু তাদের তো কখনও জাদুঘর নির্মাণের অভিজ্ঞতাই নেই।”
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান।
১৯৩১ সালে ঋষিকেশ দাস নামের এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী পুরান ঢাকায় ২২ বিঘা জমির উপর যে বাগানবাড়ি তৈরি করেন তারই নাম রোজ গার্ডেন।
বাড়িটিতে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে যে দল গঠিত হয়, সেটিই পরে আওয়ামী লীগ নাম নেয়।
ন্যাশনাল আর্কাইভসে স্থাপনা নির্মাণে আইনি জটিলতা
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে পর ন্যাশনাল আর্কাইভসে যান সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী।
সেখানে এক সভায় আর্কাইভসের মহাপরিচালক দিলীপ কুমার সাহা জানান, একটি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আইনি জটিলতায় থমকে গেছে ন্যাশনাল আর্কাইভসের ১৪ তলা ভবনের নির্মাণকাজ।
‘প্রকল্প উপদেষ্টা’ নামের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান এই ভবনের নকশা প্রণয়ন, নির্মাণ প্রকল্পের দেখভাল করার দায়িত্বে থাকলেও তৃতীয় দফার কাজে অনিয়ম করেছে বলে অভিযোগ করেন দিলীপ।
পরে ন্যাশনাল আর্কাইভস প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আর চুক্তি নবায়ন করতে না চাইলে তারা হাই কোর্টে মামলা ঠুকে দেয়। হাই কোর্ট নির্মাণকাজে স্থগিতাদেশ দেয়।
দিলীপ কুমার সাহা সভায় বলেন, “স্থগিতাদেশের কারণে ভবন নির্মাণ প্রকল্প থমকে আছে। মূল্যবান দলিল দস্তাবেজ স্থানান্তর করা যাচ্ছে না। প্রকল্প উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠানটির গাফিলতির কারণে ভবনে বিভিন্ন স্থানে উইপোকা বাসা বাঁধতে শুরু করেছে। পেস্ট কন্ট্রোলের কাজে তারা অনিয়ম করেছে।”
দলিল-দস্তাবেজ সংরক্ষণে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের থোক বরাদ্দ থেকে অর্থ নেওয়ার নির্দেশনা দেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী।
দিলীপ কুমার সাহা জানান, ন্যাশনাল আর্কাইভসের কার্যপ্রণালী ডিজিটাইজেশনের আওতায় আনতে একটি প্রকল্প তারা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। আইসিটি বিভাগের সহযোগিতায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: