ঢাকা, ২১ নভেম্বর ২০২৫ | রিপোর্ট: নিজস্ব প্রতিবেদক, ওঅধিকারপত্র ডটকম**
সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৫-এর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সশস্ত্র বাহিনীকে সর্বোচ্চ দক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের প্রতি অনুগত থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি মুক্তিযুদ্ধ, জাতিসংঘ মিশন, আধুনিকায়ন এবং জাতীয় সংকটে বাহিনীর ভূমিকা তুলে ধরেন।
--
সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে শুক্রবার রাজধানীর সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে দেশের *“গণতান্ত্রিক উত্তরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়”* হিসেবে উল্লেখ করেন। এ প্রেক্ষিতে তিনি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতি দক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
মুক্তিযুদ্ধ ও অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ, যুদ্ধাহত বীর এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
এছাড়া ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের শহীদ, আহত ও অংশগ্রহণকারী জনগণের প্রতিও মর্যাদা জানান।
তিনি বলেন,
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর জন্ম ১৯৭১ সালের রণক্ষেত্রে। ২১ নভেম্বরের যৌথ অভিযান মুক্তিযুদ্ধের এক ঐতিহাসিক মাইলফলক।”*
*স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরা*
অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, ২৫ মার্চের কালরাত্রিই সশস্ত্র প্রতিরোধের সূচনা। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ফোর্সেস গঠনের মাধ্যমে ১১টি সেক্টরে মুক্তিযোদ্ধাদের সামরিক ও গেরিলা প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়—যা ২১ নভেম্বরের সেনা–নৌ–বিমান বাহিনীর যৌথ অভিযানে চূড়ান্ত রূপ নেয়।
তার ভাষায়—
“যদি বিজয় অর্জিত না হতো, আমাদের বীর সেনাদের মৃত্যুদণ্ড ছিল অনিবার্য। তাঁদের পরিবারও রক্ষা পেত না।”*
**জাতীয় সংকটে সশস্ত্র বাহিনীর আস্থা**
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় দুর্যোগ, স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং ২০২৪ সালের অভ্যুত্থান-পরবর্তী দেশ পুনর্গঠনে সশস্ত্র বাহিনী জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে বাহিনী গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক নেতৃত্বের প্রতি অনুগত থেকে পেশাদারিত্ব বজায় রাখবে।
**আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের গৌরব**
ইউনূস জানান, গত ৩৭ বছরে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা ৪৩টি দেশে ৬৩টি জাতিসংঘ মিশন সম্পন্ন করেছে; বর্তমানে ১০টি মিশনে দায়িত্ব পালন করছে।
তিনি বলেন—
“শান্তিরক্ষীদের সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ ও আধুনিক সরঞ্জাম নিশ্চিত করতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।”*
**আধুনিকায়ন ও বাহিনীর প্রস্তুতি**
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন,
“বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্মানজনক সহাবস্থানে আমরা বিশ্বাসী। তবে কোনো বহিঃশত্রুর আগ্রাসন প্রতিহত করতে আমাদের সেনা–নৌ–বিমান বাহিনীকে সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে।”*
তিনি আধুনিক প্রযুক্তি, উন্নত প্রশিক্ষণ এবং বিশ্বমানের সক্ষমতা অর্জনে বাহিনীর চলমান আধুনিকায়ন কর্মসূচির গুরুত্ব তুলে ধরেন।
-

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: