গুজবের অন্ধকার, ধর্মের আড়ালে লোভের আগাছা এবং সামাজিক বিভ্রান্তিকে সামনে এনে এই কবিতা-নাট্যধর্মী সম্পাদকীয় সত্য, ন্যায় ও আলোকিত চেতনার আহ্বান জানায়। কোরআনের নির্দেশ, সাহিত্যবোধ ও আধুনিক বাস্তবতার মিলনে ব্যক্তি ও সমাজের আত্মশুদ্ধির পথ তুলে ধরা হয়েছে। আজকের এই ক্রম-উত্তেজিত দুনিয়ায়, যেখানে সত্যের চেয়ে দ্রুত ছড়ায় গুজবের ছায়া, যেখানে অন্ধবিশ্বাসের জোয়ারে ভেসে যায় মানবিক বোধ—সেখানে প্রয়োজন এক নতুন প্রশ্ন, নতুন চোখ, নতুন আলো। প্রযুক্তির পর্দা আমাদের হাতের মুঠোয়, কিন্তু সত্যের পর্দা দিন দিন আরও ঘন হয়ে আসে। সমাজের এই সংকটের সময়েই উঠে আসে এক পুরনো সাহিত্যিক সতর্কবাণী—যা আজও যেন ততটাই প্রাসঙ্গিক, যেমন ছিল প্রকাশের দিনে।
প্রারম্ভিক বক্তব্য
এই সম্পাদকীয়টিকে সাধারণ রচনা বলিলে ভুল হইবে; ইহা এক অভিনয়শালা— যেখানে চরিত্রেরূপে অবতীর্ণ হইয়াছে গুজব, সত্য, ধর্মবোধ, লোভ, এবং মানুষ। গুজবের অন্ধকার, লোভের জাল ও ধর্মের অপব্যবহার রোধে কোরআনের বাণী, সাহিত্যিক সতর্কতা এবং মানুষের নৈতিক জাগরণের ডাক নিয়ে এই কবিতা-নাট্যধর্মী সম্পাদকীয়টি রচিত হয়েছে সমাজকে সত্যের পথ দেখানোর উদ্দেশ্যে।
মঞ্চের সম্মুখভাগে দাঁড়াইয়া “সতর্কতার আলো” সমাজকে আহ্বান করিতেছে; তার বিপরীতে গুজবের কালো ছায়া নৃত্য করিতেছে, আর পশ্চাতে “ধর্মের আগাছা” লুকাইয়া মানবমনের উর্বর ক্ষেত দখল করিবার প্রয়াস চালাইতেছে। সাহিত্য, ধর্মগ্রন্থ ও অভিজ্ঞতার আলোকে এই নাট্যমঞ্চে সকলেই প্রত্যক্ষ করিবেন— কিভাবে এক ক্ষুদ্র মিথ্যাও সমাজের শান্তি গ্রাস করিতে পারে। পবিত্র আল কোরআনের সতর্কবাণী, চিরায়াত বাংলার সাহিত্যদৃষ্টি, এবং আজকের ডিজিটাল বাস্তবতা—সব মিলেই এই সম্পাদকীয় রচিত হয়েছে সমাজকে জাগানোর উদ্দেশ্যে।
ভূমিকা
বতর্মান পৃথিবীর দ্রুতগামী স্রোতে কখন যে সত্যের দীপশিখা ম্লান হইয়া পড়ে, আর কখন যে গুজবের অন্ধকার সমাজকে আচ্ছন্ন করিয়া ফেলে—তা বোঝা ভার। প্রযুক্তির যুগে তথ্য যেন আলোর ন্যায় ছুটে চলে, কিন্তু সেই আলোর অন্তরালে অনেক সময়ই লুকায় অশুভ ছায়া। মানবসমাজ বিভ্রান্তির দ্বন্দ্বে যখন টলমল, তখনই প্রয়োজন সত্য-পরীক্ষণের সাহস, প্রজ্ঞা ও নৈতিক বোধের শুদ্ধ অন্বেষণ।
মঞ্চ নির্দেশ
অন্ধকার মঞ্চ। কটা বাতাস বয়ে যায়। দূরে কোথাও মৃদু বাঁশির মতো শোনা যায়— “ধর্মের কল বাতাসে নড়ে…” স্পটলাইট জ্বলে। মঞ্চে প্রবেশ করে—মানুষ।
দৃশ্য এক: গুজবের অন্ধকার আগমন
রাত্রির নীরবতা ভঙ্গ করিয়া বায়ুতে ভাসিয়া আসে এক অদৃশ্য শব্দ—“শুনি, শুনি, অমুক বলিয়াছে, তমুক ঘটিয়াছে!” মানুষ ছুটে আসে, তীব্র কৌতূহলের অণু তাদের চিত্তে তোলপাড় করে; যাচাই করিবার আর সময় থাকে না— কারণ গুজবের পাখা অনেক দ্রুত। পবিত্র আল-কোরআনে আল্লাহ বলেন: “হে বিশ্বাসীগণ, যদি কোনো অশুভ ব্যক্তি সংবাদ আনিয়া থাকে, তবে তোমরা পরীক্ষা করিয়া দেখিও।” (সূরা হুজুরাত, আয়াত ৬) ।
এই বাণী যেন আকাশে ভাসিয়া মানবসমাজকে সতর্ক করিয়া দেয়—সন্দেশের সত্যতা যাচাই না করিলে অশান্তি অনিবার্য।
দৃশ্য ২ : মানুষের একাকী স্বগতোক্তি
মানুষ: ডিজিটালের এই সময়— যেন ঝড়ো নদী, মুহূর্তে ভাসায় খবর, মুহূর্তেই ডুবায় কু-খ্যাতি। আমার মেয়ের চোখে দেখি— এই যুগে সত্য-মিথ্যার শাসন বড় অস্পষ্ট, আজকের আলো যেমন দীপ্ত, তেমনি ছায়ার গর্জনও হিংস্র।
ডিজিটালের যুগে আজ, খবর যেন বিদ্যুৎ-রথ— এক নিশ্বাসে ছুটে আসে, এক মুহূর্তে ছুটে যায় পথ। আমরা চেয়ে থাকি— এই দ্রুত স্রোতে শিশুরা বড় হয় নতুন দুনিয়ায়; সত্য-মিথ্যার ফাঁদে পড়ে অন্যের কথায় মন টলায়। পাশে বসে আমার স্ত্রী বলে— “মেয়ের পৃথিবী আমাদের মতো নয় তো আর; আলো যেমন বেড়েছে, অন্ধকারও তো তেমনি পাহাড়।” কিন্তু আমি জানি— যে বাতাস সব শুনে, সে বাতাসই একদিন ধরা দেয়— ধর্মের কল নড়ে যায় সত্যের দিকে। তাইতো কবিয়াল গেয়ে চলেন,
ডিজিটাল যুগের নৈতিকতা—সত্যের বাতাস চলুক।
এখন বাতাস বড় সতর্ক—এক ক্লিকেই গুজবের আগুন,
এক মুহূর্তেই সত্যের বন্যা।
তাই ধর্মের কল যখন নড়ে—নড়ে মানুষের বিবেকও;
মুখোশ তখন খুলে পড়ে—যেন ঝড়ে উড়ে যায় সব কু-রেখা।
দৃশ্য তিন: ধর্মের নামে আগাছার বিস্তার
মঞ্চের অপর প্রান্তে দেখা যায়—কিছু মানুষ ধর্মের নাম উচ্চারণ করে, কিন্তু উদ্দেশ্য হয় স্বার্থ, লোভ ও বিভক্তি। সেই সময় স্মরণে আসে সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহের বিখ্যাত উক্তি, যা সমগ্র বাংলা সাহিত্যকে শিহরিত করিয়াছিল—“শস্যের চেয়ে টুপি বেশি, ধর্মের আগাছা বেশি।”
লালসালু প্রকাশিত হইয়াছিল ১৯৪৮ সালে। অতঃপর ৭৬টি দীর্ঘ বর্ষ অতিক্রান্ত হইলেও, মানুষের মনোজগতে সেই সতর্কবার্তার প্রতিধ্বনি যেন আরও জোরাল হইয়াছে। যেখানে ধর্মের মোড়কে লোভের আগাছা জন্মে, সেখানে মানুষের সুস্থ বিবেক ম্লান হয়, এবং সমাজ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হইয়া পড়ে।
দৃশ্য চার: ধর্মের কণ্ঠ—সবার ওপরে সত্য
মঞ্চে প্রবেশ করে “ধর্মের ছায়ামূর্তি”। তার কণ্ঠ ধ্বনিত হয় স্বচ্ছ ও দীপ্তিতে ভরা।
ধর্ম: হে মানুষ, আমি কোনো দলের নই, কোনো গোষ্ঠীর নই— আমি শিখাই সত্যের পথ, মিথ্যার আগুনে নিভে যাই। শোনো— আল-কুরআন বলে, “যাচাই না করে কোনো সংবাদ ছড়িও না।” অপরদিকে হিন্দু শাস্ত্র বলে— “সত্যমেব জয়তে।” আবার বৌদ্ধের বাণীতে প্রতিধ্বনিত হয়— সম্যক বাক্যই শান্তির মূল।এমনকি খ্রিষ্টধর্মও বলে—“প্রতিবেশীকে ভালোবাসো।” তবু কেন— মানুষ হয় প্রতারক, গুজবে প্রলয় ডাকে, ধর্মের আগাছাকে ফুল ভেবে সততার শস্য হারায়?
দৃশ্য পাঁচ: “ধর্মব্যবসায়ী” প্রবেশ করে
অন্ধকারে এক চরিত্র উঠে আসে—ধর্মব্যবসায়ী, মুখোশ পরা, চোখে ক্ষমতার লোভ।
ধর্মব্যবসায়ী (অহংকারে):আমি ধর্মের নামে চাই— সম্পদ, প্রভাব, ভক্তদের মিছিল! ওয়াজে কোটি টাকার বাজেট, আর বিলাসের গাড়ি— আমি তো ঈশ্বরের মুখপাত্র, আমাকে মানতেই হবে সবাই!
ধর্ম (কঠোর): তুই ধর্ম নস— তুই ধর্মের আগাছা। তোর মতো লোকেরা মানুষকে ভুল পথে ডাকে। ধর্মের পবিত্র বাগানে যখন এ রূপ অধর্মের 'আগাছা' অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিস্তার লাভ করে, তখন সেখানে নেমে আসে পাপ, নাফরমানি ও অপবিত্রতার অন্ধকার। এর পরিণতিতে, শেষ বিচারে অবধারিত হয় divine কঠোর আজাবের নির্মম অবতারণা। যুগে যুগে নবী পয়গম্বরদের দেওয়া বাণীতেই যেন মানুষের জর্য ধর্মের অপব্যবহার সম্পর্কে এক গভীর সতর্কবার্তার প্রতিধ্বনি হরেও, শয়তানের প্ররোচনায় পথভ্রষ্ট ক্ষমতার মোহে অন্ধ এই যুগের মানুষের মনোজগতে ধর্মকে বর্ম করার প্রয়াস যেনো আরও জোরাল হইয়াছে। যেখানে ধর্মের মোড়কে লোভের আগাছা জন্মে, সেখানে মানুষের সুস্থ বিবেক ম্লান হয়, এবং সমাজ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হইয়া পড়ে।
আরো পড়ুন: একটি কাব্যিক সম্পাদকীয়: শান্তির খোঁজে মানুষের অনন্ত যাত্রা: আলো-অন্ধকারের গল্প
দৃশ্য ছয়: সত্যের আবির্ভাব
মঞ্চের অন্তরালে অপেক্ষমাণ “সত্য” ধীরে ধীরে আলোতে উঠে আসে। তার কণ্ঠ মধুর, কিন্তু দৃঢ়—
সত্য: “যে কর্মে শান্তি নেই, সে কর্ম ধর্ম নহে; যে কথায় সত্য নেই, সে কথা সমাজের কল্যাণ আনে না।” মানুষের দল তখন ধীরে ধীরে বুঝিতে থাকে— গুজবের শব্দ যত জোরালই হোক, সত্যের দীপ্তিই শেষ পর্যন্ত অন্ধকারকে ছিন্ন করিবার শক্তি রাখে।
দৃশ্য সাত: জনগণের জাগরণ দৃশ্য
দলবদ্ধভাবে মঞ্চে প্রবেশ করে “নতুন প্রজন্ম” ভূমিকায় তরুণরা।
তরুণরা: আমরা চোখ মেলেছি, ভয় আমাদের আর বাঁধে না। গুজব থামাই, মুখোশ ছিঁড়ে ফেলি, সত্যকে সামনে আনি।
একজন মোবাইল তুলে বলে— “ঈশ্বর কি বিলাসিতা চান?”
মঞ্চে আলো বদলায়— বাতাস যেন জেগে ওঠে। ...“ধর্মের কল” নড়ে ওঠে শব্দে…
দৃশ্য আট : মানবতার কণ্ঠ নজরুল ও দত্ত—মঞ্চে দুই আলোর মানবতার কণ্ঠ
হঠাৎ আলো ফেটে যায়। মঞ্চের দুই পাশে দাঁড়ান— বিদ্রোহী কবি ও ছন্দের ছাদুঘর (নজরুল ও সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত-এর প্রতীকী চরিত্র)।
✦ নজরুলের কণ্ঠ
“গাহি সাম্যের গান—
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই।”তিনি হাত তুলে বলেন—
ধর্ম নয়, মানুষ—
ক্ষুধার্ত মানুষের অন্ন থামে না
ঈশ্বরের করুণায়।
✦ সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের কণ্ঠ:
“জগৎ জুড়িয়া এক জাতি থাকে, সে জাতির নাম মানুষ জাতি।”
তিনি বলেন— রঙে, বর্ণে ভেদ নয়; ভিতরে সকলেরই সমান রঙ, সমান মর্যাদা।
দৃশ্য নয়: মানবাধিকারের আলোর কণ্ঠ—সমতার আলোকবিন্দু
মঞ্চে প্রবেশ করে মানবাধিকার চরিত্র। তার হাতে জ্বলছে একটি প্রদীপ।
মানবাধিকার: মানুষ জন্মেই সম্মানশীল— এ সত্য লিখা আছে সব ধর্মের শ্লোকে, সব মানবতার বইয়ে। গুজব ভেঙে দেয় সম্মান— অতএব সচেতন হও; সত্য যাচাই কর, ন্যায় প্রতিষ্ঠা কর। তাই গুজব ছড়ানো মানবাধিকারের বিরুদ্ধে অপরাধ।
শেষ দৃশ্য : বায়ু, কল আর সত্যের জাগরণ
সব চরিত্র মঞ্চে। বাতাস আবার বয়। ধীরে ধীরে শোনা যায়— “ধর্মের কল বাতাসে নড়ে…”
মানুষ: হয়তো সত্য একটু দেরিতে আসে— কিন্তু আসে নিশ্চিত, যেমন বাতাসে লুকিয়ে থাকা কলের শব্দ। আজ আমরা দাঁড়াই— মানবতা হাতে, সত্য হৃদয়ে, ধর্মের আলো নিয়ে— যেখানে মানুষই ধর্মের শিখা, মানুষই শান্তির পথপ্রদীপ, মানুষই ঈশ্বরের সেতু। নিভে যায় আলো। রেখে যায় শুধু এক কৃতঘানতার স্মৃতি টিহ্ন।
সামগ্রিক মানবাধিকার ও ধর্মীয় নীতিতে মানুষের মর্যাদা রক্ষার গুরুত্ব
মানবাধিকারের মূলভিত্তি হলো—মানুষ মানুষের জন্য, এবং সকল মানুষ জন্মগতভাবেই মর্যাদা ও অধিকারসম্পন্ন। বিভিন্ন ধর্মেও মানুষকে “মর্যাদাবান সৃষ্টি” হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। কুরআনে আল্লাহ ঘোষণা করেছেন: “আমি আদম সন্তানকে মর্যাদাবান করেছি।” (সুরা ইসরা ১৭:৭০)। অপরদিকে খ্রিষ্টধর্মে বলা হয়—মানুষ ঈশ্বরের প্রতিচ্ছবি। অন্যদিকে হিন্দুধর্মে—“অত্মা ব্রহ্ম”—সবাই একই সত্যের অংশ, এবং বৌদ্ধধর্মে বলা হয়—“সকল প্রাণী সমান।” —এই মানবিক দর্শনগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয়—মানুষের বিরুদ্ধে অপমান, গুজব, বিদ্বেষ ছড়ানো শুধু আইনবিরোধী নয়, এটি মানবতারও বিরোধী। সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন মানুষের মর্যাদা রক্ষা, সহমর্মিতা ও দায়িত্বশীলতা।
—আর এই ডিজিটাল যুগে দায়িত্বশীলতা হচ্ছে সবার জন্য এক নৈতিক কর্তব্য। তথ্যের গতি এখন অস্ত্রের চেয়েও দ্রুত। তাই গুজব রোধে প্রয়োজন— তথ্য যাচাই; দায়িত্বশীল আচরণ; ধর্মীয় ও মানবিক মূল্যবোধের চর্চা। ভেদাভেদ নয়, একতা ও সহমর্মিতা এবং সর্বোপরি—মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখা, কারণ মানুষই সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি, এবং—ৎসত্য, মানবতা ও ন্যায়—এই তিনেই সমাজের প্রকৃত শান্তি। গুজববিরোধী বার্তা, মানবাধিকার, ধর্মীয় নির্দেশনা, “লালসালু”–র উদ্ধৃতি, নজরুল ও সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের কবিতা–—সবকিছু রেখে, সম্পূর্ণ ছন্দবদ্ধ ও কাব্যময় ভাষায় রূপান্তর করা হলো। আসলেই এই ডিজিটাল যুগে আমাদের প্রতিনিয়তই মানুষ হওয়ার নতুন পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হচ্ছে। খবর এখন তীরের মতো উড়ে যায়, গুজব আগুনের শিখা। তাই সত্যজ্ঞান, মানবতার মন্ত্র— সবাইকে আজই শেখা। ধর্ম শেখায়, সাহিত্য বলে— মানুষই সবার আগে, সত্য, ন্যায়, সহমর্মিতা—এই তিনেই সমাজের ভাগে, শান্তির সোনালি আলো জ্বলে, মানুষ মানুষকে ভালোবাসে, ঘুচে যায় বিভেদের কালে— এক মানবতার দুনিয়া হাসে।
চূড়ান্ত প্রতিফলন (সমাপন)
শেষ দৃশ্যে আলো যখন মাটি ছুঁয়ে যায়, সত্য তখন মঞ্চের কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে বলে— “তোমরা আলো বেছে নাও, কারণ অন্ধকারকে তো আলোকিত হতে শেখাতে হয় না; সে নিজে থেকেই ছড়িয়ে পড়ে।” আমাদের সমাজও সেই মঞ্চেই দাঁড়িয়ে— ভুল তথ্যের আঘাতে দুলছে, ষড়যন্ত্রের কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে, আর ধর্মের নামে আগাছারা চাইছে মানুষের মন দখল করতে। তবে গুজব, বিভাজন ও ধর্মের অপব্যবহার যতই জোরাল হোক, আলোর পথ সর্বদা খোলা। সত্য, ন্যায় ও মানবতার চেতনাই পারে সমাজকে উদ্ধার করতে। এই সম্পাদকীয় তাই এক আহ্বান— সত্যকে ধারণ কর, বিবেককে জাগ্রত কর, আলোর পথে অটল থাকি। তাইতো এই সম্পাদকীয় তাই শুধু লেখা নয়— এটি এক আহ্বান: নিজেকে জানো, সত্য যাচাই করো, আলোর পথে চলো। কেননা সত্যের পাশে দাঁড়াতে সক্ষম মানুষেরাই গড়তে পারে এক শান্ত, সচেতন, মানবিক ভবিষ্যৎ।
✍️ –অধ্যাপক ড. মাহবুব লিটু, উপদেষ্টা্ সম্পাদক, অধিকারপত্র (odhikarpatranews@gmail.com)
# কবিতা–নাট্যধর্মী-সম্পাদকীয়: #সত্যেরআলো #ধর্মেরকলবাতাসেনড়ে #গুজববিরোধী #কোরআনের_শিক্ষা #মানবতা #মানবাধিকার #ডিজিটালযুগ #ধর্মব্যবসা #নজরুল #লালসালু #বিবেকজাগরণ #BanglaFeature

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: