odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২ আশ্বিন ১৪৩২
নেপালে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী সুসিলা কার্কি

‘নেপো কিড’ আন্দোলনে টালমাটাল রাজনীতি

odhikarpatra | প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:৪৬

odhikarpatra
প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:৪৬

রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক অস্থিরতার পর নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুসিলা কার্কি। শুক্রবার সন্ধ্যায় এক সংক্ষিপ্ত শপথ অনুষ্ঠানে ৭৩ বছর বয়সী কার্কি অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার পর দেশব্যাপী সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এই বিক্ষোভে ৫০ জনেরও বেশি নিহত হন এবং রাজধানী কাঠমান্ডুতে পার্লামেন্ট ও সরকারি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয় ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা। ক্রমবর্ধমান জনরোষের মুখে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন। রাষ্ট্রপতি রাম চন্দ্র পাওডেল ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে একাধিক বৈঠকের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে সমঝোতা হয়। আইন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়েই এই সমঝোতা চূড়ান্ত হয়। নতুন সরকার আগামী ছয় মাসের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সুসিলা কার্কি তার সততার ভাবমূর্তির জন্য পরিচিত। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম ও ছাত্রনেতারা তাকে সমর্থন দিচ্ছেন। শপথ গ্রহণের আগে মঙ্গলবার তিনি কাঠমান্ডুর সেই বিক্ষোভস্থল পরিদর্শন করেন যেখানে আগের দিন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ১৯ জন নিহত হয়েছিলেন। পরে তিনি হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। আইন পেশা থেকে উঠে আসা কার্কি ২০১৬ সালে নেপালের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নেন। প্রায় ১১ মাসের মেয়াদে তাকে একটি অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হয়েছিল, যদিও শেষ পর্যন্ত তিনি পদে বহাল থাকেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত কেবল ক্ষোভকে উস্কে দিয়েছিল। এর আগে থেকেই “নেপো কিড” আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনীতিকদের সন্তানদের বিলাসবহুল জীবনযাপন ও দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তীব্র সমালোচনা চলছিল। ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ছিল এই জনরোষের বিস্ফোরণ ঘটানোর শেষ প্ররোচনা। বর্তমানে রাজধানী কাঠমান্ডুসহ প্রধান শহরগুলোতে সেনা টহল জোরদার করা হয়েছে। দেশটির সাম্প্রতিক ইতিহাসে এটি সবচেয়ে ভয়াবহ রাজনৈতিক অস্থিরতা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।

নেপালের সাম্প্রতিক অস্থিরতা একদিকে যেমন রাজনৈতিক অভিজাতদের প্রতি গভীর ক্ষোভকে সামনে এনেছে, অন্যদিকে তেমনি প্রথমবারের মতো দেশটি নারী নেতৃত্বের স্বাদ পেল। এখন নজর থাকবে—কার্কির নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার কতটা সফলভাবে দেশকে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পারে এবং নির্ধারিত সময়ে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে সক্ষম হয়।

- বিশেষ প্রতিনিধি (Special National Correspondent) মোঃ সাইদুর রহমান (বাবু )



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: