নিউজ ডেস্ক | অধিকারপত্র
ভারতের তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ে সোমবার অনুষ্ঠিত ১৭তম স্থান নির্ধারণী ম্যাচে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে ৫–৪ ব্যবধানে অস্ট্রিয়াকে হারায় সিগফ্রিড আইকম্যানের শিষ্যরা। এটি ছিল তাদের টানা তৃতীয় জয়। দুর্দান্ত নৈপুণ্যেই জুনিয়র হকি বিশ্বকাপে চ্যালেঞ্জার্স কাপ জিতল বাংলাদেশ দল। গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে পড়া আট দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই পর্বকে এ বছর প্রথমবারের মতো “চ্যালেঞ্জার্স ট্রফি”নাম দিয়েছে এফআইএইচ। আর এ টুর্নামেন্টের প্রথম আসরের শিরোপাই নিজেদের করে নিলো বাংলাদেশ। দলে অসাধারণ ছন্দে থাকা তরুণ ফরোয়ার্ড আমিরুল ইসলাম আবারও করলেন হ্যাটট্রিক। ছয় ম্যাচে এটি তার পঞ্চম হ্যাটট্রিক যা এবারের আসরে তাকে নিয়ে গেছে এক অনন্য উচ্চতায়। ম্যাচের শুরু থেকেই লাল-সবুজের দাপুটে খেলাটা খেলে। ম্যাচের প্রথম দুই কোয়ার্টারেই বাংলাদেশ একটি করে গোল করে সুবিধাজনক অবস্থানে যায়। ১৫ মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে দলকে এগিয়ে দেন আমিরুল। ২৭ মিনিটে একইভাবে ব্যবধান বাড়ান হুজাইফা হোসেন। ৩৫ মিনিটে অস্ট্রিয়ার রক্ষণভাগের ভুল কাজে লাগিয়ে ফিল্ড গোলে রাকিবুল হাসান স্কোরলাইন করেন ৩–০। তৃতীয় কোয়ার্টারে অস্ট্রিয়া এক গোল শোধ করলেও বাংলাদেশ ছিল নিয়ন্ত্রণে। শেষ কোয়ার্টারে ছিল রোমাঞ্চের ঝড়। চতুর্থ কোয়ার্টার রীতিমতো নাটকীয়তায় ভরপুর। ৫০ মিনিটে আমিরুল পেনাল্টি স্ট্রোক থেকে করেন তার দ্বিতীয় গোল। ৫২ মিনিটে আরেকটি স্ট্রোক থেকে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তিনি। মাঝে অস্ট্রিয়ার বেঞ্জামিন কেলনার করেন একটি ফিল্ড গোল। শেষদিকে ৫–২ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা অস্ট্রিয়া ম্যাচে উত্তাপ বাড়ায়। ৫৭ মিনিটে জুলিয়ান কাইজার ও ৫৯ মিনিটে মাতেউস নিচকোভিয়াক দুটি গোল করে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ দৃঢ়তায় লিড ধরে রাখে এবং জয় নিশ্চিত করে।
পুরো টুর্নামেন্টে ১৮ গোল করে গোলদাতার তালিকায় সবার ওপরে রয়েছেন আমিরুল। ছয় ম্যাচের প্রতিটিতে গোল রয়েছে তার নামের পাশে। এর আগে তিনি হ্যাটট্রিক করেন: দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে (২ বার), অস্ট্রেলিয়া, ওমান ও আজেকে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক ছিল তার পঞ্চম। ইতিহাসে প্রথমবার জুনিয়র হকি বিশ্বকাপে অংশ নিয়েই বাংলাদেশ ছয় ম্যাচে ৩ জয়, ১ ড্র ও ২ হার বলা যায় খুবই সম্মানজনক পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। সামগ্রিকভাবে দারুণ লড়াই, ধারাবাহিক উন্নতি এবং তরুণদের আত্মবিশ্বাস সব মিলিয়ে এটি বাংলাদেশের হকির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই বিজয় শুধু একটি ম্যাচ বা একটি ট্রফি জয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি বাংলাদেশের হকির জন্য এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। জুনিয়রদের এই অসাধারণ সাফল্য জাতীয় হকির ভবিষ্যৎকে আরও উজ্জ্বল করে তুলবে। নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে। এ অর্জনের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে দেশের হকি আরও সামনে এগিয়ে যাবে আরও পরিণত, আরও আত্মবিশ্বাসী, আরও প্রতিযোগিতামুখী হয়ে। অভিনন্দন বাংলাদেশ জুনিয়র হকি টিম।
--মো: সাইদুর রহমান (বাবু), বিশেষ প্রতিনিধি. অধিকারপত্র

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: