odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Thursday, 13th November 2025, ১৩th November ২০২৫
এক যুগ পর

রাত পোহালেই বেনাপোল পৌর সভা নির্বাচন 

আহসানুল ইসলাম আমিন | প্রকাশিত: ১৭ July ২০২৩ ০২:২৬

আহসানুল ইসলাম আমিন
প্রকাশিত: ১৭ July ২০২৩ ০২:২৬

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আগামীকাল সোমবার (১৭ জুলাই) এক যুগ পর যশোরের বেনাপোল পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কোনও প্রার্থী নেই। ফলে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নাসির উদ্দীন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মফিজুর রহমানের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এরই মধ্যে ভোটের একদিন আগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ফারুক হোসেন। শার্শা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহ্বায়ক ফারুক আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েও পাননি। পরে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়েছেন। গত শনিবার রাতে শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে তিনি নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এ সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাসির উদ্দীন তার সঙ্গে ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে ফারুক হোসেন বলেন, ‘নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হতে মনোনয়ন চেয়েছিলাম আমি। না পেয়ে ভোটারদের দাবির মুখে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলাম। দলের প্রতি আমি অনুগত। তাই দলীয় নির্দেশ মেনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিচ্ছি।’

জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ চলবে। দুই জন মেয়রপ্রার্থী ছাড়াও ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৪৭ জন ও সংরক্ষিত আসনে ১৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইতোমধ্যে নির্বাচণি প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। এর আগে ২৬ জুন প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচার-প্রচারণায় সরগরম হয়ে ওঠে পৌর এলাকা। 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নির্বাচন ঘিরে প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করেছেন। প্রচার-প্রচারণায় গিয়ে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নির্বাচনি ইশতেহারে সে কথাগুলো ব্যক্ত করেছেন প্রার্থীরা। সব কিছু শেষে এখন চলছে ভোটের চিন্তা-ভাবনা। 

এদিকে, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ফোর্স, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে ভ্রাম্যমাণ টিম, ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও নির্বাচন কমিশনারের পর্যবেক্ষক টিম থাকবে। 

ভোটাররা জানিয়েছেন, এখন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন দুই মেয়র প্রার্থী। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের নাসির উদ্দীন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোবাইল ফোন প্রতীকের মফিজুর রহমান। তাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

যশোর জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আনিচুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনি পরিবেশ সুষ্ঠু ও সুন্দর করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ৯টি বিদ্যালয়ের ১২টি কেন্দ্রে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ১১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সব সময় উপস্থিত থাকবেন। বিপুল সংখ্যক পুলিশ-আনসারের সঙ্গে তিন প্লাটুন র‍্যাব দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা থাকবে।’

এর আগে ২০০৬ সালে বেনাপোল ইউনিয়নের ১১টি গ্রামের অংশ নিয়ে বেনাপোল পৌরসভা গঠনের পর ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সেখানে আর কোনও নির্বাচন হয়নি। সে নির্বাচনে বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি ওই পরিষদের মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও আর নির্বাচন হয়নি। প্রথম শ্রেণির এই পৌরসভার নির্বাচন মামলার কারণে বন্ধ ছিল। এই পৌরসভা নির্বাচনে ৩০ হাজার ৩৮৫ জন ভোটার আছেন। 

আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী নাসির উদ্দীন বলেন, ‘আইনি জটিলতায় দীর্ঘদিন বেনাপোল পৌরবাসী ভোটাধিকার বঞ্চিত ছিল। তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে দলের হয়ে কাজ করেছি। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাকে প্রার্থী করেছেন। দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে মাঠে নেমেছি। আশা করছি, পৌরবাসী ভোট দিয়ে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করবেন। নির্বাচিত হলে পৌরসভাকে একটি সেবাকেন্দ্রে পরিণত করবো।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী মফিজুর রহমান বলেন, ‘পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ঘুরেছি। প্রচুর সমর্থন পেয়েছি। আশা করছি, মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হবো। বেনাপোল পৌরসভার সার্বিক উন্নয়ন ঘটাতে পারলে বেনাপোলবাসীর জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি করা সম্ভব। বেনাপোলবাসীর সেবা করার সুযোগ পেলে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে পৌরসভার উন্নয়নে কাজ করবো।’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: