odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Friday, 7th November 2025, ৭th November ২০২৫

শহিদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যুবার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধু পরিষদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন

আহসানুল ইসলাম আমিন | প্রকাশিত: ২৭ June ২০২৩ ০৬:১১

আহসানুল ইসলাম আমিন
প্রকাশিত: ২৭ June ২০২৩ ০৬:১১

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বঙ্গবন্ধু পরিষদের পক্ষ থেকে আজ এক যুক্ত-বিবৃতিতে শহিদ জননী জাহানারা ইমামের ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। 

এই যুক্ত-বিবৃতিতে তাঁরা বলেন,“১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী পাকিস্তানি নাগরিক গোলাম আযমকে পাকিস্তান থেকে ফিরিয়ে আনে ও নাগরিকত্ব দেয়। সারা দেশে যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে তুমুল আন্দোলন চলছিল, সেই সময় ১৯৯১ সালে সেই যুদ্ধাপরাধী সাম্প্রদায়িক দল জামায়াতে ইসলামী যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমকে তাদের দলের আমীর নিযুক্ত করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও  মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষে এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও সকল যুদ্ধাপরাধীর বিচার দাবিতে দেশের প্রধান রাজনৈতিক জোট ১৫ দল ও ৫ দল, ১৪টি ছাত্র সংগঠন ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ ৭০টি ছোট-বড় সংগঠনের সমন্বয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি’ গঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বামী-পুত্র হারানো ও ‘একাত্তরের দিনগুলি’ নামের সাড়া জাগানো বইয়ের লেখক, বিশিষ্ট অধ্যাপক জাহানারা ইমামকে সর্বসম্মতিক্রমে এই সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচন করা হয়।

এই সমন্বয় কমিটি তার লাগাতার আন্দোলনের মাধ্যমে সব শ্রেণি-পেশা ও সাধারণ জনগণের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। সেই সময় ১৯৯২ সালে এই কমিটি কর্তৃক মনোনীত একটি গণ-আদালত চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের একাত্তর সালে কৃত মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধের বিষয়গুলো উত্থাপন ও বিচার-বিশ্লেষণ করে তাকে তার কৃত মোট ১০টি বিভিন্ন অপরাধকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করার মতো অপরাধ বলে মতামত ব্যক্ত করে। এরপর থেকে বিএনপি সরকারের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও সারা দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি আরো জোরদার হয়। তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত এই শান্তিপূর্ণ ও নীতিগত আন্দোলন সমগ্র তরুণ সমাজ তথা জনগণকে প্রচন্ডভাবে উদ্দীপ্ত করে। বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠন করার পর একাত্তরের মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ ও বিচারের দন্ড কার্যকর করা শুরু হয়। কিন্তু ‘শহিদ জননী’ উপাধিপ্রাপ্ত অধ্যাপক জাহানারা ইমাম এই সাফল্যকে দেখে যেতে পারেননি। তার আগেই তিনি পুরনো ক্যান্সার বেড়ে যাওয়াতে ইন্তেকাল করেন।

প্রায় তিন দশক আগে তিনি চলে গেছেন। কিন্তু একাত্তর সালে যারা হত্যা-ধর্ষণ-লুট-নির্যাতন-অগ্নি সংযোগ করেছিল এবং যারা সাম্প্রদায়িক শক্তি, দেশের স্বাধীনতা ও বাহাত্তরের সংবিধান মানে না, যারা দেশটাকে একটা চরম মৌলবাদী জঙ্গীরাষ্ট্র বানাতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে যে জনমত সৃষ্টি ও সংগঠিত করে গেছেন, তা বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের মনে চির জাগরুক থাকবে। আজ তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে এই শহিদ জননীকে বঙ্গবন্ধু পরিষদের পক্ষ থেকে আমরা অন্তর নিংড়ানো শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: