odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Friday, 7th November 2025, ৭th November ২০২৫

মেহেরপুরে ব্লাকবেঙ্গল ছাগলের হাট : ১শ’ কোটি টাকার বেচাকেনার আশা

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ১৬ August ২০১৮ ২১:০২

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ১৬ August ২০১৮ ২১:০২

 

 

ছাগলের গলার রশির অপর প্রান্তে শক্তহাতে ধরে থাকা এরা কেউ বেপারী। কেউবা পারিবারিকভাবে পালিত ছাগলের মালিক। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মেহেরপুর জেলা সদরের চুয়াডাঙ্গা সড়কের বারাদিতে জেলা পরিষদ নিয়ন্ত্রিত ছাগলের হাটের চিত্র এটি। হাটে মানুষের চেয়ে ছাগলের সংখ্যা বেশি। বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলায় এটিই সবচেয়ে বড় ছাগলের হাট। এখানে সপ্তাহের শনি ও বুধবার ছাগলের হাট বসে। দ্রুত প্রজননশীলতা, উন্নত মাংস, মাংসের ঘনত্ব ও উন্নতমানের চামড়ার জন্য ব্লাকবেঙ্গল ছাগল বিশ্ববিখ্যাত। দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা মেহেরপুরের বারাদিতে ছাগলের এ হাট থেকে ব্লাকবেঙ্গল ছাগল কিনে নিয়ে যায়। হাটে ব্যতিক্রম দেখা গেল অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে ভেড়া। কিন্তু গলায় কোন রশি নেই। একদল ভেড়ার মালিক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, বড় ভেড়াটিকে ধরে রাখলেই তাকে ঘিরে থাকে অন্য ভেড়ারা। তিনি হারিয়ে গেলেও ভেড়ারা রশির ভেড়াকে ঘিরে অবস্থান করবে। এটা ভেড়ার সহজাত ধর্ম।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যমতে মেহেরপুর জেলায় এবার পারিবারিকভাবে পালিত ও বিভিন্ন খামারে ৬০ হাজার ৪৯০ টি ছাগল কোরবানির জন্য প্রস্তুত। জেলায় ছোট বড় মিলে ৫৩০ জন খামারী বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ছাগল পালন করছে। মেহেরপুরের শতকরা ৪৫ ভাগ পরিবার ১টি করে ছাগল পালন করে নিজেদের দুঃসময়ে আপদকালীন অর্থনৈতিক সমস্যা চাহিদা মেটাতে ছাগল পালন করে। পারিবারিকভাবে পালিত ও খামারিরা কোরবানি উপযোগী ছাগল ইতোমধ্যে বাজারজাত শুরু হয়েছে। সরেজমিনে সম্প্রতি বারাদি ছাগলের হাটে গিয়ে দেখা যায় প্রায় চার হাজার ছাগল হাটে আনা হয়েছে।
আলমপুর গ্রামের ছাগলের বেপারী কমর উদ্দিন ৪০ কেজি করে দুটিতে দুইমণ মাংস হবে এমন খয়েরি রংয়ের দুটি ছাগল হাটে তুলেছেন। ছাগল দুটি ঢাকার এক বেপারীর কাছে ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। ঢাকার বেপারী এই জোড়া ছাগলের ক্রেতা রুহুল কুদ্দুস জানান, মাংসের হিসেব করে ছাগল দুটি কেনা হয়নি। কোরবানিতে এমন ছাগলের চাহিদার কারণেই তিনি কিনেছেন। ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকায় ছাগল দুটি চিটাগাং বাজারে বিক্রির আশা প্রকাশ করেন।
বারাদি ছাগলের হাটের ইজারাদার রফিকুল ইসলাম জানান, প্রতিহাটে এক দেড় হাজার ছাগল বিক্রি হয়। ঈদকে সামনে রেখে প্রতিহাটে আড়াই থেকে তিন হাজার ছাগল বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ছাগলের জন্য ২৫০ টাকা ইজারা নেয়া হয় ক্রেতার কাছে।
‘গরিবের গাভী’ খ্যাত মেহেরপুরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয়ের অন্যতম উৎস এ ব্লাকবেঙ্গল। মেহেরপুরের পাশের জেলা চুয়াডাঙ্গা এই ব্লাকবেঙ্গলকে জেলার ব্রান্ডিং করেছে।
জেলা প্রণি সম্পদ কর্মকর্তাডা. মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মেহেরপুরের ব্লাকবেঙ্গলের মাংস সুস্বাদু। এবার পারিবারিকভাবে ও ৫৩০টি খামারে ৬০ হাজার ৪৯০টি ছাগল কোরবানী উপযোগী আছে। যা এই ঈদেই বিক্রি হবে। গড়ে ১৬ হাজার টাকা করে হলেও একশ কোটি টাকার ছাগল বেচাকেনা হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: