নিউজ ডেস্ক | অধিকারপত্র
মার্কিন নৌবাহিনীকে বিশ্বমঞ্চে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে এক উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো রিসোর্টে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি ট্রাম্প-ক্লাস (Trump-class) নামক এক নতুন প্রজন্মের যুদ্ধজাহাজের উন্মোচন করেন। প্রেসিডেন্ট দাবি করেছেন, এই জাহাজগুলো হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নির্মিত সর্ববৃহৎ এবং শক্তিশালী যুদ্ধজাহাজ।
গোল্ডেন ফ্লিট ও আধুনিক রণতরী:
এই নতুন উদ্যোগটিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গোল্ডেন ফ্লিট (Golden Fleet) বা সোনালী নৌবহর হিসেবে অভিহিত করেছেন। প্রাথমিকভাবে দুটি ট্রাম্প-ক্লাস জাহাজ নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলেও ভবিষ্যতে এর সংখ্যা ২৫টি পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এই যুদ্ধজাহাজগুলোর প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ:
বিশাল আকৃতি: এগুলো প্রায় ৩০,০০০ থেকে ৪০,০০০ টন ওজনের হবে, যা বর্তমানের আর্লে বার্ক-ক্লাস ডেসট্রয়ারের চেয়ে কয়েক গুণ বড়।
উন্নত অস্ত্রশস্ত্র: এতে হাইপারসনিক মিসাইল, ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেলগান এবং অত্যাধুনিক লেজার সিস্টেমের মতো প্রযুক্তি যুক্ত থাকবে।পারমাণবিক সক্ষমতা: এই জাহাজগুলো সমুদ্র থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য পারমাণবিক ক্রুজ মিসাইল বহনে সক্ষম হবে।
"আমি একজন খুব নান্দনিক ব্যক্তি"
জাহাজের নকশা প্রণয়নে নিজের ব্যক্তিগত ভূমিকার কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, মার্কিন নৌবাহিনী এই জাহাজগুলোর নকশা তৈরিতে আমার সাথে সরাসরি কাজ করবে। কারণ, আমি একজন খুব নান্দনিক (Aesthetic) ব্যক্তি। তিনি আরও যোগ করেন যে, তিনি কেবল শক্তিশালী জাহাজই চান না, বরং সেগুলো দেখতেও যেন চমৎকার হয়, সেদিকে তার কড়া নজর রয়েছে।
নামকরণে প্রথা ভাঙার বিতর্ক :
সাধারণত মার্কিন যুদ্ধজাহাজের নামকরণ করা হয় সাবেক প্রেসিডেন্ট বা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে। তবে ক্ষমতায় থাকাকালীন নিজের নামেই জাহাজের ক্লাসের নামকরণ করা একটি বিরল ঘটনা। প্রথম জাহাজটির নাম রাখা হয়েছে ইউএসএস ডিফায়্যান্ট (USS Defiant)। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং নৌ-সচিব জন ফেলান। নৌ-সচিব ফেলান এই জাহাজটিকে ‘আইওয়া-ক্লাস’ ব্যাটলশিপের উত্তরসূরি হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এটি মার্কিন নৌ-শক্তির নতুন ভিত্তিপ্রস্তর হয়ে থাকবে।
সমালোচনা ও চ্যালেঞ্জ:
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রজেক্টটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল হতে পারে। প্রতিটি জাহাজের নির্মাণ খরচ ১০ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া ড্রোনের যুগে এত বড় আকারের ব্যাটলশিপ কতটা কার্যকর হবে তা নিয়েও সামরিক বিশ্লেষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার বক্তব্যে দৃঢ়তার সাথে জানান এই উদ্যোগের মাধ্যমে তিনি আমেরিকাকে পুনরায় জাহাজ নির্মাণের প্রধান শক্তিতে রূপান্তর করতে চান এবং এর মাধ্যমে হাজার হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
--মো: সাইদুর রহমান (বাবু), বিশেষ প্রতিনিধি. অধিকারপত্র

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: