নিউজ ডেস্ক:
বিশ্বের প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের মানচিত্রে ২০২৫ সালে শীর্ষে রয়েছে পাঁচটি মেট্রোপলিটন ক্লাস্টার। এআই, স্বচালিত গাড়ি এবং সবুজ শক্তির উদ্ভাবন এখন সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে দৃশ্যমান। বিশ্ব বুদ্ধি সম্পদ সংস্থা বা World Intellectual Property Organization (WIPO) প্রকাশিত গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স (GII) ২০২৫ অনুসারে বিশ্বের ১০০টি শীর্ষ শহর ও ক্লাস্টারের মধ্যে প্রায় ৭০% পেটেন্ট ও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কার্যক্রম সংঘটিত হয়।
১. শেনজেন-হংকং-গুয়াংঝো
চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় এই প্রযুক্তি কেন্দ্র শীর্ষে রয়েছে। শহরটিতে QR কোড পেমেন্ট থেকে মাল্টি অ্যাপ ডেলিভারি ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তি মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে মিশে আছে। হংকংয়ের Octopus কার্ড এখন ভেন্ডিং মেশিন থেকে পার্কিং মিটার পর্যন্ত ব্যবহৃত হচ্ছে। শেনজেনের ড্রোন শো এবং PMQ এর সৃজনশীল স্টুডিও ও কর্মশালা দর্শনার্থীদের জন্য অন্যতম আকর্ষণ।
২. টোকিও-ইয়োকোহামা
এই জাপানি ক্লাস্টার বিশ্বের সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক পেটেন্ট ফাইলিং উৎপন্ন করে। প্রযুক্তি এখানে চমকপ্রদ নয় বরং ব্যবহারিক এবং মানুষের দৈনন্দিন কাজে সহায়ক। হেন না হোটেল স্বয়ংক্রিয় চেক-ইন ও রোবোটিক কর্মচারীর জন্য পরিচিত। ইউরিকামোমে লাইন এর ড্রাইভারলেস ট্রেন ভ্রমণকারীদের আকর্ষণ করে।
৩. সান হোসে-সান ফ্রান্সিসকো
সিলিকন ভ্যালি ভেঞ্চার ক্যাপিটালে বিশ্বনেতা। নতুন স্টার্টআপ এবং উদ্যোক্তাদের জন্য এখানে নেটওয়ার্কিং এবং প্রাথমিক প্রযুক্তি পরীক্ষা করার সুযোগ অফুরন্ত। Waymo স্বচালিত গাড়ি এবং অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যবহারকারীরা সরাসরি অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারেন।
৪. বেইজিং
চীনের রাজধানী বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বিশ্বের শীর্ষে। তবে বেইজিংয়ের শক্তি মূলত প্রযুক্তি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সংমিশ্রণে। আলিপে এবং উইচ্যাটের সুপার অ্যাপস থেকে AI চালিত রোবোট্যাক্সি পর্যন্ত সবই দৈনন্দিন জীবনের অংশ।
৫. সিওল
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী বিশ্বব্যাপী ৫.৪% পেটেন্ট অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করে। নগরবাসীর জীবনযাত্রায় প্রযুক্তি গভীরভাবে প্রবেশ করেছে ডিজিটাল কড দিয়ে দরজা খোলা, ক্যাশলেস পেমেন্ট, স্বচালিত ইলেকট্রিক বাস। চেওংগিয়েচিয়ন স্ট্রিম এবং শহরের ২৪/৭ কেশারলেস স্টোরগুলো ভ্রমণকারীদের জন্য আধুনিক কোরিয়ার অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
বিশ্বের সবচেয়ে বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন শহরগুলোতে যাতায়াত, বাঁচা ও খাওয়া-দাওয়ার প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে সহজ এবং আরও সৃজনশীল করে তুলছে। সর্বোপরি ২০২৫ সালের বিশ্বের সবচেয়ে উদ্ভাবনী শহরগুলো প্রমাণ করেছে যে প্রযুক্তি কেবল বিলাসিতা নয় বরং আধুনিক জীবনের অপরিহার্য অংশ। শেনজেন থেকে সিওল প্রতিটি শহরই দেখাচ্ছে কিভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, স্মার্ট অবকাঠামো এবং ক্যাশলেস সিস্টেম মানুষের জীবনকে সহজ নিরাপদ ও সংযুক্ত করে তুলছে। এই উদ্ভাবন শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নয় বরং ভবিষ্যতের টেকসই, স্মার্ট ও মানবকেন্দ্রিক নগরজীবনের দিকনির্দেশনা দিচ্ছে।
-মো: সাইদুর রহমান (বাবু), বিশেষ প্রতিনিধি. অধিকারপত্র

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: