odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Monday, 24th November 2025, ২৪th November ২০২৫
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট দীর্ঘায়িত—শিক্ষার্থীদের এক দাবি: ‘স্বচ্ছ নিয়োগ দ্রুত চাই’

কুবিতে শিক্ষক নিয়োগে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

odhikarpatra | প্রকাশিত: ২৪ November ২০২৫ ০৩:২৩

odhikarpatra
প্রকাশিত: ২৪ November ২০২৫ ০৩:২৩

কুবি প্রতিনিধি :

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, নিয়োগ-বাধা ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কুমিল্লা-০৬ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরীর ‘হস্তক্ষেপমূলক চিঠি’-কে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

রবিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এই মানববন্ধনে অংশ নেন। পরে তারা উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে দ্রুত স্বচ্ছ, ন্যায়সঙ্গত ও বাধাহীন উপায়ে শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্নের দাবি জানান।


মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

শিক্ষার্থীরা বলেন—
‘বহিরাগতদের মাতব্বরি চলবে না’, ‘শিক্ষক নিয়োগ জরুরি’, ‘সেশনজট আর নয়’, ‘এসো ভাই এসো বোন—গড়ি তুলি আন্দোলনে’—এমন নানা শ্লোগানে ক্যাম্পাস প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ফারুক নাহিয়ান বলেন—

“আগে ইলিয়াস–রেজা গ্রুপের ভুক্তভোগী হয়েছি। এখন আরেকটি গ্রুপ তৈরি হচ্ছে, যারা নানা প্রকার চাপ প্রয়োগ করছে। যোগ্যতার বাইরে নিয়োগ ঠেকাতেই আমাদের আন্দোলন। যে কেউ অনৈতিক পথে গেলে তাকে সরাতে আমাদের সময় লাগবে না।”

ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী সোহানুল ইসলাম বলেন—

“শিক্ষক সংকটে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে বহুদিন আন্দোলন করছি। ইউজিসিতে স্মারকলিপিও দিয়েছি। নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর আশা মিলেছিল। কিন্তু বিএনপি মনোনীত এক এমপি প্রার্থী শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত রাখতে চিঠি দিয়েছেন—এটা অত্যন্ত কষ্টদায়ক।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন—
“ডিপার্টমেন্টে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ ছাড়া সেশনজট কমানো সম্ভব নয়।”

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শোয়াইব হোসেন আল আমিন বলেন—

“৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে বৈষম্য বা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ চলবে না—এটাই ছিল প্রত্যাশা। কিন্তু একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। নিয়োগ নির্ধারণ করবে বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষার্থী ও রাষ্ট্র।”


উপাচার্যের মন্তব্য

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন—
“বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কেবল ক্লাস নেন না—গবেষণাও করেন। বিশ্বমান অনুযায়ী ১৪–১৬ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১ জন শিক্ষক প্রয়োজন। কিন্তু কুবিতে একজন শিক্ষককে প্রায় ৩৮–৩৯ জন শিক্ষার্থী সামলাতে হয়। এজন্য দ্রুত নিয়োগ জরুরি।”

তিনি আরও বলেন—
“স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে পরীক্ষার আগের রাতেও বোর্ড মেম্বারদের প্রশ্ন তৈরি করতে বলেছি। কোনো অনিয়ম করিনি। কিছু গোষ্ঠী নিয়োগ বন্ধে চক্রান্ত করছে। ডিসেম্বরের শুরু থেকে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যেই নিয়োগ সম্পন্ন করব—ইনশা আল্লাহ।


প্রেক্ষাপট

সম্প্রতি কুমিল্লা-৬ আসনের বিএনপি মনোনীত এমপি প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরী উপাচার্যের “আর্থিক দুর্নীতি ও প্রশাসনিক অনিয়ম” তদন্তের দাবি জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। সেই চিঠিকে কেন্দ্র করে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিতের সমালোচনা করছেন শিক্ষার্থীরা।


 অধিকার পত্র ডটকম

শাহরিয়ার হাসান জুবায়ের



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: