গাজার সুড়ঙ্গে অবরুদ্ধ হামাস যোদ্ধাদের ভাগ্য নির্ধারণে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র-মিসরের রুদ্ধদ্বার আলোচনা)
৬ নভেম্বর ২০২৫, জেরুজালেম/গাজা থেকে (নিউ ইয়র্ক টাইমস সূত্রের খবর):
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে দীর্ঘদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যেই গাজায় দেখা দিয়েছে এক চরম উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি। ইসরায়েলি-নিয়ন্ত্রিত গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা সংলগ্ন 'ইয়েলো লাইন' এলাকায় সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্কে প্রায় ১০০ থেকে ২০০ হামাস যোদ্ধা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। তাদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েল এক কঠোর শর্ত দেওয়ায় ভঙ্গুর এই শান্তিচুক্তি মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মিশর এবং কাতার এই সঙ্কটের সমাধানে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে। তারা অবরুদ্ধ যোদ্ধাদের নিরাপদে হামাস-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ফিরে যাওয়ার সুযোগ দিতে ইসরায়েলের উপর চাপ সৃষ্টি করছে।
সঙ্কট কোথায়?
অবরুদ্ধ এই যোদ্ধারা গাজার সেই অংশে আটকে পড়েছেন, যা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (IDF) নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ইসরায়েলের সামরিক প্রধান হুমকি দিয়েছেন, যদি হামাস একজন ইসরায়েলি বন্দীর মরদেহ ফেরত না দেয়, তবে সুড়ঙ্গে আটকে থাকা সকল যোদ্ধাকে হত্যা করা হবে। চরম ডানপন্থী ইসরায়েলি মন্ত্রীরা যেকোনো ধরনের মুক্তি বা বিনিময়ের ধারণার ঘোর বিরোধী।
অন্যদিকে, হামাসের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হচ্ছে, আটকে পড়া যোদ্ধাদের নিরাপদে তাদের এলাকায় ফিরিয়ে দিতে হবে।
মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাব
পরিস্থিতি শান্ত রাখতে মধ্যস্থতাকারীরা একটি সমাধান প্রস্তাব দিয়েছেন:
১. অস্ত্র সমর্পণ: অবরুদ্ধ হামাস যোদ্ধারা তাদের অস্ত্র মিশরীয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেবেন।
২. সুড়ঙ্গের তথ্য প্রদান: তারা যে সুড়ঙ্গগুলিতে লুকিয়ে আছেন, সেইগুলির অবস্থান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেবেন, যাতে সেগুলি ধ্বংস করা যায়।
৩. নিরাপদ বহির্গমন: এর বিনিময়ে তাদের গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নিরাপদ প্রস্থানের সুযোগ দেওয়া হবে।
জানা গেছে, অবরুদ্ধ কিছু যোদ্ধা গত মার্চ মাস থেকে তাদের কমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় তারা যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার খবরও হয়তো জানেন না। তাই তাদের দ্রুত বের করে আনা না গেলে তারা ভুলবশত ইসরায়েলি বাহিনীর উপর আক্রমণ চালিয়ে গোটা শান্তি প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে—এমন আশঙ্কা রয়েছে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলির।
এই মুহূর্তে ইসরায়েল ও হামাস কেউই প্রকাশ্যে মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। তবে আন্তর্জাতিক মহলের নজর এখন রাফার সুড়ঙ্গে আটকে পড়া এই যোদ্ধাদের ভাগ্যের দিকেই, যার উপর এই অঞ্চলের ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: