odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Thursday, 13th November 2025, ১৩th November ২০২৫

তানোরে শিশু শ্রমিক দিয়ে করানো হচ্ছে ইট তৈরীর কাজ

আহসানুল ইসলাম আমিন | প্রকাশিত: ১৫ March ২০২৩ ০০:৫০

আহসানুল ইসলাম আমিন
প্রকাশিত: ১৫ March ২০২৩ ০০:৫০

সারোয়ার হোসেন :

রাজশাহীর তানোরের মুন্ডুমালা পৌরসভার মাহালীপাড়ায় নীতিমালা ও ইট পোড়ানো আইন লঙ্ঘন এবং লোকালয় হুমকিতে ফেলে তিন ফসলী জমিতে মেসার্স ফাইভ স্টার নামের অবৈধ ইট ভাটা গড়ে তোলা হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, তানোর-আমনুরা আঞ্চলিক সড়ক ঘেঁষে গড়ে উঠা অবৈধ ইট ভাটায় প্রকাশ্যে দিবালোকে কয়লার পরিবর্তে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ ও শিশু শ্রমিক দিয়ে করানো হচ্ছে ইট তৈরীর কাজ। এছাড়াও ইট তৈরীর কাজে সেচ পাম্পের পানি ও ফসলী জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি (টপসয়েল) ব্যবহার করায় করায় জমির উর্বরা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে। তারা বলেন,ভাটার দূষণ সন্ত্রাসে কৃষির ওপর বিরুপ প্রভাব পড়েছে। আশপাশের জমিতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত এবং পরিবেশের ওপর বিরুপ প্রভাব পড়ছে। প্রতিনিয়ত ফসলের মাঠ  থেকে জমির উপরিভাগের উর্বরা মাটি (টপসয়েল) কেটে নেয়া হচ্ছে এতে করে ফসলী জমির উর্বরা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে। যার প্রভাব পড়েছে উৎপাদনমূখী ফসলের ওপর।

এলাকার কৃষক ও সচেতন মহল এই ইট ভাটার বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান অভিযানের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। স্থানীয়রা জানায়, ফাইভ স্টার ইট ভাটার কোনো লাইসেন্স নেই। নেই পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিএসটিআইয়ের ছাড়পত্র। 

তারা বলেন, প্রশাসনের একশ্রেণীর কর্মকর্তা ও ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় নেতার যোগসাজশে ইট ভাটা মালিক দীর্ঘদিন ধরে ইটের ব্যবসা করে চলেছে। অন্যদিকে সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে অধিক মুনাফা করতে নিজেদের ইচ্ছে মতো ইটের ওজন ও সাইজ তৈরীতে কারচুপি করছে। এছাড়াও এক নম্বর ইটের সঙ্গে দু'নম্বর ও দু'নম্বর ইটের সঙ্গে তিন নম্বর ইট মিশ করে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করেন বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। মাহালীপাড়া মহল্লার গুপল হাসদা ও ফুলমনি হেমরম বলেন, খরার সময় ভাটার আঁচে (তাপ) বাড়িতে থাকতে কষ্ট হয়, আমের মোল (মুকুল) ঝ্যরা যায়, ডাবের গাচে ডাব ধরে না, ধানের ফলন কম হয় না, হামরা খুব বিপদে আচি, হামরা ভাটা বন্দ (বন্ধ) চাই।

স্থানীয় এক কাউন্সিলর বলেন, ভাটাতে যে হারে ফসলি জমির মাটি নেয়া হচ্ছে,তাতে আগামিতে আর ফসল হবে না, আমরা ভাটা বন্ধ চাই। এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, বছরের পর বছর চাষাবাদ করায় ফসলের অবশিষ্ট অংশ পচে এবং সার প্রয়োগের কারণে জমির উপরিভাগে মুল উর্বরা শক্তি বাড়তে থাকে। কিন্ত জমির উপরিভাগের মাটি (টপসয়েল) কেটে নিয়ে যাওয়ার কারণে জমিতে বিদ্যমান উর্বরা শক্তি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে, যা ফিরে পেতে অনেক সময় লাগবে। তিনি বলেন, টপসয়েলের নিচের অংশে চাষাবাদ করলে প্রচুর পরিমানে রাসায়ানিক ও জৈবসার প্রয়োগ করলেও আবার উর্বরা করে পূর্বের অবস্থায় ফিরতে কম পক্ষে দশ থেকে বার বছর সময় প্রয়োজন। এব্যাপারে মেসার্স ফাইভ স্টার ইট ভাটার মালিক মনিরুল ইসলাম বাবলু এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সারাদেশে যেভাবে ইট ভাটা চলছে তারাও সেভাবে চালাচ্ছেন।

এব্যাপরে রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বলেন, এসব বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: