odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Thursday, 13th November 2025, ১৩th November ২০২৫

সিরাজদিখানে বিদ্যালয় মাঠে মেলা বসিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা বানিজ্য করছে ফ্রেন্ডস এসোসিয়েশন 

odhikar patra | প্রকাশিত: ২৭ April ২০২৩ ০৩:৪৭

odhikar patra
প্রকাশিত: ২৭ April ২০২৩ ০৩:৪৭

এইচ,আই লিংকন:

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় ঈদ পুনর্মিলনি, কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে  মালখানগর বিদ্যালয় মাঠে ৩দিন ব্যাপি মেলা বসিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা বাণিজ্য করার অভিযোগ উঠেছে ফ্রেন্ডস এসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের মালখানগর বিদ্যালয় মাঠে। একইসঙ্গে অভিযোগ রয়েছে, র‍্যাফেল ড্র’র নামে রমরমা লটারি বাণিজ্যের। উঠতি বয়সের ছেলেরা এবং সাধারণ মানুষ লোভে পড়ে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন লটারীর খপ্পরে। লটারির লোভনীয় পুরস্কারের ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে টাকা। আকর্ষনীয় পুরস্কার প্রদর্শন করা হয়েচগে মেলায়। ফলে লোভে পড়ে দর্শনার্থী একজন মেলায় প্রবেশ করলেও টিকিট কাটছেন একাধিক। লটারীসহ মেলার ভিতর মোটরসাইকেল পার্কিং, নাগরদোলা বাচ্চাদের বিভিন্ন রাইড, দোকানপাটসহ নানা আইটেম থাকলেও সরকারি কোষাগারে একটাকাও রাজস্ব জমা হচ্ছে না। তবে এসব টাকা সম্পূর্ণ চলে যাচ্ছে ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েশন অব মালখানগর সংগঠনের কাছে। 

২০০৯ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে কোনো ধরনের মেলা, সার্কাস বা বাণিজ্যিক বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের অনুমোদন দেওয়া যাবে না। তবে তা তোয়াক্কাই করছে না ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েশন অব মালখানগর। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদ পুনর্মিলনি, কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে মাঠ দখল করে এই মেলার আয়োজন করেছে ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েশন অব মালখানগর।  বিদ্যালয়ের মাঠে নানা ধরনের দোকান, নাগর দোলা ও বাচ্চাদের বিভিন্ন রাইড  নিয়ে বসানো হয়েছে মেলা। শুধু স্টল ভাড়া দিয়েই হাতিয়ে নিয়েছে ৫লক্ষ ৬০ হাজার টাকা।

এছাড়া রেফেলর ড্রো লটারির টিকিট বিক্রি করে জনসাধারণের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে আনুমানিক ৫ লক্ষ টাকা। মাঠে মেলা বসাতে ঈদের ছুটিতে খেলাধুলা করতে পারছে না বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ শিশুকিশোররা। বিদ্যালয়ের মাঠের চারপাশে দোকানপাট বসিয়ে  সম্পূর্ণ মাঠ দখল করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা। একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, খেলার মাঠ দখল হওয়ার কারণে নিয়মিত খেলাধুলা করতে পারছে না তারা। এছাড়া মেলায় উচ্চ শব্দের গান বাজনার কারণে বাড়িতে পড়ালেখায়ও ক্ষতি হচ্ছে তাদের। 

এ বিষয়ে ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েশন অর মালখাননগরের সভাপতি আসরাফুজ্জামান  সোহেলর  বলেন, আমি বৈধভাবে যতটুকু করার ততটুকু অনুষ্ঠানই করেছি। আর বাণিজ্যিকভাবে যেটা বললেন এখানে দোকানপাঠ ওরা নিজেরাই বসিয়েছিল। ওরা কারেন্ট বিল ও ডেকোরেশনের খরচ দিয়েছিল। এখানে আমার সাথে কোন লেনদেন নাই। রেফেল ড্র বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন রেফেলর টাকাটা সারা বছর মানুষের যে উন্নয়নমূলক কাজ করি সেই কাজে ব্যবহার করা হয়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঞ্জুরুল আলম বলেন, আমাদের কাছে একটি আবেদন করেছিল মাঠে ঈদ পুনর্মিলনি ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য মাঠে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তারা বাণিজ্যিকভাবে মেলা করার জন্য কোন অনুমতি নেয়নি। যেহেতু তারা বাণিজ্যিকভাবে মেলা করেছে বিষয়টা আমি ঊর্ধ্বতন  কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিব।

সিরাজদিখান উপজেলা মাধ্যমিক  শিক্ষা অফিসার মিজানুর রহমান ভূইয়া বলেন, বিদ্যালয় মাঠ ব্যবহার করে মেলা করার বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানতে পাড়লাম। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) কামরুল ইসলাম খাঁন বলেন, এই বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত ছিলাম না। স্থানীয়ভাবে উপজেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি ছিলো কিনা, শিক্ষা অফিসার জানে কিনা এই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে। সরকারী পরিপত্রের বাইরে সেখানে কিছু হয়ে থাকলে জবাব চাওয়া হবে। কারণ একটা মেলা এভাবে স্থাপন করার কোন সুযোগ নেই। তিনি আরো বলেন, মেলা করতে গেলে অনুমোদনের বিষয় আছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: