ঢাকা | শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষার্থীদের সমাবর্তনের আশায় রেখে গেলেন অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার

সোহেল রানা, চবি প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০২৪ ১৬:২১

সোহেল রানা, চবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০২৪ ১৬:২১

সোহেল রানা, চবি : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) প্রতিষ্ঠার ৫৮ বছরে মাত্র ৪বার সমাবর্তন হয়েছে।চবির সমাবর্তন যেন আকাশের চাঁদ। ১৯৭৩ এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী পরিচালিত দেশের চারটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৫৮ বছরে ইতিহাসে সমাবর্তন হয়েছে মাত্র ৪টি। দায়িত্ব গ্রহণের ৪ বছরে কোন সমাবর্তন আয়োজন করতে পারেননি সদ্য সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ২৮ বছর পর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলামের দায়িত্বকালীন ১৯৯৪ সালে প্রথম সমাবর্তন হয়। এরপর ১৯৯৯ সালে দ্বিতীয়, ২০০৮ সালে তৃতীয় এবং সর্বশেষ ২০১৬ সালে ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় চতুর্থ সমাবর্তন। এই সমাবর্তনটি আয়োজন করেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখারউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। পঞ্চম সমাবর্তনের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো চবির সদ্য সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডক্টর শিরীন আখতার সমাবর্তনের ঘোষণা দেন ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায়। একই বছর ১৬ই নভেম্বর চবির ৫৬তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ২য় বারের মতো ঘোষণা দেন। এরপর ২০২২ সালের ২৩ জুলাই ৩৪তম সিনেট সভার দ্বিতীয় অধিবেশনে ৩য় বারের মতো আবারো পঞ্চম সমাবর্তন আয়োজনের ঘোষণা দেন। সেই বছরই ১৭ই নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ৫৭ দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চতুর্থবারের মতো পঞ্চম সমাবর্তন আয়োজনের ঘোষণা দেন। সর্বশেষ তিনি গত বছরে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল উদ্বোধনের সময় ৬ষ্ঠ বারের মতো সমাবর্তনের ঘোষণা দেন চবির সদ্য সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।

পরিসংখ্যান বলছে, ৭৩-এর অধ্যাদেশে পরিচালিত অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে প্রায় দুই বছরে ১ বার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে প্রায় ৬ বছরে ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ১০ বছরে একবার সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এ হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে সাড়ে ১৪ বছরে একবার সমাবর্তন হচ্ছে।

চবিতে সর্বশেষ এবং সর্ববৃহৎ সমাবর্তন হয়েছিল ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি প্রায় আট বছর আগে। এতে ২০০৪ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর এবং ২০০৮ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পিএইচডি -এমফিলসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা অংশ নেয়। মোট ৭ হাজার ১৯৪ জন গ্রাজুয়েট। ৮ বছর ধরে পঞ্চম সমাবর্তনের অপেক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউট থেকে তাদের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি শেষ করেছে। প্রতিবছর সমাবর্তনের জন্য বাজেট থাকার পরেও সমাবর্তন আয়োজনের ব্যর্থতায় হতাশা প্রকাশ করেছেন বেশিরভাগ শিক্ষার্থী।

সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফুল নবীন বলেন, সদ্য বিদায়ী ভিসির মেয়াদকালীন সময়ে চবি'র ভাবমূর্তি বরাবর ক্ষুন্ন হয়েছে। নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য উনি নানা সময় নানান পন্থা অবলম্বন করেছেন। ভিসি হিসেবে উনি কতটা ব্যর্থ তার প্রমান পাওয়া যায় সমাবর্তনের দিকে লক্ষ করলে। ওনি গত ৪ বছরে ১ টাও সমাবর্তন করতে পারেনি। দফায় দফায় সমাবর্তের তারিখ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের আবেগ, অনুভূতি, স্বপ্ন নিয়ে খেলেছেন। ওনার বিদায়ের সাথে সাথে চবি'র এক কলিযুগের অবসান হলো।

শিক্ষা ও গবেষণা অনুষদের শিক্ষার্থী মোঃ রায়হান বলেন,স্বায়ত্তশাসিত একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অন্যতম একটি চাওয়া থাকে সমাবর্তন কে ঘিরে। ভিসি থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্মানের গাউন গায়ে জড়ানো প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর স্বপ্ন। কিন্তু আমাদের সাবেক ভিসি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন দিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: