odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Friday, 7th November 2025, ৭th November ২০২৫
ঘূর্ণিঝড় মোখার আতঙ্কে

সেন্টমার্টিনের মসজিদে কান্নার রোল

আহসানুল ইসলাম আমিন | প্রকাশিত: ১৪ May ২০২৩ ১৫:১৯

আহসানুল ইসলাম আমিন
প্রকাশিত: ১৪ May ২০২৩ ১৫:১৯

অধিকার পত্র ডেস্ক:

সময় যত যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে ততই উত্তাল হচ্ছে সাগর, তীব্রতা বাড়ছে বাতাসেরও। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে সেন্টমার্টিনের মসজিদে মসজিদে নামাজ শেষে মোনাজাতে বিলাপ করেছেন বহু মানুষ। সবার একটাই চাওয়া, যেন তাদের জন্মভূমি সেন্টমার্টিন টিকে থাকে। 

তারা বলছেন, সেন্টমার্টিন আর আগের মতো নেই। দুর্যোগ মোকাবিলায় দ্বীপটি এখন অক্ষম। নিরাপদ আশ্রয়ের অভাব আছে। প্রায় ১১ হাজার মানুষের জন্য সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র আছে মাত্র দুটি! তাও আবার দ্বীপের উত্তরাংশে। যেখানে সর্বোচ্চ ৪০০-৫০০ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। দ্বীপের দক্ষিণাংশে কোনো আশ্রয়কেন্দ্র তো দূরের কথা, দু’তলা কোনো ভবন পর্যন্ত নেই।

সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা ও চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তায়ুব উল্লাহ সামাজিক মাধ্যমে আক্ষেপ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘দ্বীপের দক্ষিণাংশে আগে একটা গভীর বন ছিল। পাথরে ঘেরা, জঙ্গলের মাঝে উঁচু বালিয়াড়ি ছিল, এখন সেসব নেই। সুতরাং, এখন মানুষের নিজ ও পরিবারের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিজেদের করা প্রয়োজন।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখার সম্ভাব্য গতিপথ সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও আশপাশের এলাকা। কিন্তু দ্বীপে পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র নেই। নেই টেকসই বেড়িবাঁধ। প্রাকৃতিক রক্ষাকবচ পাথরের বাঁধ নড়বড়ে হয়েছে ১৯৯১ ও ১৯৯৪ সালের ঘূর্ণিঝড়ে। আর ভাঙনে বিলিন হয়ে গেছে বালিয়াড়ি ও কেয়া বন। অবিবেচকের মতো কাটা হয়েছে গাছ। অনিয়ন্ত্রিত তৈরি হয়েছে স্থাপনা। সবমিলিয়ে সেন্টমার্টিন এখন আতঙ্কের জনপদ! দোয়া আর প্রার্থনা ছাড়া এখন আর কারও করার কিছু নেই!’

তায়ুব উল্লাহ লিখেছেন, ‘দ্বীপের মানুষের মনে ভয় ঢুকেছে সিত্রাং-এর সময় থেকে। সামান্য ঘূর্ণিঝড়ের সময় যেভাবে জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল, বড় ঘূর্ণিঝড় হলে তা যে আরও ভয়াবহ হবে সেটাই সবার ধারণা। ফলে শুক্রবার (১২ মে) জুমার নামাজের পর ইমাম সাহেব যখন মোনাজাত ধরলেন, সবাই হাউমাউ করে কান্না শুরু করেছে। চোখের পানি ধরে রাখা কঠিন ছিল। মৃতের বাড়ির মতো সবার কান্না যেন মনের ভেতর থেকে মোচড় দিয়ে ওঠে। এত আতঙ্কে দ্বীপবাসীকে কখনো দেখিনি।’

‘গত তিনদিন ধরে ট্রলার, স্পিডবোট করে হাজারের ওপর মানুষ জন্মভূমি সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ চলে গেছে। যারা যেতে পারেনি বা যায়নি তারা যথেষ্ট আতঙ্কে আছে সেটা বুঝলাম জুমার পর মোনাজাতে,’ লিখেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী।

 

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: